পদ্মাসেতু: পুনরায় বিবেচনা করা দরকার প্রকল্পের ব্যয় ও অর্থসংস্থান

লিটন চন্দ্র ভৌমিক
Published : 17 July 2012, 12:24 PM
Updated : 17 July 2012, 12:24 PM

সম্ভবত অন্য কোন প্রকল্প বাংলাদেশে এতবড় আলোড়ন তৈরি করতে পারেনি। সমগ্র জাতি, মিড়িয়া এখন পদ্মাসেতু প্রকল্পে আবদ্ধ । পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে সরকারকে পিছু হটে আসা আদৌ সম্ভব না; আজ হোক কাল হোক পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করতে হবে। এই প্রকল্পটি এখন সাধারন দাবিতে আবদ্ধ নেই । সমগ্র জাতির একীভূত চাওয়া।
সরকারকে সেতু নির্মানের পথে এগুতে হলে, দুটি বিষয়ে গুরত্ব দিতে হবে।

১। সেতুর নির্মাণ ব্যয় সংশোধন এবং হ্রাসকরণ।
২। বিশাল প্রকল্পের ব্যয়ভার যেন সরাসরি জনগনের উপর প্রভাব ফেলতে না পারে সেজন্য বিকল্প অর্থসংস্থান।

প্রথমত, পদ্মা সেতুর ব্যয় সংশোধন এবং হ্রাসকরণ:

পদ্মাসেতু ব্যয়ের মডেলটি পুনঃ বিবেচনা করা দরকার। বিশ্বব্যাংক প্রস্তাবিত খরচ অনেক বিশাল । ব্রিজ নির্মানের আগেই ধাপে ধাপে পদ্মা ব্রীজের নির্মাণ খরচ তারা আকাশচুম্বি করেছে । প্রকল্পে হাত দিলে আরো বাড়াবে । যেখানে আমাদের থেকে বড়- বড় ব্রীজগুলোর নির্মাণ খরচ আমাদের থেকে অনেকগুন কম; সেখানে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতাগোষ্ঠীরা মাত্র ৬.১৫ কিমি ব্রীজের ব্যয় ২৯০ কোটি ডলার ($২.৯ বিলিয়ন) দেখিয়েছে !!

★ দক্ষিন কোরিয়ার ১১.৯৮ কিমি (৭.৪ মাইল) দৈর্ঘ্যের ইনচিয়ন ব্রীজে প্রাক্কলিত ব্যয় > ১.৪ বিলিয়ন মাত্র।। অথচ, বাংলাদেশের দ্বিগুন এই ব্রীজ; খরচ কিন্তু বাংলাদেশের অর্ধেক !! কারন তারা কাজটি করিয়েছে নিজস্ব কোম্পানী দিয়ে ।। আপনাদের তো দেশীয় কোম্পানী বানানোর মুরোদ নেয় ।।

★ পর্তুগালের ১৭ কিমি দৈর্ঘ্যের ভাস্কো দ্য গামা ব্রীজে খরচ হয়েছে মাত্র> ১ বিলিয়ন ডলার ।।
আমাদের তিনগুন দৈর্ঘ্যের ব্রীজ বানাতে খরচ পদ্মার প্রস্তাবিত খরচের থেকে তিনভাগের একভাগ ।। [http://www.golisbon.com/sight-seeing/vasco-da-gama-bridge.html]

★ চীনের ২৫.৫ কিমি দৈর্ঘ্যের সাংহাই ইয়াংযে রিভার টানেল ও ব্রীজ বানাতে খরচ হয়েছে মাত্র ১.৮৪ বিলিয়ন ডলার ।।।। [http://en.wikipedia.org/wiki/Shanghai_Yangtze_River_Tunnel_and_Bridge]

★ ইন্দোনেশিয়ার ৫.৪৩ কিমি সুরামাদু ব্রীজে খরচ হয়েছে> ৪২৮ মিলিয়ন ডলার ।।
[http://www.thejakartapost.com/news/2009/06/10/special-report-suramadu-bridge-could-last-100-years.html]

★ চীনের ৩২.৫ কিমি দৈর্ঘ্যের ডংহাই ব্রীজের নির্মাণ খরচ> ১.২ বিলিয়ন ডলার ।।
[http://www.worldarchitecturenews.com/index.php?fuseaction=wanappln.projectview&upload_id=200]
আমাদের ৫গুন দৈর্ঘ্যের ব্রীজ বানাতে কিভাবে পদ্মার বাজেটের আড়াইগুন কম খরচ হয় !!

★রাশিয়ার ১২.৯ কিমি দৈর্ঘ্যের কনফেডারেশন ব্রীজ বানাতে খরচ হয়েছে > ১.৩ বিলিয়ন ।।
[http://en.wikipedia.org/wiki/Confederation_Bridge]
আর ১৩.৯৬ কিমি দৈর্ঘ্যের কামাব্রীজ বানাতে খরচ হয়েছে > ১৪ বিলিয়ন রুবল/ ৪৩০.৪৩ মিলিয়ন ডলার ।। (আমাদের দ্বিগুন দৈর্ঘ্যের ব্রীজে, খরচ পদ্মাসেতুর ছয়ভাগের একভাগ)
[http://www.constructionrussia.com/116435/Kama-river-bridge-construction-may-begin-mid-2012.shtml]
ভলগানদীর উপর নির্মিত ৭.১১ কিমি দৈর্ঘ্যের ভলগোগ্রাদব্রীজ নির্মাণে খরচ হয়েছে > ৩৯৬ মিলিয়ন ডলার।। আমাদের চেয়ে বড় ব্রীজের খরচ পদ্মার সাড়ে সাতগুন কম !!
[http://www.sptimes.ru/index.php?action_id=2&story_id=31511]
★ চীনের ২৫.৫ কিমি দৈর্ঘ্যের সাংহাই ইয়াংযে রিভার টানেল ও ব্রীজ বানাতে খরচ হয়েছে ১.৮৪ বিলিয়ন ডলার ।।।। [http://en.wikipedia.org/wiki/Shanghai_Yangtze_River_Tunnel_and_Bridge] (এতবিশাল ব্রীজের নির্মাণ খরচ আমাদের থেকে অনেক কম)

নির্মাণখরচ একটু এদিক সেদিক হতে পারে। কিন্তু আকাশ- পাতাল ব্যবধান হওয়ার কথা না । এক্ষেত্রে আমাদের ব্যাপক দরকষাকষি করা উচিত ছিল। একে ঋণ তার উপর বিশাল ব্যয়ভার। তাই নতুন প্রকল্পে, বিশ্বের ব্রীজ নির্মাণ সংস্থাগুলোর সাথে তুলনামুলক কম ব্যয়ের দরপত্র আহব্বান করা যায় । সেতুর নির্মাণ খরচ যদি অর্ধেক করা যায় তাহলে নির্মাণ ব্যয় জোগাড় করা সহজ হবে । বড় বড় ব্রীজ তৈরীতে কোরিয়া- চীন- রাশিয়া এগিয়ে; তারা খুব কম খরচে করে । তাদের সাথে চুক্তি করা যায়। আবার সেতুটি যদি আমাদের প্রকৌশলী দিয়ে তৈরী করা যায়; তাহলে নির্মাণ খরচ আরো কমবে । আমাদের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সে দক্ষ জনসম্পদ আছে ।। যেহেতু বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ তাই সেতু নির্মাণ অপরিহার্য; সেজন্য সেতু নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এবং একটি জনগোষ্ঠী তৈরী সময়ের দাবী । বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবনায়, পদ্মা সেতুর ডিজাইন ব্যয় ১১৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১৬৫ কোটি টাকা হয়েছে !! অথচ দেশীয় কোম্পানী দিয়ে করলে একটি সেতুর ডিজাইন ব্যয় এতটাকা হওয়ার কথা না ।

তাই প্রথম পদক্ষেপ হবে সেতুর নির্মাণ ব্যয় কমানো। যতটুকু সম্ভব দেশীয় নির্মান সংস্থা দিয়ে করা । কারন একটি দরিদ্র দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতির পক্ষে এত বিশাল ব্যয়ভার ভবিষ্যতে বিশাল চাপ নিয়ে আসবে । তাই যেভাবে কম খরচে করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে ওবং যেখানে কম খরচের অফার পাওয়া যায় সেখানে ছুটে যেতে হবে ।।

দ্বিতীয়ত, সেতুর অর্থসংস্থান:

'৩২কোটি হাত' '১৬কোটি জনতা' '১বেলা বাজার বন্ধ' '১ দিনের মজুরী' 'প্রতি কলে ২৫ পয়সা' এসব তত্ত্বকথার বাস্তবিক রুপ দেয়া সম্ভব নয়। সেতুর বর্তমান প্রাক্কলিত বাজেট ২৩২৮০ কোটি টাকা (২৯০ কোটি ডলার)। এসব পদ্ধতিতে কিঞ্চিত ব্যয়ও ওঠানো সম্ভব নয় । এভাবে ভাবলে পদ্মাসেতু স্বপ্নই থেকে যাবে ।। অন্যদিকে, এভাবে টাকা সংগ্রহ করে সেতু নির্মাণ করা ব্যাপক অর্থে অবাস্তব এবং বাংলাদেশের মত অর্থনীতিতে প্রায় অসম্ভব । বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ মূলধারার অর্থনীতি থেকে বাইরে। সরাসরি জনগনের থেকে অর্থ সংগ্রহ করলে তা জনগনের সঞ্চয়, আয়, ব্যয়, ক্রয় ক্ষমতাতেও প্রভাব ফেলবে ।

আবার অন্যদিকে, আমাদের ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদরা এমন চরিত্র, বিশ্বাসযোগ্যতা, নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করেনি; যাদের কথায় ১৬ কোটি মানুষ সেতুতে সরাসরি অর্থসংস্থান করবে । একবেলা বাজার না করে সেতুর ফান্ডে দেবে। ৩২ কোটি হাত সেতু নির্মাণে সহযোগিতা করবে। প্রতি কলে ২৫ পয়সা এবং একদিনের মজুরী দিয়ে পদ্মা সেতুর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে ।।

বরং আমরা আমাদের নায্য-প্রাপ্য টাকা দিয়ে সেতু নির্মানের পথে এগুতে পারি । ১৯৯৭ সালে মাগুরছড়া ও ২০০৫ সালে টেংরাটিলায়, মার্কিণ ও কানাডীয় কোম্পানীর কারনে আমাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওনা ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশী । যা আমরা আদায় করতে পারিনি। অথচ তা দিয়ে আমরা দুটি সেতু তৈরি করতে পারতাম । বিশ্বব্যাংক ঋণ দেয়ার জন্য দায়বদ্ধ না; কিন্তু অক্সিডেন্টাল-নাইকো আমাদের পাওনা দিতে দায়বদ্ধ । বিশ্বব্যাংকের টাকা শর্ত- সুদাসলে পরিশোধ করতে হবে; মাগুরছড়া টেংরাটিলার ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা সম্পূর্ণ আমাদের । আমরা আমাদের ৪৫ হাজার কোটি টাকার গ্যাস নষ্ট করার বিপরীতে পেট্রোলিয়াম কোম্পানীগুলোর থেকে একটাকা ক্ষতিপূরণ না নিতে পারলেও, অন্যান্য দেশ কিন্তু ক্ষতিপূরণে ছাড় দেয়নি ।

ইকুয়েডরের আপিল কোর্ট আমেরিকান জায়ান্ট শেভরনকে আমাজান জঙ্গল দূষণ করা এবং স্থানীয় স্বাস্থ্যে আঘাত হানার দায়ে বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার জন্য বাধ্য করে। নাইজেরিয়ানরাও তাদের উপকূল দূষণ করার দায়ে ব্রিটিশ জায়ান্ট শেলকে ছাড়েনি । নাইজার ডেলটায় ৪০০০ ব্যারেল তেল ফেলে দূষিত করার দায়ে; শুধু ক্ষতিপূরণ নয় সেই সাথে উপকূল পরিষ্কার করতে বাধ্য করে শেলকে। চীনের বোহাই উপসাগরে তেল উদগিরনের জন্য কনোকোফিলিপসকে ক্ষতিপুরন দিতে হলো ২৬৭ মিলিয়ন ডলার । মেক্সিকো উপসাগর বিপর্যয় করার দায়ে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামকে ৭.৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরন দিতে বাধ্য করে ক্ষতিগ্রস্তরা ।।

এভাবে বরং ১৬ কোটি জনতা তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে নামতে পারে ।। প্রয়োজনে আন্দোলন, ক্ষতিপূরন মামলার মাধ্যমে অক্সিডেন্টাল,নাইকোকো অবিরাম চাপ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচারণার জন্য ২/১ বছর অপেক্ষা করলাম। আমাদের নায্য পাওনা সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে পারবো। এই বিষয়ে মনে হয় দেশের সমস্ত জনগনের সাড়া পাওয়া যাবে। প্রবাসীরাও এই দাবীতে দারূন ভূমিকা রাখতে পারে।

আবার অন্য একটি বিকল্প পদ্ধতি হলো – রেমিট্যান্সকে কাজে লাগানো । বাংলাদেশে প্রতিবছর ব্যাপকহারে রেমিট্যান্স আসে। রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ১৭% এর মত। আমাদের মুদ্রাস্ফীতিও ১০-১২%। অনেক অর্থনীতিবিদ মুদ্রাস্ফিতির জন্য রেমিট্যান্সের সরাসরি প্রবাহকে দায়ী করেন । রেমিট্যান্সের এই প্রবাহ মুদ্রাস্ফিতিকে ধাক্কা দেওয়া অস্বাভাবিক নয় । ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স বাড়তে থাকলে মুদ্রা সরবরাহ বাড়তে থাকবে এবং মূল্যস্ফীতি হওয়ার প্রবণতা আরও বাড়বে। রেমিট্যান্সকে উৎপাদনে ব্যবহারের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে তা চলতি মুদ্রা সরবরাহ থেকে পুঁজি সৃষ্টিকারী বিনিয়োগে যায়। রেমিট্যন্সকে বিনিয়োগের কাজে লাগালে তা মুদ্রাস্ফীতিকে প্রভাবিত করতে পারবে না ।

২০১০-১১ অর্থবছরে প্রকৃত রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ১১,৬৫০.৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের তুলনায় বৈদেশিক সাহায্যের অবদান সামান্য। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে ২০১৪-১৫ অর্থবছর নাগাদ রেমিট্যান্সের পরিমান হবে ১৫,৩০৯.৯৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে নীট বৈদেশিক সাহায্য আসার সম্ভাবনা মাত্র ১,০৬৬.৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই রেমিট্যান্স মুলত অলস পড়ে থাকে। এই বিপুল রেমিট্যান্সকেও সরকার কাজে লাগাতে পারে । রেমিট্যান্সের একটি অংশ পদ্মাসেতু নির্মানে ব্যয় হলে রেমিট্যান্স মুদ্রাস্ফিতিতে আঘাত হানতে পারবে না । আর সেতু নির্মানে প্রবাসীদেরও অংশীদারিত্ব থাকবে । সেতু থেকে আয়ের একটা অংশ তাদের দেয়া হবে ।।

অন্যদিকে, দেশে ১ লাখ ২২ হাজার ৪৩৭ জন ঋণ খেলাপী আছেন ( বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী) । বারবার তাগাদা দেয়া সত্বেও সে টাকার কিঞ্চিত পরিমানও উদ্ধার হয়নি। মোট খেলাপী ঋণের পরিমান ২২ হাজার ৬৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা প্রায়। এই টাকা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে উদ্ধার করে সেতু নির্মাণের পথে এগুনো যায় ।

আমাদের শেয়ার বাজার থেকে লুটপাট হয়েছে বিপুল পরিমান মূলধন। শেয়ার কেলেংকারীর নায়কদের থেকে সে টাকা উদ্ধারের মাধ্যমে পদ্মাসেতুর ব্যয় তুলে আনা যায় ।

প্রতিবছর আমাদের বাজেটের বিশাল একটা অংশ দাতাগোষ্ঠীদের জন্য সুদ হিসেবে রাখা হয়। এই বছর তার পরিমান ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ স্বাবলম্বী অর্থণীতি বানালে প্রতিবছর পদ্মাসেতুর মত সুবিশাল প্রকল্প হাতে নেয়া যেত । নির্ভরশীল অর্থনীতির ফলে যেকোন প্রকল্পেই কেবল হাত পাততে হয় ।

সরাসরি জনগনের কাছ থেকে অর্থসংগ্রহকে যৌক্তিক মনে করেন না অনেকেই। বিশিষ্ট লেখক কলামিস্ট বদরুদ্দীন উমর বলেন, 'সরকারের মন্ত্রী, এমপি এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা বিভিন্ন উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, সেইসব টাকা পদ্মাসেতু প্রকল্পে ব্যয় করা হলে সেতু নির্মাণ হয়ে যাবে। ফলে পদ্মাসেতু প্রকল্পের জন্য জনগণের কাছ থেকে কোনো অর্থ সংগ্রহ করতে হবে না।'

সুশাসনের জন্য নাগরিক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়। কারণ সরকারের দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি বাতিল করেছে। এর দায়ভার এখন জনগণের ওপর চাপানো ঠিক হবে না। আর সরকারের দুর্নীতির দায় জনগণই বা তাদের ঘাড়ে নেবে কেন? এ দেশে অনেক মানুষ আছে যারা দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করেছে। সরকারের উচিত ওই দুর্নীতিপরায়ণদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে পদ্মাসেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা।'

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম বলেন, 'এটা এক হাস্যকর প্রস্তাব। এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে'

যেহেতু প্রকল্পটি বিশাল; তাই তার অর্থ সংগ্রহ এমন হতে হবে যেন জনগনের উপর প্রভাব না ফেলে। তাই উপরোক্ত বিকল্প বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ।।