আদিবাসী, না বাংলাদেশি?

এম এম হোসেন
Published : 26 August 2014, 05:01 PM
Updated : 26 August 2014, 05:01 PM

আদিবাসী, উপজাতি ইত্যাদি নাম জিইয়ে রেখে কিছু পেশাজীবী, যারা তাদের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে, ফায়দা লুটতে চায়। কিছু আছে এদের নিয়ে গাল গল্প করে বুদ্ধিজীবী হিসাবে নিজেকে জাহির করে। কেউ কেউ নিজেকে আদিবাসী পরিচয় দিয়ে কোটা সুবিধা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে করুণার পাত্র হতে চায় আর কেউ কেউ তাদের নেতা হয়ে সরকারি ও বৈদেশিক সুবিধা ভোগ করে। চৌধুরী, তালুকদার, খান যেমন বাংলার সন্তান, তাদের পরিচয় যেমন বাংলাদেশী তেমনি আদিবাসী নামের অধিকারী জনগোষ্ঠীকে যতদিন পর্যন্ত না আমরা শুধু বাংলাদেশী হিসাবে পরিচিত করতে পারব ততদিন পর্যন্ত সরকারি পৃষ্টপোষকতায় তাদের প্রতি বিভিন্ন অন্যায় হতে থাকবে।

মূল স্রোতধারার বাইরের মানুষ সবসময় কিছুটা অবহেলিত থাকে। আর কিছু মানুষ সমস্যা জিইয়ে রাখতে পছন্দ করে, কারণ এতে তাদের গুরুত্ব বজায় থাকে, তারা মুখে, সেমিনারে, গোলটেবিলে কফি খেতে খেতে, নিজের লেখনীতে অনেক কথা বলে, কিন্তু মনে মনে সৎ ভাবে এটা চায় না সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হয়ে যাক। কেননা এতে তাদের ব্যবসা করার জায়গা কমে যায়। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব মিজানুর রহমান শ্রদ্ধেয় ও সজ্জন ব্যক্তি, বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শনে গিয়ে বড় বড় কথা বলেন কিন্তু কাজের কাজ কিছু হতে দেখিনা, কিছুদিন আগে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের এক অনুষ্ঠানে প্রশ্ন করেন, আদিবাসী কেন ডাকা যাবে না?

আমাদের জানার বিষয়, পাহাড়ি জনগোষ্ঠী যদি আদিবাসী হয় তবে সমতলের মানুষ কি এদেশে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে! বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে একজন মেয়ে ধর্ষিত হলে আমরা যেভাবে বিবেচনা করি, একজন চাকমা কিংবা সাঁওতাল অথবা একজন হিন্দু মেয়ে ধর্ষিত হলে সেভাবে দেখি না, বরং আমরা বিষয়টা কে জাতিগত দৃষ্টিকোণে নিয়ে যাই। ফলে ধর্ষক ব্যক্তিটি অন্য দশটা ধর্ষকের মত সম অপরাধী হলেও শুরুতেই সে একটা জাতির প্রতিনিধি হয়ে যায় এবং সে দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্য একটা সমর্থন পেতে থাকে অপেক্ষাকৃত একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দ্বারা। ফলে সঠিক বিচারের সম্ভাবনা শুরুতেই বাধা প্রাপ্ত হয়। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ যেখানেই হোক সব গুলোকেই সমভাবে মূল্যায়ন করতে হবে, হোক সে অবাংলাদেশী বিহারী। অথচ হিন্দু কিংবা আদিবাসী নামধারীরা ত পূর্ণ অধিকার প্রাপ্ত বাংলাদেশী। তবে তাদের প্রতি সংগঠিত অন্যায় কে কেন জাতিগত ভাবে আলদা করে দেখতে হবে। সেই সাথে বিচার প্রক্রিয়া জটিল করে অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের সকল মানুষের  দেশের যেকোনো জায়গায় জমি কিনার  অধিকার থাকতে হবে এবং প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী সকলকে সম অপরাধী হিসাবে দেখতে হবে, সে পাহাড় কিংবা সমতল যেখানের বাসিন্দাই হোক না কেন।