মাথা নষ্ট ও ২টি কৌতুক

অতিসাধারন না কি অসাধারন
Published : 19 Dec 2012, 07:31 PM
Updated : 19 Dec 2012, 07:31 PM


গতকাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এসএমএস নিয়ে সামান্য একটু লিখেছিলাম, আর তাতেই মাথা নষ্ট খেতাব জোটেছে। তাই ভাবছি, আজ এরকম কিছু লিখবো না, শুধু কৌতুক শোনাব। তাহলে কৌতুক শুরু করছি।

একবার প্রয়াত পোপ জন পল আমেরিকা সফরে গেলেন। প্রটোকল অনুযায়ী পোপের জন্য বিমান বন্দরে বেশ জমকালো সংবর্ধনার আযোজন করা হয়। বিমান বন্দরের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্তির পর পোপের হোটেলে ফেরার সময় হলো। লিমুজিন থেকে শুরু করে হরেক রকমের যানবাহনের ব্যবস্থা করা হলো। অতিমান্য পোপ বলে কথা। তিনি যেটিতে চড়তে চাইবেন, সেটিই যেন উপস্থিত থাকে-এরকম চিন্তা-ভাবনা থেকেই প্রটোকলের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাধ্যমে এমন সুব্যবস্থা।

পোপ বাহিরে এসে দেখেন অসংখ্য যানবাহন, এর মধ্যে একটি ধবধবে সাদা রংয়ের কারও আছে-তবে এটি একটু দুরে। ড্রাইভার একা গাড়িতে বসে আছেন। পোপ বললেন-আমি ঐ সাদা গাড়িটাতে চড়বো, তবে শর্ত হলো-আমি একা যাবো, নিরাপত্তা বা অন্যকোন কাজে জড়িত কেউ আমার সঙ্গে থাকবে না।

মাননীয় পোপ যে ভাবে চান সেভাবেই হবে-বলে পোপকে গাড়িতে তুলে দেয়া হলো। চালক বেচারা খ্রিস্টান ধর্মপ্রাণ মানুষ, পোপ একা তার গাড়িতে-এতেই যেন স্বর্গীয় সুখ অনুভব করলো। চমক কিন্তু চালকের জন্যে তখনো বাকিই ছিল। বিমান বন্দর থেকে গাড়ি মহাসড়কে আসার পরপরই পোপ চালককে বললেন, আমি নিজে একটু গাড়ি চালাতে চাই, তুমি পিছনে এসে বসো। চালক বিনা বাক্য ব্যযে গাড়ি থামিয়ে পিছনে এসে বসলো আর পোপ নিজে গাড়ি চালাচ্ছেন।

পোপ একমনে ধীর গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন-এদিকে একজন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক এটি দেখে সাথে সাথে ট্রাফিক কন্ট্রোল রোমে ফোন করলো। শুরু হলো আলাপচারিতা।

ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: হ্যালো, কন্ট্রোল রোম?
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: হ্যাঁ,কন্ট্রোল রুম।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: …..নং রাস্তা দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন লোক যাচ্ছেন।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: তিনি কি খুবই গুরুত্বপূর্ণ লোক?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক:হ্যাঁ, খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: তিনি কি শেরিফ (শহরের প্রধান আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা)?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না, তিনি শেরিফের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: তিনি কি হলিউডের নায়ক?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না, তিনি হলিউডের নায়কের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: তাহলে কি তিনি রাজ্যের গভর্নর?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না, তিনি রাজ্যের গভর্নর এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: রাজ্যের গভর্নর এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ? তাহলে কি তিনি সিনেটর?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না, তিনি সিনেটরের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: সিনেটরের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক:হ্যাঁ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: তাহলে তিনি নিশ্চয়ই আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তাই না?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না। তিনি আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: ও, আপনি তাহলে আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কথা বলছেন। তাই না?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না। তিনি আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রীর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: এবার বুঝতে পেরেছি। তিনি নিঃসন্দেহে আমাদের প্রেসিডেন্ট। কি ঠিক বলিনি?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: না। মনে হয় তিনি আমাদের প্রেসিডেন্ট এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হবেন।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রোম থেকে: এই যা, কি বলছেন এসব? আমাদের প্রেসিডেন্ট এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কেউ আছে নাকি?
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রক: হ্যাঁ। কারণ পোপ জন পল নিজে তার গাড়ি চালাচ্ছেন!

এবার মন্তব্য : দায়িত্বের কি ব্যাকুলতা!

নিচের কৌতুকটি কয়েকদিন আগে একটি পত্রিকায় পড়েছিলাম। লেখকের নামটি স্মরণ করতে পারছি না। নাম উল্লেখ করতে পারছি না বলে লেখকের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ কৌতুকটিতে একটি শক্তিশালী আবেদন আছে, এজন্যই এটি লোকজনের জানা দরকার।

এক ছেলে নতুন পত্রিকা পড়া শুরু করেছে। পত্রিকার খবরের মধ্যে কিছু শব্দ ছেলেটির মাথায় ঢোকে না। যেমন বিরোধী দল, সরকার, জনগণ, ভবিষ্যত্ প্রজন্ম। ছেলেটি ওর বাবাকে শব্দগুলো বুঝিয়ে দিতে বলল। বাবা উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিতে গিয়ে বললেন, মনে কর আমাদের পরিবার একটা রাষ্ট্র। আমি যেহেতু আয়-রোজগার করে পরিবার চালাই, তাই আমাকে ধরতে পার সরকার, তোমার মা যেহেতু সব সময় আমার বিরোধিতা করে, সে বিরোধী দল। তোমার ২ বছর বয়সী ছোট ভাইটা হচ্ছে ভবিষ্যত্ প্রজন্ম আর তুমি হচ্ছ জনগণ।

সেদিন রাতে কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ছেলেটির ঘুম আসছিল না। তাই ছেলেটি হেঁটে বাবা-মা'র রুমে গিয়ে দেখল বাবা ঘুমিয়ে পড়েছেন। মা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে মাথা আঁচড়াচ্ছেন। পাশের ঘরে ওর ছোট ভাইটি বিছানায় হিসু করে কান্নাকাটি করছে। এমন সময় ওদের বাসায় ফোন করলেন ওর দাদা। দাদা খোঁজখবর নিতে গিয়ে বললেন, তোমরা সবাই কেমন আছো?
ছেলেটির জবাব, সরকার ঘুমিয়ে আছেন। বিরোধী দল নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। ভবিষ্যত্ প্রজন্ম কাঁদছে আর জনগণ চেয়ে চেয়ে দেখছে, কিন্তু কিছুই করতে পারছে না।

এবার মন্তব্য : এবার মনে হচ্ছে না, ছেলেরুপি জনগন আমিই?