পেশাজীবীদের পরিচিতিঃ কাঁসারু

লোরক
Published : 19 June 2012, 05:59 PM
Updated : 19 June 2012, 05:59 PM

কাঁসারু (kasaru): যারা কাসা-পিতল দিয়ে গৃহস্থালির ব্যবহার্য তৈজসপত্র তৈরি করে তারা কাঁসারু নামে পরিচিত। অনেকে তাদের কংসকার নামে ডাকেন। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় কাঁসা-পিতলের প্রচলন ছিল। পাল ও সেন রাজাদের শাসনামলে এদেশে ধাতু মিশ্রিত শিল্পের সূচনা হয় বলে কথিত আছে। সেন আমলে কাসারুরা অভিজাত ছিল।

জেমস টেলরের 'কোম্পানি আমলের ঢাকা' গ্রন্থে ঢাকা ও বিক্রমপুর কাসারুদের বর্ণনা পাওয়া যায়। একসময় বিয়ে, খৎনা, জন্ম ইত্যাদি অনুষ্ঠানে কাঁসার তৈরি জিনিসপত্র উপহার হিসেবে প্রদান করতো। কিন্তু বর্তমানে এর কদর কমে গেছে। মানুষ এখন এগুলো ব্যবহারে কুণ্ঠাবোধ করে। সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা কাঁসারু শিল্পীরা পায় না। অথচ এ শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের কাঁসারুদের তৈরি দ্রব্যাদি বিদেশে রপ্তানি হয়।

প্রাচীনকালে কাসা-পিতলের তৈজসপত্রে লোকবিশ্বাস ও লোকধর্ম সম্পৃক্ত বিভিন্ন কারুকাজ খোদাই করা হত। বৃটিশ শাসনামলে কাসা পিতল দিয়ে কোষাকোষী, প্রঞ্চপ্রদীপ, নন্দীপ্রদীপ প্রভৃতি পুজাপার্বনে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি বানানো হত। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষ করে ধামরাই, জামালপুর, নবাবগঞ্জ, ময়মনসিংহ এই সমস্ত দ্রব্য তৈরিতে প্রসিদ্ধ ছিল।

উনিশ শতকের চতুর্থ দশক পর্যন্ত অভিজাত মুসলিম মহিলাগন কাঁসার তৈরি ড্রেসিং টেবিল, বাক্সপেট্টা, ফুলদানী ব্যবহার করতেন। সরকার যদি এই শীল্পের প্রতি নজর দেয় তাহলে এই শিল্প থেকে বহু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। ইরান,পাকিস্তান সহ মধ্য প্রাচ্যের অনেক দেশে কাঁসার জিনিস পত্রের কদর আছে।