আমেরিকায় স্বপ্নভঙ্গ আর মা বাবার অবাধ্য সন্তান

মাহাবুব
Published : 14 May 2014, 04:00 PM
Updated : 14 May 2014, 04:00 PM

অনেক দিন আগে আমেরিকার লটারিতে গ্রীন কার্ড পেয়ে একজন আনন্দিত আর কয়েকদিন পরে তারা পারি জমায় আমেরিকায়। পড়াশুনা ভালো না জানলেও কাজ তারা পেয়ে যায় আর সংসার ভালো চলে। আর দেশে তাদের আত্মীয়রা তাদের আর আমেরিকার অনেক সুনাম করেন কারণ তারা আমেরিকাতে খুব ভালো আছেন। কিন্তু ছন্দ পতন হাতে বেশি সময় নেয়নি।

তাদের ছেলের জন্ম আমেরিকায় আর সে আমেরিকার নাগরিক। বাংলাদেশে সে আসতেই চায়না কারন অনেক গরম। যখন ছোট তখন কোন রকমে তাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারলেও বড় হতেই সে স্বাধীন থাকতে চায়, আর তখনই শুরু সমস্যা। কারন আমাদের দেশে সামাজিকতায় লিভটুগেদার না থাকলেও আমেরিকাতে আছে। মেয়ে বন্ধু নিয়ে চলা আমেরিকায় কোন সমস্যাই না। ছেলেটার বাবা-মা চাইতেন সে মানুষের মতো মানুষ হোক। ছেলেটার বাবা-মা বাংলাদেশে বড় হয়েছেন। কিন্তু সামাজিকতায়, সংকৃতিতে বাংলাদেশ আর আমেরিকা অনেক পার্থক্য।

বাবা-মা তার ছেলেকে মেয়ে বন্ধু নিয়ে চলতে নিষেধ করলে ছেলের কথা তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। বাড়াবাড়ি হলে ৯১১ ফোন কল আর বাড়ির সামনে পুলিশ হাজির। ছেলেটার জন্য কত সুবিধা। এখন সে যা খুশি তা করতে পারে। বাংলাদেশে থাকলে বাবা-মার অবাধ্য হলে মেরে পিটিয়ে শাসন করে ঠিক করা যায়। কিন্তু আমেরিকাতে তো এটা আর করা যায়না। ৯১১ ফোন কল সুবিধার অনেক ভালো দিক আছে। আমেরিকার স্কুলে ছেলে-মেয়েদের পুলিসকে কিভাবে অপরাধের খবর জানাতে হয়, পুলিসকে কিভাবে সাহায্য করতে হয় তা তারা শিখে এবং তাতে অপরাধ দমনে ছোট ছেলে-মেয়েরা পুলিশের সাহায্যকারী হয়ে যায়। আর আমেরিকাতে অনেক কিছু আছে যা আমেরিকানদের কাছে গ্রহণযোগ্য হলেও বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমেরিকার অনেক কিছু গ্রহণযোগ্য নয়, যেমন মদ, নারীদের সংক্ষিপ্ত পোশাক সহ অনেক কিছু। এখন যদি ছেলে-মেয়েরা আমেরিকার সংকৃতিতে চলতে চায় তাতেই বাঙালি মনভাবের বাবা-মার কাছে তা অনেক বড় সমস্যা।

আরেকটি পরিবারে দুই ছেলে দেশে ভালো ফলাফল করছিল আর আমেরিকাতে বৃত্তি সুবিধায় তারা আরও ভালো ফলাফল করলো। কিন্তু হটাত ছন্দ পতন। এই দুই ভাইকে ঘুনে ধরেছে অনেক আগে। বাবা-মা তাদের খারাপ পথ থেকে সরিয়ে আনার ক্ষমতা হারিয়েছেন। এই দুই ভাই স্বাধীন আমেরিকাতে, আর একটা সময় তাদের বাবা-মার স্বপ্ন ভঙ্গ হয় আমেরিকায়, কারন তাদের দুই ছেলে মানুষের মানুষ হতে পারল না। এদের সমস্যাটা প্রায় একই রকম।

আমাদের দেশে ঐশী রহমান তার বাবা-মাকে খুন করে স্বাধীন হতে পেরেছে, আমাদের দেশে ভালো পড়াশুনা করা ছেলে-মেয়েরা অনেক সময় বাবা-মার জানার মধ্যে বা না জানার মধ্যে তারা খুললাম-খুল্লা পশ্চিমা সংকৃতিতে গা ভাসিয়ে নিজেদের ঘুনে ধরায় বা নিজেদের ধ্বংসের পথ উন্মুক্ত করে দেয়।

আল্লাহ ভালো যানেন এরকম ছেলে-মেয়েদের জন্য তাদের বাবা-মা কিভাবে জিজ্ঞাসিত হবে। হিন্দি সিনেমায় নারীদের সংক্ষিপ্ত পোশাকের বাহার দেকলে মনে হয় শরীর ঢাকার কাপড়ের কত অভাব। এসব বিষয় ইসলামে ফায়েসা বা খারাপ কাজ। নামায ইসলামে যা ফায়েসা বা খারাপ কাজ থেকে হেফাজত করে। ফায়েসা কাজ বলতে- কোন গুনাহের কাজ, নিষিদ্ধ কাজ কে বুঝায়।

আসুন পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করি, ইসলামের সকল নিয়ম মেনে চলি। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন। আমীন।