বিবাহ কেন জরুরী?
"বিবাহ" মহান রাব্বুল আলামীনের একটি নিয়ামত। কিয়ামত পর্যন্ত মানুষের বংশ পরম্পরা জারি রাখার একটি বৈধ মাধ্যম। অবাধে পশুর মত যৌনতারোধে একটি সুন্দর সুশীল একটি পদ্ধতী। বিবাহ কেবল সামাজিক বন্ধন নয়। মুসলমানদের জন্য এটি একটি ইবাদতও। নবীজী সা. এক হাদিসে বলেছেন। "বিবাহ করা আমার সুন্নাত আর যে আমার সুন্নাত থেকে (অবজ্ঞার সাথে) দূরে থাকবে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয় (বুখারী শরীফ-হাদিস নং-৪৭৭৬) আর ইবাদত সহীহ হবার জন্য মুসলমান হওয়া আবশ্যক। সুতরাং মুসলমানদের জন্য কোন নাস্তিক-মুরতদ, কাফের-মুশরিকের সাথে বিবাহ করা জায়েজ নয়। যদি বিবাহ করেও তাহলে এই বিবাহ সহীহ হবেনা। বিবাহের পর স্বামী বা স্ত্রী যদি নাস্তিক-মুরতাদ বা কাফের হয়ে যায় (আল্লাহ তায়ালা আমাদের হিফাযত করুন) তাহলে তাদের মাঝের বিবাহ বন্ধন বাতিল হয়ে যায়।
নাস্তিক-মুরতাদের সাথে বিবাহ করা জায়েজ নয়। ব্যক্তি মুসলমান অবস্থায় বিবাহ করার পর নাস্তিক মুরতাদ হয়ে গেলে তার বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। নাস্তিক-মুরতাদের জন্য মুসলিম , কাফের , নাস্তিক-মুরতাদ কোন মহিলাকেই বিবাহ করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে শামী-৪/৩৭৬, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/২৮২, আল বাহরুর রায়েক-৩/২০৯)
قَوْله تَعَالَى { وَمَنْ يَكْفُرْ بِالْإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ سورة المائدة-5)
আল্লাহ তায়ালা বলেন-ঈমান আনার পর যে ব্যক্তি কুফরী করে তার সকল আমল বাতিল হয়ে যায়। আর সে আখেরাতে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা মায়িদা-৫)
ولا يجوز للمرتد أن يتزوج مرتدة ولا مسلمة ولا كافرة أصلية وكذلك لا يجوز نكاح المرتدة مع أحد كذا في المبسوط(الفتاوى الهندية-1/282)
মৌলিকভাবে মুরতাদের জন্য মুরতাদকে, কোন মুসলিমকে, এবং কোন কাফেরকেও বিবাহ করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে আলমগীরী০১/২৭২
সকল মুসলমানদের প্রতি একটি সতর্কবাণী
আমরা মুসলমান। আমরা জানি আমরা এক সময় ছিলামনা। থাকবোনাও একদিন। অল্প ক'দিনের এই জীবন। ৭০/৮০ বছরের এক মুসাফির আমরা পৃথিবী নামক এই গৃহটার। বয়সটা শেষ হয়ে এলে ভয়ানক আজরাইলের হাতে প্রাণটা উড়ে যাবে সুদূর অজানায়। পাড়ি জমাবো আখেরাতের এক অনন্ত সফরে। মুসলমান বলেই দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করি-কবর থেকে শুরু হবে এক অজানা আতংকের জীবন। নেক আমল করে যেতে পারলে অফুরন্ত শান্তি। আর বদ আমলের কারণে শুরু হবে অসহনীয় শাস্তি। কবর থেকে কিয়ামত। কিয়ামত থেকে হাশর। অবশেষে পুলসিরাত পেরিয়ে জান্নাত কিংবা জাহান্নাম। এইতো লক্ষ-কোটি বছরের সফর আমাদের।
সর্বোচ্চ ৭০/৮০ কিংবা একশতের কিছু বেশি বছর হয়তো বাঁচবো আমরা। তারপর শুরু হবে অনন্ত সফর। সেই সফরের সম্বল সংগ্রহ করার জন্য মূলত এলাম আমরা ধরিত্রীতে। সুতরাং এই দুনিয়ার ক'দিনের মোহে পরে যেন অনন্ত আখেরাতের জীবন ধ্বংস না হয় সেদিকে আমাদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। হারাম কাজে মত্ত হয়ে যেন কিছুতেই আমাদের আখেরাত বরবাদ না হয়। সেদিকে থাকতে হবে আমাদের সজাগ দৃষ্টি।
সুতরাং বিবাহের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নাস্তিক-মুরতাদ বা কাফেরদের সাথে বিবাহ করে যেন আমরা আল্লাহ তায়ালার বিধানের লংঘন না করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হিফাযত করুন। ভাল থাকুন।