হিরনের মৃত্যুতে আমি শোকাচ্ছন্ন

কৌশিক আহমেদ
Published : 10 April 2014, 02:31 PM
Updated : 10 April 2014, 02:31 PM

শওকত হোসেন হিরন সম্বন্ধে আমার খুব বেশী ভালো ধারণা ছিলো না। দুই/তিন বছর বা চার বছর আগে একদিন সকালে বরিশালে গিয়ে আবিস্কার করলাম বরিশাল অচেনা হয়ে গেছে। বিশ্বাস হচ্ছিলো না ঝকঝকে তকতকে শহরটির নাম বরিশালই! এমনিতেই বরিশালের বাতাসের মধ্যে একটা ফ্রেসনেস আছে – মনে হয় একটু বেশীই পিউর – তার উপরে শহরের নান্দনিক বৈভবের মধ্যে যেনো খেই হারিয়ে ফেলছিলাম। যা হয় প্রতিবারের মত, এক চক্কর ঘুরে তারপরে আত্মীয়স্বজনের বাসায় ঢুকি। সেই নাজিরপুল হয়ে হাসপাতাল রোড – নথুল্লাবাদ – সিএন্ডবি রোড – বটতলা – বাংলাবাজার – আমতলা – মেডিকেল – লঞ্চঘাট হয়ে বিবির পুকুর। আগে প্রচুর ছবি তুলতাম, বরিশালের রাস্তাঘাটের ভালো কোনো ছবি আমার কালেকশনে ছিলো না – কিন্তু সেবার দু:খ ঘুচলো।

জানলাম এই পরিবর্তন ঘটেছে হিরনের হাত ধরে। ধারণা পাল্টাতে শুরু করলো। ছোটবেলা হিরণের পোস্টার দেখতাম, উপজেলা চেয়ারম্যানের। জাতিয় পার্টির। তারপরে কবে এবং কিভাবে সে আওয়ামী লীগার হলো, বড় বড় নেতার শহরে হিরনও কবে বড় নেতা হয়ে গেলো সেসব আমার অজানা। কিন্তু সে যে সবার থেকে ভিন্ন হলো – বরিশালকে পাল্টে দিলো – এসব চোখে দেখে একধরণের গর্ব হলো।

হিরন মারা গেছেন। বরিশাল ক্লাব থেকে নামার সময় নীচতলার বারান্দা-সিঁড়ির একটা স্টেপ পিছলে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলো। তারপরে হার্ট-এটাক, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ। মৃত্যু বড় তাড়াতাড়ি চলে এলো – নিছক একটা দূর্ঘটনায়। আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। যেমন হয় নি মেয়র ইলেকশনে তার পরাজয়ের কথা শুনে। বরিশালকে আমূল পাল্টে দেবার পরেও নির্বাচিত না হওয়ার কোনো লজিকাল কারণ থাকতে পারে না। ঐ নির্বাচনের ছ'মাস পরেও বরিশাল গিয়েছিলাম – মাত্র ক'দিনে শহরটা যে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিলো বোঝা যাচ্ছিলো। সৌন্দর্য প্রতিনিয়ত পরিচর্যার বিষয় – কিন্তু সেটা হচ্ছিলো না।

হিরনের মৃত্যুতে আমি শোকাচ্ছন্ন।