প্রধানমন্ত্রীর এসএমএস এবং পাওয়া না পাওয়ার বেদনা

অতিসাধারন না কি অসাধারন
Published : 16 Dec 2012, 02:22 PM
Updated : 16 Dec 2012, 02:22 PM

টিভিতে হঠাৎ একটি খবর দেখে চমকে উঠলাম। প্রধানমন্ত্রী নাকি এসএমএস পাঠিয়ে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের ‍শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নিঃসন্দেহে চমকে যাওয়ার মতোই খবর বটে। কিন্তু এ কি? আমার মোবাইলে তো কোন এসএমএস আসেনি। তাহলে? দুটো কোম্পানীর সংযোগ ব্যবহার করছি-একটি তো অন্তত এসএমএস আসার কথা-কিন্তু আসেনি। নিজেই নিজেকে বোঝালাম মনে হয় মোবাইল জট লেগে যাওয়াতে সবার কাছে এসএমএস আসেনি। আমাদের দেশে এসব জট নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়, কিন্তু কখনোই সেসব ফলাফল ইন্টারনেট থেকে জানতে পারিনি। সেখানে অবশ্য অন্য রকম খেলা চলে-একজন তথ্য-প্রযুক্তিবিদ হিসেবে ভাল করেই জানি। যাই হোক। কথা বলছিলাম প্রধানমন্ত্রীর এসএমএস নিয়ে। আমি যেহেতু পাইনি-তার সম্ভাব্য ০২ টি কারণ হতে পারে- ১ হয় আমাকে বিরোধী দলে ফেলা হয়েছে এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর এসএমএস পাইনি নতুবা ২ দলমত নির্বিশেষে কমবেশি সবাই প্রধানমন্ত্রীর এসএমএস পেযেছে এবং যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে সেটা আমাদের দেশের জন্য নতুন একটি অধ্যায় বটে। এরকম হলে বিরোধীদলীয় নেতা এমন কি জামায়াতের নেতৃবৃন্দও নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীর এসএমএস পেয়েছেন। সত্যি সত্যি এমনটি হয়ে থাকলে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটময় মুহুর্তে এটি বিরাট একটি পদক্ষেপ বলে মনে করছি।

এসএমএস পাঠানোর অবশ্য উপকারিতা অনেক। যেমন কোন কথা সরাসরি অথবা মোবাইলে না বলতে পারলে তা খুব সহজে এসএমএস এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিই। ব্যাস। কথা বলার বিব্রতকর অবস্থা থেকেও মুক্তি আবার কথাটি বলাও হয়ে গেল। অন্য আর একটি সুবিধা হলো একই কথা বার বার না বলে একবারেই অসংখ্য জনকে জানানো সম্ভব। এখন আমার জিজ্ঞাসা হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোন কারণে এসএমএস পাঠালেন? বিব্রত হওয়ার ভয়ে, নাকি একসঙ্গে অনেক মানুষকে জানানোর জন্য? আমি ধরে নিচ্ছি একসঙ্গে অনেক মানুষকে জানানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী এসএমএস করেছেন, যাতে সবাইকে একই কথা বারবার বলতে না হয়।

এখন আমার জিজ্ঞাসা হলো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি যদি এসএমএস পাঠিয়ে সবাইকে (বিএনপি, জামায়াত সহ অন্যান্য সকলকেই) শুভেচ্ছা জানাতে পারেন, তাহলে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কেন বিরোধী দলের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোচনার কথা বলছেন না? আপনি নিজে আলোচনার উদ্যোগ নিয়ে তাদেরকে ডেকে আলোচনায় বসালে আপনি বড় না হলেও ছোট তো নিশ্চয়ই হবেন না। দেশ-বিদেশের সবাই অন্তত দেখতে পেতো রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আপনার উদ্যোগের কোন ঘাটতি নেই। কথা বলতে বিব্রত বোধ করলে অন্তত এসএমএস করে আলোচনার কথা বলুন। সাধারন মানুষের মনের কাছাকাছি যেতে না পারেন- চেষ্টাতো করে দেখতে পারেন। দেশতো কারো পারিবারিক প্রতিষ্ঠান নয়-দেশের আপামর জনতার। এইসব জনতার নিশ্চয়ই শান্তিতে বাস করার অধিকার রয়েছে। শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক রাজনীতিবিদ এর কারণে দেশের বিশৃঙ্খল অবস্থা কখনোই সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।