“ভূতের আড্ডা” পকেটমারদের দখলে !!!

প্রকৌশলী মঈনুল আহসান
Published : 12 Jan 2013, 06:38 PM
Updated : 12 Jan 2013, 06:38 PM

শুক্রবার ০৪ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখ দুপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম রাজধানীর উত্তরায় (আজমপুর) অবস্থিত Vooter Adda Restaurant & Uttara Party Center এ। অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তে উপলব্ধি করলাম আমার ব্লেজারের পকেটে রাখা মোবাইলটি নেই। কিছুক্ষণ খুঁজলাম এবং না পেয়ে আত্মীয়দের জানালাম। উল্লেখ্য এ মোবাইল ফোন দিয়ে আমি অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম। এরপর সবাই আমার মোবাইল ফোনে ফোন করতে থাকল। অনেক্ষণ রিং বাজার পর যখন রিসিভ হল তখন কোন কথা না এলেও বোঝা গেল মোবাইল ফোনটি কোন যানবাহনের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যেই খবর এল যে, আমার মত একই অবস্থা আরও চার জনের। এরপর আমাদের পাঁচ জনের ফোনই একে একে বন্ধ পাওয়া গেল।এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রথমে তাঁরা এর দায় ভার অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের উপরে দিতে থাকেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার একজন পদস্থ কর্মকর্তা। তিনি তদন্ত শুরু করতেই বেরিয়ে আসল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরুর পর থেকেই প্রায় প্রতিটি বিবাহ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন, গহনা, টাকা এবং মূল্যবান জিনিস হারানোর অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ-কারীদের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এবং শীর্ষস্থানীয় একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সভাপতি ও রয়েছেন। এমনকি দুজন পকেটমার ধরা পরার ঘটানাও এখানে ঘটেছে। এ ব্যাপারে একটি জিডি ও করা রয়েছে সাবেক উত্তরা থানায় যা বর্তমানে উত্তরা-পূর্ব থানা নামে পরিচিত। অথচ আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এখানে কোন সিসি ক্যামেরা নেই এবং অতিথিদের সতর্ক করার মত কোন পোষ্টারও নেই। এ অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদের পর ধারনা করা হচ্ছে যে, এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে পেশাদার পকেটমার ও ছিনতাইকারীদেরকে বিয়ে সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে প্রবেশের সুযোগ করে দেয় কারন বিয়ের অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথিকে চেনা কষ্টকর এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র ছাড়া ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়টি শিষ্টাচার বহির্ভূত। প্রতিষ্ঠানের মহা-ব্যবস্থাপক ইমাম হোসেন লিটন সেখানে উপস্থিত না থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁকে এ বিষয়ে উক্ত গোয়েন্দা সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তাই জনগনের কাছে অনুরোধ, আপনারা যত নামী-দামি কমিউনিটি সেন্টার অথবা রেস্টুরেন্টেই যান না কেন, নিজের মূল্যবান জিনিস নিজ দায়িত্বে নিরাপদে রাখবেন।


লেখক- যন্ত্র প্রকৌশলী এবং একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক