জামাত-ই-ইসলামির ওয়েব সাইটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গৃহিত হোক

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 28 Dec 2012, 05:44 PM
Updated : 28 Dec 2012, 05:44 PM

জামাত-শিবির অনেক ডিজিটালাইজড – ডিজিটাল জামাতি কার্যকলাপের অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যাবে ইন্টারনেট দুনিয়ার। বাংলা ব্লগের শুরু থেকেই ব্লগে ব্লগে জামাত-শিবির সমর্থকদের পদচারণা দেখা গেয়েছিল। মিথ্যাচার, অপপ্রচার,ইতিহাস বিকৃতির এজেন্ডা বাস্তবায়নে জামাতপন্থীদের সক্রিয় হতে দেরি হয়নি। তবে এতে একভাবে হিত সাধিত হয়েছিল। এ না হলে ব্লগে আরো দীর্ঘ সময় খোশগল্পের কেন্দ্রস্থল হয়ে থাকত। চেতনা, ইতিহাস বিস্তৃতির উপলব্ধি জাগতে সময় বয়ে যেত। 'পেইড ব্লগার' আখ্যান শুরু হয়েছিল জামাত-শিবিরমনা ব্লগারদের কারণেই। এ কথা সকলেই বলেন, জামাত-শিবিরের কর্মীদের আসলেই অর্থায়ন করা হত ব্লগে দলীয় প্রচারণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অপপ্রচার চালনার জন্য। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বরাবরই কিছু অন্তসারশূন্য, হিপনোটাইজড কর্মীদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং এখনো হয়, যারা খুব বেশি দূর কখনই এগুতে পারেনি সচেতন ব্লগারদের আবেগ আর যুক্তির মিশেলে গড়ে ওঠা তীব্র প্রতিবাদের মুখে। ফেসবুকের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকলে, সেখানেও জামাত-শিবির কর্মীদের ছোঁক ছোঁক করতে দেরি ঘটেনি। হোক না সেটা কোন ইসলামিক বাণী প্রচারণামূলক গ্রুপ, হোক না সেটা কোন চুটকি শেয়ার করার ফেসবুক ফ্যান পেইজ, কৌশলে কৌশলে জামাতিরা ছেয়ে যাচ্ছিল অনলাইনে।

ব্লগ, ফেসবুকে জামাতিদের উদ্দেশ্য কী? সহজ বিষয়, জনগণকে বিভ্রান্ত করা। জনমতের অপব্যবহার করা। তথ্যসূত্রহীন এবং বিস্তারিত বক্তব্যহীন ছবি ব্লগে, ফেসবুকে প্রচার করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রচেষ্টা বহুবার চলেছে। ৩০ লাখ শহীদের পরিসংখ্যানকে ভ্রান্তি বলে প্রচার করার মত ধৃষ্টতাও দেখানো হয়েছে বহুবার। জাতীয়পর্যায়ের ইস্যুগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে নগ্নভাবে।উদ্দেশ্য সরকারকে বিব্রত করা। ফেলানি ইস্যুতে সচেতন নাগরিকরা সচেতনভাবেই সরকারের সমালোচনা করেছিল। জনগনের এই অবস্থানকে কৌশলে ব্যবহার করেছিল জামাতপন্থীরা অনলাইনে। জামাতি সমাবেশের একটি অন্যতম সংস্করণ ছিল একটি বাংলা ব্লগ – সোনার বাংলাদেশ ব্লগ। অবশ্য একে আজ জামাতমনাদের ব্যর্থ প্রজেক্ট বলা যেতে পারে।

এ সরকারের মূল ব্রত ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিন্তু সকলেই সরকারের ডিজিটাল অদূরদর্শিতার কথা বলেন। সরকারি ওয়েব সাইটগুলোর চেহারা আকর্ষণীয় নয়। তথ্য অনিয়মিত আপডেট হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যহীন – এ রকম অভিযোগও আছে। সরকার ব্লগ, কিংবা ফেসবুকের পজিটিভ দিকগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় এখনও বিশেষ কোন ভূমিকা রাখেনি। তরুণদের রাজনীতিতে ইতিবাচক অর্থে আকৃষ্ট করতে, রাজনৈতিক প্রচারণায় সোশ্যাল মিডিয়াকে সুস্থভাবে ব্যবহার করতে সরকার ‍উদাসীন।

আওয়ামী লীগের দলীয় ওয়েব সাইটটি (লিংক) যদি দেখা যায় তো একে অনেক 'এ্যাকটিভ' সাইট বলা যাবে না। যদিও প্রতিদিনের কোন না কোন প্রধান আপডেট প্রতিবেদন দেখা যায় সাইটটিতে। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটি ঘুরে আসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কিন্তু এটা হতাশাজনক যে, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সাইটটিকে প্রথম দর্শনেই আদ্যোপান্ত নির্জীব মনে হয়। সাইটের অন্যান্য পাতাগুলো হয় লিংক বিহীন অথবা অসম্পূর্ণ। ফটোগ্যালারি হিসেবে ফ্লিকারের লিংক পাওয়া গেল – molwa.gov.bd's photostream । ফ্লিকারের ছবি আপলোড এক্টিভিটি কেবলমাত্র সেপ্টেম্বরের। এবং ফটো ভিউ এর পরিসংখ্যান খুবই কম। অর্থ্যাৎ এই লিংকের প্রচার-প্রচারণা নেই বললেই হয়। এমনকি যে আয়োজনের ছবি ফ্লিকারের সংযোজিত হয়েছে, সে আয়োজনের উপস্থিত ব্যক্তিবর্গরা ও খোদ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়েরর প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রত্যেকে যদি একবার করে উক্ত ফ্লিকার লিংকের এ্যালবামের প্রত্যেক ছবিতে একবার করে চোখ বুলান তো ফটো ভিউ সংখ্যার আরো অ-নে-ক বেশি হওয়ার কথা ছিল!

তবুও ফ্লিকারে ছবি সংরক্ষণকে সাধুবাদ জানাই এবং মূল ওয়েবসাইটেও যে এই ছবি আপডেট থাকা উচিৎ ছিল সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। অবশ্য মূল আগ্রহের জায়গাতে হতাশ হতে হবে একেবারে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া এবং এ সম্পর্কিত আলোচিত ঘটনা-সংবাদ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সাইটে অনুপস্থিত! এই সাইট দেখে বোঝার উপায় নেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকে, অপপ্রচারকে তুলে ধরতে আদৌ কোনরকম ভূমিকা রাখে কিনা!

www.sectorcommandersforum.org , ওয়েবসাইটটিকে ইনএ্যাকটিভ পাওয়া ছিল দু:খজনক। তবে সেক্টরকমান্ডারস ফোরামের একটি ফেসবুক পাতা খুঁজে পাওয়া গেল। অবশ্য এখানেও আশ্চর্যজনকভাবে প্রচারণার অভাব দেখা যায়। ফেসবুকে কারণে-অকারণে সময় কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে আজকের প্রজন্ম। স্ট্যাটাস/ছবি আপডেট-শেয়ার এখন এক ক্লিকের কাজ। বুঝে হোক না বুঝে হোক কোন কোন ফেসবুক ফ্যান পেইজে-পোস্টে-ছবিতে লাইক দেয়া এখন হুজুগ। তরুণ প্রজন্মের এই ‍হুজুগে মনোভাবকেও সঠিকভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু এই ফেসবুক পাতায় মাত্র ৯৬টা লাইক দেখে হতাশ হতে হয় সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আর ফেসবুক প্রজন্ম, উভয়কে নিয়েই। এই পাতার কিছু নিয়মিতভাবেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংক্রান্ত দেশিয় ও আন্তর্জাতিক কর্মসূচী, সংবাদ ও ছবি আপডেট হচ্ছে। তবে এই পোস্টগুলোতে লাইক-মন্তব্য-শেয়ার সংখ্যা কোনভাবেই উল্লেখযোগ্য নয়!

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র আরেকটি ফেসবুক গ্রুপ দেখা গেছে – Communal atrocities by BNP and Jamat-e Islami (2001-2005) । এর সদস্য সংখ্যা বেশ। আপডেটও করা হয় নিয়মিত। তবে ফেসবুকে এই গ্রুপ নিয়ে আলোচনা তেমন দেখা যায় না।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সাইটটিকেও যথেষ্ট ইন্টারএ্যাকটিভ করে তোলা জরুরী। এর রিসেন্ট নিউজ ও আপকামিং ইভেন্ট অংশটি একদমই হালনাগাদকৃত নয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণে সর্বজন সম্পৃক্ততা এই সাইটে লিবিবদ্ধ করা যেতে পারে ছবি-ভিডিও-অডিও সহযোগে। জাদুঘরের নির্মাণকাজের অগ্রগতির বিভিন্ন খবর যুক্ত হতে পারে এই সাইটি নিয়মিতভাবে। সাম্প্রতিককালে ব্লগাররাও গিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য ব্লগারদের উদ্যোগে সংগৃহিত অনুদান। জনসম্পৃক্ততার, জনমতের সম্পৃক্ততার এইরকম আরো দৃষ্টান্ত সাইটে নিয়মিতভাবে যুক্ত হওয়া জরুরী।

http://www.genocidebangladesh.org/, অনলাইনে খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাগার হিসেবে সমাদৃত হলেও এই সাইটটিকে পুনরায় হালনাগাদ করার প্রকল্প হাতে নেয়া জুরুরী। এর অডিও-ভিডিও বিভাগগুলোতে আরো দুর্লভ প্রামাণ্যচিত্র যুক্ত হতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার, বীরাঙ্গনাদের নিয়ে প্রতিবেদন সংযুক্ত হতে পারে আরো।

বর্তমানে প্রচার-প্রচারণায় সরব রয়েছে http://www.icsforum.org/ সাইটটি। স্বেচ্ছাশ্রমের উপর নির্ভর করে বলে হয়ত, নিয়মিত সাইটের প্রথম পাতায় কোন আপডেট দেখা যায় না, তবে অনলাইনে এর সদস্যদের সরব দেখা যায়।

মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে অনলাইনে সরকারি-বেসরকারি প্রচার-প্রচারণার এই যখন হাল তখন স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধীতাকারীরা কী করছে, তার ধারণা এই লেখার শুরুতেই কিছুটা রয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালে, অর্থ্যাৎ পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে এই অপশক্তি তাদের অপপ্রচারণায় যথেষ্ট কৌশলী এবং আন্তর্জাতিক প্রবণ। জামাত-ই-ইসলামি তাদের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটটিকে ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে নিয়ে অপপ্রচার চালাতে, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভিন্ন ভাবে উপস্থাপিত করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে রীতিমত উঠেপড়ে লেগেছে। জামাত-ই-ইসলামির এই অফিসিয়াল সাইটের লিংক – http://www.jamaat-e-islami.org/

এই সাইটটিকে কেবলমাত্র জামাতের ওয়েব সাইট না বলে, জামাতের অনলাইন পত্রিকা বলা যুক্তিযুদ্ধ। কারণ সাদামাটা ভাবে নিজের নীতিমালা, যোগাযোগ তথ্য দিয়ে একটি সাইট করা জামাতের মুখ্য উদ্দেশ্য নয় এখানে। বরং এই সাইটটি নিজেদের চক্রান্ত চরিতার্থ করার একটি উত্তম স্থান করে তুলছে জামাত। লক্ষ করে দেখুন –

১। জামাতের এই সাইটটি বাংলা-ইংরেজি-আরবি তিনটি ভাষাতেই প্রচার হচ্ছে। অর্থ্যাৎ দেশীয় কর্মীদের কাছে যেমন জামাত এই সাইটটি উপস্থাপন করছে, তেমনি করছে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে, একই সাথে মুসলিমদেশগুলোর কাছেও জামাত নেতাদের পক্ষে সক্রিয়তা গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে এই সাইট। এটা স্পষ্টত যে, নিয়মিতভাবে বাংলা-ইংরেজি-আরবি তিনটি ভাষাতেই প্রতিবেদন আপডেট করার জন্য জামাতের কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। বাংলা-ইংরেজি পোস্ট আমাদের মধ্যকার সাধারণ পাঠকের পক্ষে পড়ে বোঝা সম্ভব। কিন্তু আরবি পাঠ সম্ভব নয়। বাংলা-ইংরেজি প্রতিবেদনগুলো পড়লেই বোধগম্য হয়, জামাতি প্রোপাগান্ডা কাকে বলে। জামাতের মরিয়া হয়ে ওঠা কোন পর্যায়ের হতে পারে। আশংকা হচ্ছে, জামাত বরাবরই ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এই সাইটটির আরবি অংশে যদি বাড়িয়ে-রং চড়িয়ে কোন প্রতিবেদন উপস্থাপিত হয়? যদি ধর্মকে আরো নগ্নভাবে ব্যবহার করা হয়, ট্রাইব্যুনালের উপর বিশ্বের চাপ তৈরীতে?

২। এই সাইটিতে গোলাম আযমের বক্তব্য/ভাষণ প্রচার করা হচ্ছে। গোলাম আযমের অপরাধ নিয়ে সংশয় প্রকাশের সুযোগ নেই। গোলাম আযম সর্বজনস্বীকৃত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী। এ্যই জাতি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে স্বচ্ছভাবে চায়, আগামির ইতিহাসের সঠিক লেখনীর স্বার্থেই। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, জামাতকে ছাড় দেয়া হবে, শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ভাষণ প্রচারণায়। এ ধরণের কার্যকলাপ উস্কানিমূলক হয়ে উঠবে, জামাত তার কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করবে এইসব ভাষণ প্রচার করে।

৩। ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে গড়ে ওঠা জামাতকে মাদ্রাসাগুলোর মোড়ল সাজা থেকে বিরত করতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের এভাবে শিবির ও জামাতের প্রতি আকৃষ্ট করার কৌশল এসব।

৪। এই সাইটের প্রথম পাতাতেই রয়েছে ভিডিও গ্যালারি। এই অংশে দেখা যাবে অপর যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ভাষণ ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে জামাতের প্রচার প্রচারণা।

৫। এই সাইটের প্রথম পাতায় বাংলাদেশের মানচিত্র রয়েছে। তাতে বিভাগীয় মাউস নিয়ে উক্ত বিভাগে জামাতের-শিবিরের কার্যক্রমের খরর পাওয়া যায় এবং জামাতি এই সাইটে এই প্রচারণাই চালানোর চেষ্টা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিপক্ষেই সবার অবস্থান।

৬। সাম্প্রতিককালে বিরোধী দলীয় নেত্রী, যিনি ক্রমাগত জামাতের আমীর হয়ে উঠছেন, এক সমাবেশে সচিত্র বর্ণনা করেন, আওয়ামী লীগ আর জামাতের পূর্বেকার কোন যোগাযোগের কথা। জামাতও লুফে নিচ্ছে সেসব, তুলে দিচ্ছে তাদের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে – লিংক

৭। এই সাইটের গ্যালারিতে আজকাল প্রকাশিত হচ্ছে মহাফেজখানা থেকে খুঁজে আনা ছবি। কে কখন জামাতে আমীরের সাথে হাত-পা-গলা মিলিয়েছিলেন, তার ছবি উপস্থাপন করে জামাতে নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তুলে চাইছে আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে।

৮। তুরস্ক সরকার গোলাম আযমকে শীর্ষ ইসলামিক নেতা মান্য করে, এবং তার মৃত্যুদণ্ড হলে সামাজিক জীবনে ইসলামিক চর্চায় ভারসাম্যহীনতা আসবে এমনটাও মনে করে। সে কারণে গোলাম আযমের মত যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড না দেয়ার আবদার সাম্প্রতিক কালের আলোচিত সংবাদ-লিংক। গৌরবের কথা, বাংলাদেশ সরকার এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদ এসেছে নির্মূল কমিটি থেকেও- লিংক। তুরস্কের এই আহবান জামাতের জন্য পোয়াবারো খবর, তাই জামাতি অফিসিয়াল সাইটে তড়িৎ জায়গা করে নিয়েছে এই সংবাদটি – dVQj লিংক

৯। ইনু-নিজামীর করমর্দনের ছবি প্রকাশ করেও নতুন বিতর্কের সূচনা করে দিচ্ছে এই ওয়েব সাইট।

জামাত-ই-ইসলামির একটি ফেসবুক পাতা রয়েছে – লিংক, এখানে দেখা যাবে ইসলামের নাম সামনে রেখে জামাত তাদের প্রোপাগান্ডা আর এজেন্ডা বাস্তাবায়নের চেষ্টা অনলাইনে কিভাবে অব্যাহত রেখেছে। শিবির জামাত ইসলামি নামে এদের অপর আরেকটি ফেসবুক পাতা দেখুন – লিংক

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বাধাপ্রাপ্ত করা, চিহ্নিত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের বক্তব্য/ভাষণ প্রচার করে দলীয় কর্মীদের উদ্বুদ্ধকরণ তথা বিশংখলা সুষ্টিতে ইন্ধন দেয়ায় জামাত-ইসলামি অনলাইনে তাদের ওয়েব সাইট ও ব্লগ-ফেসবুক ব্যবহার করছে। বিচার প্রক্রিয়াকে এভাবে চক্রান্ত করে বাঁধাগ্রস্ত করা গ্রহণযোগ্য নয়। নৈতিকতা, গণতন্ত্রের যে ছাড় জামাত জাতি থেকে প্রাপ্ত হচ্ছে, তার সম্পূর্ণই অপব্যবহার করছে এই যুদ্ধাপরাধী দলটি। এদের ইনভেস্টমেন্ট শক্তিশালী। তাই অনলাইনে এদের কার্যক্রম সচল ও অভিনব। সাম্প্রতিককালে বিচারপতির স্কাইপি কথোপকথন জামাতের পেতে রাখা জাল সম্পর্কেই জানান দেয়।

স্কাইপি হ্যাকিং -কে রাষ্ট্রদ্রোহীতার পর্যায়ে গণ্য করা হচ্ছে । অনুমতিবিহীনভাবে পত্রিকায় সংলাপ প্রকাশের প্রেক্ষিতে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও প্রকাশক হাসমত আলীর বিরুদ্ধে যেমন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয়েছে। এই পোস্টে জামাত-ই-ইসলামির বর্তমান প্রোপাগান্ডার যে তথ্যপ্রমাণ সংযুক্ত হয়েছে, সেখানেও জামাত-ই-ইসলামির এই উদ্দেশ্যমূলক কার্যকলাপকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাতারে ফেলা উচিৎ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের জনতার দাবি। বর্তমান সরকারের দায়িত্ব এই বিচারকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং অচিরেই চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের আপনি প্রক্রিয়ায় উপযুক্ত, কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা। এই বিচার ব্যবস্থাকে ঘিরে জামাতের সকল অনলাইন কার্যকলাপকে তাই নজরে আনতে হবে। এই অপপ্রচারগুলোকে রুখতে হবে। রাষ্ট্রদ্রোহিতার এই ধৃষ্টতার জন্য এসব ওয়েব সাইট ও ফেসবুক পাতাগুলোকে চিহ্নিত করে অচিরেই আইনি ব্যবস্থা গৃহিত হোক, এটা এখন সময়ের দাবি।