প্রতিবাদের সময়ও কেউ খুন হতে পারে, পাশের জন হয়তো তখন প্রতিবাদ করবে

কৌশিক আহমেদ
Published : 27 Feb 2015, 01:59 PM
Updated : 27 Feb 2015, 01:59 PM

টিএসএসসির রাজু ভাস্কর্যের ঠিক একশ গজ দূরে, সরোয়ার্দীর গেট থেকে দু-পা শাহবাগের দিকে হাঁটলেই অভিজিৎ রায়ের খুনের জায়গাটি। দুশ মাইল দূরে কোনো ব্লগার লেখক খুন হলেও রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদী সভা হয়, আর ঠিক রাজু ভাস্কর্যের নাকের ডগায় খুন হলেও রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ সভা হয়। আশা করা যায় সামনে রাজু ভাস্কর্যের বেদীতে কেউ খুন হলেও রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ হতে পারবে।

প্রতিবাদী সমাবেশের জায়গাটা থেকে অভিজিৎ রায়ের খুনের জায়গাটি খুবই কাছে। হুমায়ুন আজাদকে ছুরিকাঘাত করার জায়গাটিও কাছেই। রাজু ভাস্কর্য থেকে অভিজিৎ রায়ের খুনের স্থান আর হুমায়ুন আজাদের ছুরিকাঘাতের স্থানটি একবার ডানদিকে মাথা ঘুরিয়ে আরেকবার বাম দিকে মাথা ঘুরিয়ে দেখা যায়। অলমোস্ট একই দূরত্ব মনে হবে।

রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদের মাটিতে বসে থাকলাম আমরা আজ। সকাল ১১ টায়। আমার কেবল মনে হচ্ছিলো ঐ সমাবেশ চলাকালিন সময়ে খালি পরে থাকা ত্রিভুজের আরেকটি কোনে যদি কাউকে খুন করা হয় – তাহলেও আমরা খুন বন্ধ করতে পারতাম না। ঠিক খুনের পরেই তৎক্ষণাৎ আমরা বড়জোর সমাবেশে তার নামটা যুক্ত করে দিতাম। ব্যানারে কেউ রঙ-তুলি দিয়ে সাথে সাথে সুন্দর করে নামটা লিখে দিতো। আমরা সদ্য খুন হওয়া ব্যক্তিটির নাম উচ্চারণ করে প্রতিবাদে সোচ্চার হতাম।

আসলে আমাদের এর চেয়ে আর কিছুই করার নেই। প্রতিবাদ করার সময়ও যে কেউ খুন হয়ে যেতে পারে, পাশের জন হয়তো তখন প্রতিবাদ করবেন। পাশ থেকে একজনকে কুপিয়ে হত্যার পরে আমি প্রতিবাদ করবো। আমাকে খুন করার পরে আমার পাশের জন্য প্রতিবাদ করবে। এভাবে প্রতিবাদ আমাদের সবাইকেই করতে বাধ্য হতে হবে একদিন।