আমাদের পাঠশালায়, পাঠ শেষে হৈ চৈ গলায় গলায়

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 4 August 2012, 11:40 AM
Updated : 4 August 2012, 11:40 AM

ব্লগারদের কাছ থেকেই স্কুলটার কথা জেনেছিলাম বছর কয়েক আগে। তারপর একদল ব্লগাররা (সে সময় মূলত সামহোয়্যার ইন ব্লগের ব্লগাররাই) মিলে ঘুরে এসেছিলাম একটা মুড়ি-তরমুজ আড্ডার উছিলায়। চিৎকার কাকে বলে জেনেছিলাম আমরা ব্লগাররা সেদিন! শৈশবের প্রাণ প্রাণপ্রাচুর্য কী তা আমরা পুনরায় অনুভব করেছিলাম সেদিন! হেঁড়ে গলায় গানও জুড়েছিল ব্লগাররা। পাশাপাশি আলোচনাও চলেছিল আমাদের – আমাদের কোন করণীয় আছে কিনা এই স্কুলের বাচ্চাদের জন্য- থাকলে সেটা কী কী ভাবে হতে পারে… তড়িৎ কিছু সহযোগিতা ছিল ব্লগারদের পক্ষ থেকে। ছিল কিছু প্রতিশ্রুতি আগামির জন্য। অনেকেই সেটা রেখেছিলাম হয়ত, অনেকেই নিজস্ব ব্যস্ততায় ভুলে ছিলাম। তবে হুটহাট করে এই কয় বছরে রুবেলের সাথে দেখা হয়েছিল অনেকের। অথবা ব্যক্তিগত যোগাযোগও ছিল, আছে। রুবেল হল সেই ব্যক্তি যিনি সাগ্রহে স্কুলটিকে আগলে রেখেছেন। বাচ্চাদের মাঝে অভিভাবকের মত দাঁড়িয়ে আছেন এখনও অনেক বিপত্তি সত্বেও। তিনি চেষ্টা করছেন, যতটা সম্ভব স্কুলটির প্রচারণা করার। যেন আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। তাতে করে বাচ্চাদের জন্য একটু সুযোগসুবিধা বাড়ানো যাবে। ওদের আঁকাঝোঁকাটা থামবে না। ওদের সুরের তালে, নাচের ছন্দে বাধা পড়বে না। ওদের পড়াতে-লেখাতে আসবে না কোন প্রতিবন্ধকতা।

প্রথমবারের পর আরো একবার আমাদের পাঠশালায় যাওয়ার সুযোগ ঘটেছিল। ২০১০ সালে। ডিসেম্বর মাসে। স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আরো এক ঝাঁক ব্লগাররা ছিল। ওইদিন দুষ্টুমিষ্টি ছেলেরা-মেয়েরা অনেক সেজেছিল। মঞ্চে উঠে গেয়েছিল। গানে ভুল করেছিল। নেচেছিল। তাল হারিয়েছিল। ওরা আমাদের কাউকে কাউকে ছবি আঁকা শিখিয়েছিল। স্কুলের ভেতরের দেয়াল তো রঙে, আঁকিবুঁকিতে ভরেছেই, সামনের গলির দেয়ালেও ঝুলানো ছিল অদ্ভুত সব চিত্রাংকন। এতো সীমাবদ্ধতার মাঝে ওদের এত কল্পনাশক্তি কী করে জন্মে, এ আমাদের পরিপাটি চিন্তায় কুলাচিছল না!

আগামিকাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগের ব্লগাররা আমাদের পাঠশালায় যাচ্ছে। ব্লগার কৌশিক আহমেদের পোস্টে বিষদ রয়েছে। আমাদের পাঠশালায় যাওয়া হবে এটা ভাবতেই, বাচ্চাদের সাথেকার আড্ডাবাজির কথা মনে হল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কিছু ছবি তুলেছিলাম। ল্যাপটপ ঘেঁটে পুরনো ছবিগুলো বার করলাম। এই ব্লগের অনেকেই স্কুলটা সম্পর্কে জানেন না। যারা ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় আমাদের পাঠশালায় যাবেন, তারা আলাপে, গল্পে, নিজ চোখে দেখে স্কুলটার অতীত-বর্তমান অনেকটা জানবেন, বুঝবেন। যারা প্রবাসে আছেন, তারা অপেক্ষায় থাকবেন নিশ্চিত এই ব্লগারদের চোখে আমাদের পাঠশালা দেখে নেয়ার। মনে হল, এই ছবিগুলো হয়ত ব্লগার বন্ধুদের মনে ভাল লাগার জন্ম দেবে। হয়ত কিছু প্রতিশ্রুতি রচিত হবে এই মুখগুলো দেখে।