শিক্ষা এবং ভ্যাট

লিনা জাম্বিল
Published : 23 Sept 2015, 06:15 PM
Updated : 23 Sept 2015, 06:15 PM

কিছুদিন ধরে শিক্ষার ভ্যাট ট্যাক্স নিয়ে কত আলোচিত আলোড়িত মুখরিত হয়ে গেল। মিডিয়া নিউজ, ব্লগ নিউজ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চায়ের টেবিল কত কোথাও বাদ নেই। এর আগে শিক্ষার ভ্যাট নিয়ে কখনো আলোচিত বা আলোড়িত হয়েছে বলে আমার মনে পড়েনা। এবার ৭% প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে যুক্ত হওয়াতে যেন সবার চোখ খুলে গেলো। আমরা যারা সাধারন নাগরিক আমরা আমাদের অধিকারগুলো বা রাষ্ট্র আমাদের কি সুযোগ সুবিধা দিতে পারে দিতে বাধ্য সেগুলো আমরা জানিনা এবং খোঁজ খবরও নেয়ার প্রয়োজন মনে করিনা। তবে মাঝে মধ্যে এমন সুযোগ আসে যা জানতে না চাইলেও জেনে যায় সবাই, মিডিয়ার বদৌলতে। এবারে ঠিক তাই হয়েছিল। শিক্ষা তো মানুষের মৌলিক অধিকার। এ খাত থেকে ভ্যাট নেয়াটা সত্যি সত্যি কেমন যেন প্রশ্নবিদ্ধ। তাও আবার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে। যেখানে রেজিষ্ট্রেশন দেয়া ছাড়া সরকারের কোন তদারকি নেই।  যেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সম্পূর্ন খরচ ১০০% ছাত্রদের কাছ থেকে নিয়ে মেটানো হয় সেখানে ছাত্রদের ভ্যাট দিতে হবে না বললেও কতটুকু গ্রহনযোগ্য ছিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে ইংলিশ মিডিয়ামগুলোর এ ভ্যাট দিতেই হচ্ছে। আগে ছিল ৪% এখন থেকে দিতে হবে ৭%। বাংলা মাধ্যম বলেন আর ইংলিশ মাধ্যম বলেন- শিক্ষা তো শিক্ষাই। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো যেখানে আমার আয় থেকে আমি ট্যাক্স দিচ্ছি, মানে আমার মাসিক বেতন থেকে, আমার সন্তানদের শিক্ষার জন্য সেখান থেকেও সরকারকে ভ্যাট দিতে কেমন যেন খটকা লাগে। তার মানে আমি আমার মোট বেতন থেকেও আয়কর বা ট্যাক্স দিচ্ছি আবার সন্তানদের জন্য শিক্ষাখাতে যা খরচ করছি সেখান থেকেও দিচ্ছি। এও সম্ভব ! আমি অবাক হচ্ছি যে, অামি আমার মেয়ের জন্য ২০১০ সন থেকেই স্কুলে ভ্যাট দিয়ে আসছি। ২০১৩ তে ৪.৫% আর ২০১৪ থেকেই ৭.৫% প্রতি মাসে দিয়ে আসছি।

ভাবতে অবাক লাগে যে দেশের শিক্ষা সবার জন্য বিনামূল্যে সুযোগ দেয়ার ঘোষনা করে সে দেশের সরকারই আবার শিক্ষা খাত থেকে ভ্যাট দিতে বাধ্যতামূলক করে তার মানে সরকার নিজেই শিক্ষাকে বাণিজ্য বা লাভজনক ব্যবসা হিসাবে গন্য করছে তাই নয় কি? ইংরেজি মাধ্যম থেকেও ভ্যাট নেয়া যুক্তিযুক্ত না। কারণ এই ভ্যাট তার অভিভাবককেই দিতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠান নিজেরা কোথা থেকে দিবে? যার কারনে শিক্ষার খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

যে কোন ধরনের শিক্ষায় একজন মানুষকে সুশিক্ষিত নাগরিক হিসাবে প্রকাশ করতে বেড়ে উঠতে সহায়তা করে। আমি অশিক্ষার কথা বলছিনা। আর সুশিক্ষিত একজন নাগরিক মানেই দেশের একটি সম্পদ, মানব সম্পদ যা দেশপ্রেমের মানসিকতাকে জাগ্রত করে দেশের উন্নয়নের কথা ভাবে দেশকে মনে প্রাণে ভালবাসে। দেশপ্রেমিক জনসাধারন মানেই একটি সুন্দর সমৃদ্ধ একটি উন্নত দেশ। লাল সবুজের দেশ সারাবিশ্বের কাছে সমৃদ্ধ আদর্শ একটি দেশ হিসাবে পরিচিতি পাক এটাই একজন প্রকৃত নাগরিকের প্রত্যাশা।