বিকাশ বা মোবাইল মানি ট্রান্সফারিং পদ্ধতি অর্থনীতির চাকাকে ধেই ধেই করে এগিয়ে নিলেও কিডন্যাপিং, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অর্থ-লেনদেনকে হাজার-গুন বৃদ্ধি করেছে। পদ্ধতিটা এতই সহজ যে প্রতিটা রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজার হাজার বিকাশ এবং এমন সার্ভিসের এজেন্টদের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে কাউকে ঐ নম্বরে টাকা পাঠানোর জন্য বলা যায়, টাকা পাঠাতে হুমকি দেয়া যায়, চাঁদাবাজি করা যায়। এসব এজেন্ট শুধু জানতে চাইবে কত টাকা পাঠাবে অপর-প্রান্ত থেকে এবং তারপরে সে চেক করে দেখবে গ্রাহককে দেবার মত সে পরিমাণ ক্যাশ তার কাছে আছে কিনা। এছাড়া তার আর কোনো দায়িত্ব বা চিন্তা নাই।
অপর-প্রান্ত থেকে টাকা পাঠানো হলে এজেন্টকে বলতে হবে টাকা প্রেরণকারী বিকাশ একাউন্টের একটা কোড – যেটা এ প্রান্তের এজেন্ট প্রাপ্ত টাকার কোডের সাথে মিলিয়ে দেখবে। মিলে গেলে গ্রাহককে টাকা পরিশোধ করে দিবেন। এতে এজেন্টের জানতে হয় না যাকে টাকা দেয়া হচ্ছে তার কোনো তথ্য – এমনকি চেহারাও দেখার দরকার নাই। এতই সহজ যা দ্রুতগতিতে জনপ্রিয় করে ফেলেছে পদ্ধতিটাকে। কিন্তু এর ফলে এখন দেশের সকল চাঁদাবাজি, ঘুস এবং অবৈধ লেনদেন এই 'বিকাশ'/মোবাইল মানি ট্রান্সফারিং সিস্টেম ব্যবহার করেই করা হচ্ছে। অনেক নিরাপদ হওয়ায় চাঁদাবাজির পরিমাণকেও বাড়িয়েছে কয়েক শত গুন। আগে যে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি করাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করতো এখন সে এটাকে অধিকতর সহজ এবং প্রফিটেবল মনে করেছে।
এখন বেশীরভাগ টাকাই যেহেতু এজেন্টের মাধ্যমে পাঠানো হয় সুতরাং এজেন্টের নম্বর ট্রেস করে আসলে টাকা কাকে দেয়া হচ্ছে সেটা বের করা একদমই অসম্ভব।
মোবাইল মানি ট্রান্সফারিং সিস্টেম অবশ্যই থাকতে হবে দেশে কিন্তু একই সাথে চিন্তা করা উচিত এমন একটা সিস্টেম ডেভলপ করা যা এজেন্টের নিকট থেকে টাকা গ্রহণকারী ব্যক্তিকে সনাক্ত করতে সাহায্য করে। যে টাকা গ্রহণ করেছে তার কোনো তথ্য এজেন্টের কাছে সংরক্ষিত থাকার ব্যবস্থা থাকলে এমন চাঁদাবাজিকে হয়তো অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।