দিন বদলের এই দিনে, দিন বদলে যাচ্ছে দ্রুত। দিনবদলের পালাক্রমে বদলে যাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীসহ পুরো পরিবেশটাও। ঢাকা শহরের প্রায় ৭৮% লোক চাকুরীজীবি। সময়ের প্রয়োজনে জীবনের তাগিদে চাকুরীজীবি মানুষগুলোকে বসবাস করতে হয় এই ঢাকাতে। খাওয়া-দাওয়া আর চাকুরী, মাস গেলে বেতন। বেতন পাওয়া মাত্র পাওনাদার হাজির। সবাইকে বেতনের টাকা বন্টন করে দিয়ে সে শূন্যতায় ভোগে। আর যদি অবশিষ্ট থাকে তাহলে তো কোন কথাই নাই, খরচ হয় ব্যাংকে জমা দেওয়ার কাজে না হয় প্রয়োজনীয় কোন কাজে, না হয় ঋন মেটানোর প্রয়োজনে। এই হচ্ছে একজন চাকুরীজীবি মানুষের রুটিন।
প্রতিবছর বাড়িওয়ালারা ভাড়া বৃদ্ধি করে ৩০০-৫০০ টাকা কিংবা তার বেশী। যে লোকটি একটি বাড়ীতে ৫ বছর থাকে তার গুণতে হয় অধিক টাকা। না থেকেও উপায় নাই। কেননা অন্য কোন বাড়ী ভাড়ার করার জন্য গেলে সেখানেও ঠিক একই নীতি চলে। বাড়ী ওয়ালা বাড়ী ভাড়া বৃদ্ধি করে খান্ত নাই। বাড়ী ভাড়া বৃদ্ধির সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ব্যবহার করার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয় ভাড়াটিয়ারা। বাড়ী ভাড়া নিতে গেলে হাজার হাজার নিয়ম কানুন শুনতে হয়, জানতে হয়, মানতে হয়; না মানলে কিংবা প্রতিবাদ করলে বাড়িওয়ালার সোজা কথা বাড়ী ছেড়ে দিয়ে যেখানে ভাল লাগে সেখানে চলে যাও। বাড়িওয়ালার সৃষ্ট নিয়ম কানুনের অভিযোগের প্রতিবাদ করার কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে একজন চাকুরীজীবি মানুষের ঢাকায় থাকার মত যোগ্যতা হারিয়ে ফেলবে। একদিন এই ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে হয় বেতন বাড়াতে হবে, না হয় বাড়ী ভাড়া সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সরকার দিন বদলের সনদ নিয়ে সংসদে এসেছে। সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ ছিল ক্ষমতায় আসার পরে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় সে কাজটি বর্তমান সরকার করতে পারেনি। যাহোক আমিও নিজেও অনেক ভাড়াটিয়া মত ভুক্তভোগী উপরোল্লিখিত বৈশিষ্ট গুলোতে।
সরকারের উচিত বাড়ী ভাড়ার উপর নির্দিষ্ট নীতিমালা গঠন করা। প্রত্যেক বাড়িওয়ালাকে এই নীতিমালার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নীতিমালা না থাকার কারণে সরকার একদিকে বড়ধরনের রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। আরেকদিকে ভাড়াটিয়া যেমনি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তেমনি লাভবান হচ্ছে বাড়িওয়ালারা।
***
ফিচার ছবি: ইন্টারনেট