বাংলাদেশে গবেষণাধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই বললেই চলে। এদেশের প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীই পড়াশুনা শেষ করার পর একটা চাকরি করে। এদেশ থেকে যদি এপিজে আব্দুল কালামের মত কাউকে হতে হয়, তাকে বিদেশের কোনো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা ছাড়া গতি নেই।
এসএসসি পাশের পর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই সঠিক বিভাগ নির্ধারণ করতে পারেনা। যেমন অনেকে ভবিষ্যতে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার, অ্যাডমিন ক্যাডার ইত্যাদি হতে চায়। আর যারা বিসিএস ক্যাডার হতে চায়, তাদের কোচিং আর প্রাইভেটে টাকা খরচ করে সায়েন্সের সাবজেক্টে পড়ার কারণ খুঁজে পাই না। যারা অতি মেধাবী শুধুমাত্র তাদেরই ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন দেখা উচিৎ।
এসএসসি তে গোল্ডেন এ+ পেলেই যে সে অত্যধিক মেধাবী এ ধারনা করা ভুল। কারন এসএসসির সিলেবাস অনেক সংক্ষিপ্ত থাকে। আর ঐ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস গলাধ:করণ করতে বিত্তবান অভিভাবকেরা তাদের সন্তানের পেছনে একগাদা প্রাইভেট টিউটর ও কোচিং ঠিক করে দেয়।
তবে যারা প্রত্যেকটা বিষয়েই ৯০ শতাংশের অধিক নম্বর পায় তারা অবশ্যই মেধাবী। তারা আসলেই বুয়েট অথবা মেডিকেলে চান্স পাওয়ার যোগ্য। আর যারা প্রাইভেট টিউটর কোচিং থাকা সত্ত্বেও উচ্চতর গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ইত্যাদিতে ৯০ এর বেশি নম্বর পায় না তাদের এইচএসসিতে গিয়ে বিজ্ঞান না নেওয়াটাই শ্রেয়। কারণ ইন্টারমিডিয়েটে সায়েন্স নিয়ে পড়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই বুয়েট, মেডিকেল এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পায় না। একজন সায়েন্সের ছাত্র যদি 'ঘ' ইউনিটে সোশ্যাল সায়েন্স বা ইতিহাসে চান্স পায়, তাহলে কি তার সাথে সেটা সামঞ্জস্য হল?
অনেক শিক্ষার্থীই আছে যারা, পড়াশুনা করেছে সারাজীবন বিজ্ঞান বিভাগে, কর্মজীবনে এসে হয়েছে ব্যাংকার, পুলিশ ইত্যাদি। তাই যাদের কর্মজীবনে মেজিস্ট্রেট, এএসপি, ব্যাংক কর্মকর্তা,পরিদর্শক, পুলিশ, বিসিএস ক্যাডার ইত্যাদি হওয়ার স্বপ্ন থাকে তাদের বিজ্ঞান বিভাগে না পড়ে মানবিক ও বানিজ্য বিভাগের সাবজেক্টে পড়াই অধিকতর উত্তম।
কারণ বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় বেশি নাম্বার চায়। তাই একজন শিক্ষার্থী যদি ভবিষ্যতে সরকারি কর্মকর্তা, বিসিএস ক্যাডার, ইত্যাদি হতে চায়, তবে তাকে মানবিক বিভাগে পড়াই উত্তম।
তাই সঠিক লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য সঠিক বিষয়ে ও সঠিক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করা আবশ্যক।