শহীদ মিনারে ঈদ-স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই

কৌশিক আহমেদ
Published : 31 August 2011, 07:35 AM
Updated : 31 August 2011, 07:35 AM

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চায় মানুষ। সড়ক দূর্ঘটনায় নয়। ইদানিং যে ব্যাপকতায় সড়ক দূর্ঘটনা আবির্ভূত হয়েছে তার থেকে উত্তরণের জন্য একজন প্রমিথিউসের প্রয়োজন। সড়ক যেনো এক ভয়ংকর ফাঁদ পেতে বসে থাকে, সাক্ষাৎ মৃত্যুকূপ। সড়ক ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ প্রশাসনের পদত্যাগ দাবী করে নাগরিক সমাজ ‌এবারের ঈদ পালন করছে শহীদ মিনারে। এই পোস্ট যখন লিখছি, ৩১ তারিখ ঈদের দিন ১টা ২১ মিনিটে, শহীদ মিনার লোকে লোকারণ্য।

ঈদের আনন্দ ম্রিয়মান হয়ে গেছে। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য যখন আমি পথে তখন চোখের সামনেও সড়ক দূর্ঘটনা দেখতে হলো। ১২ টা ৪০ মিনিটে অল্প বয়সী দুই ছাত্র গাড়ি উঠিয়ে দিলো রোড ডিভাইডারে।

ডিভাইডারে আঘাত করার আগে কিশোর ড্রাইভার চালিত গাড়িটি এক রিকশাকে আঘাত করে। রিকশারোহী দুজন কোনোভাবে বেঁচে গেছে। আগারগাঁওয়ের এই দূর্ঘটনা দেখে বিজয় স্বরনী এসে আবারো দেখতে হলো আরো একটা দূর্ঘটনা। সময় তখন ১২ টা ৫০ মি। ট্রাক ড্রাইভার পিশে গেছে একটা রিকশাকে। রিকশা ড্রাইভারের পা ভেঙে গেছে। ঐ রাস্তায় রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হলেও ট্রাফিকের চোখের সামনে রিকশা চলতে দেখলাম অবাধে।

অনুষ্ঠান স্থলে ১টা ৩০ মিনিটে পৌঁছে দেখলাম শহীদ মিনারে শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু সংগীত পরিবেশন করছেন।

১টা ৪০ মি: অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন। একজন শিক্ষক জানালেন, এই যোগাযোগমন্ত্রী খুব অল্পতেই সাধুবাদ পেতে চান। তিনি জানতে চান, সড়ক মেরামতের দায়িত্ব কার? এতদিন এই সড়ক ওনার চোখে কেনো পড়েনি!

বিভিন্ন স্তরের শিল্পী ও সাধারণ মানুষ শহীদ মিনারে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। গতকাল রাতেও এক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন চারজন মানুষ। ঈদের আনন্দঘন মুহূর্তেও একের পরে এক হত্যাযজ্ঞ চলছেই।

প্রতিবাদী সমাবেশ চলবে চারটা পর্যন্ত। এখনও মানুষ আসছে, শেয়ার করছে তাদের হতাশা আর সরকারের জনবিচ্ছিন্ন আচরণের।

ফেসবুকে আহুত এই প্রতিবাদী সমাবেশে এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেবার সংকল্প প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই সম্ভবত ফেসবুকে সংগঠিত সবচেয়ে বড় প্রতিবাদী সমাবেশ। প্রচুর সংখ্যক ব্লগার অংশ নিয়েছেন। কবি-সাহিত্যিকদের পদভারে অনুষ্ঠানস্থল মুখরিত। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টা তারা পরিবারকে না দিয়ে এই প্রতিবাদে সমাবেশে হাজির হয়েছেন। সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে এই জনমানসের ভাষা অনুধাবনে সরকার যদি ব্যর্থ হয় তার চেয়ে হতভাগ্যের আর কিছুই হতে পারে না।