আজ জুম্মার পরে জামাত শিবির এবং সমমনা ইসলামী নামধারী কয়েকটি দল যে তান্ডব চালিয়েছে এবং যা মিডিয়ার প্রচারে দেখলাম জানলাম সেখানে চারটি বিশেষ ক্ষেত্রে তাদের নিন্দনীয় আক্রোশ একটু বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়…এক. মসজিদের ভেতর কার্পেটে আগুন দেয়া এবং ভেতর থেকে ককটেল ছুড়ে মারা, দুই. জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা, তিন. শহীদ মিনারে আক্রমন, চার. শহীদ মিনার হতে বর্ণমালা ভেঙে ফেলা।
বিডিনিউজ২৪ এর একটি নিউজ থেকে জানা যাচ্ছে 'সিলেটে শহীদ মিনারে 'জামায়াতের' হামলা' র খবর।
কালের কণ্ঠের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান রণক্ষেত্র শীর্ষক খবর হতে সারাদেশের তান্ডবের কিছু বর্ননা পাওয়া যাচ্ছে যেখানে লেখা হয়েছে,
সিলেট নগরীতে আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর জঙ্গি মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় ইসলামী সংগঠনের কর্মীরা। … … মহানগর পুলিশের উপকমিশনার এজাজ আহমেদ জানান, পৌনে ৩টার দিকে মিছিলকারীরা শহীদ মিনারে ঢুকে পড়ে এবং ২১ শে ফেব্রুয়ারির দিন দেওয়া ফুলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
যারা যে গুষ্ঠি এই স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করেও বাংলা ভাষার প্রাণের বর্ণ যা ভাষা শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনারে লটকানো ছিল-ভেঙেছে প্রবল আক্রোশে (মিডিয়ার বদৌলতে সে আক্রোশ অবলোকন করা সম্ভব হয়েছে), শহীদ মিনারে আঘাত করেছে, ফুলে আগুন দিয়েছে… বাংলা ভাষায় এরা কথা কেনো বলে -সে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, কেনো সেই এদের পাকি গুরুদের উর্দুতে কথা বলে না, তবে তো তাদের মুনাফেকি রূপটা লুকায়িত থাকতো না অন্তত, চেনা যেতো, কেমন অদ্ভুত না যে ভাষায় কথা বলে সে ভাষার প্রতি কোন শ্রদ্ধা বা ভালোবাসা এরা প্রদর্শন তো করতে পারে না বরং এই তান্ডব লীলা চালায়!
একুত্তুর টিভিতে দেখলাম চাঁদপুরে গনজাগরণ মঞ্চে আক্রমন চালিয়ে জাতীয় পতাকা টেনে ছিঁড়ে নামাচ্ছে এ একই গোষ্টির এক দল। তার মানে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতিও তাদের কোন সম্মান নেই…জাতীয় পতাকার প্রতি যারা সম্মান জানাতে পারে না তারা দেশের স্বাধীনতা মানে কিনা সন্দেহ হয়!
চারটি লক্ষ্যনীয় বিষয়ের প্রথমটিতে আসি এবার । ইসলাম মানের শান্তির ধর্ম কে সামনে রেখে স্পর্শ কাতর স্থান, ইসলামের পবিত্র স্থান মসজিদের ভেতর থেকে তারা তান্ডবের পদক্ষেপে শুরু করেছে, মসজিদের ভেতর কার্পেটে আগুন দিয়েছে…তার মানে ধর্মটিও তাদের কাছে একটি ঢাল, ধর্মভীরু এবং ধর্ম পরায়ণ সাধরণ বা অতি সাধারণ মানুষকে বিভ্রন্ত করার জন্য ইসলাম ধর্ম এই গোষ্ঠির পরম অস্ত্র, কিন্তু মসজিদের সম্মানও এদের দিতে দেখা যায় না, এরা আসলে এদের অগণিত সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগাতে চায় কেবল, মসজিদে আশ্রয় নিয়ে দেখাতে যায় আইন শৃংখলা বাহিনী তারা অবস্থান নেয়ার পরেও একশনে নেমেছে..তারা সরকারকে ও হেয় করতে যেন ধর্মকে ব্যবহার করতে চায়।
বাংলনিউজ২৪.কম এর 'ব্লগ-ইন্টারনেট বুঝি না, হুজুরের ডাকে যাচ্ছি' শীর্ষক খবর থেকে একজন তান্ডবে অংশগ্রহণকারীর বক্তব্যে স্পষ্ট জানা গেলো-
বায়তুল মোকাররম এলাকায় আসার জন্য ওই বাসে কৌতুহল বশতঃ কোথায় যাচ্ছেন, জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে জানা যায়, বায়তুল মোকাররম। কেন- প্রশ্ন করলে জানায়, 'ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগে আন্দোলন চলছে। আর রাজিব নামের যে মারা গেছে সে মহানবী ও কোরআন সম্পর্কে অবমাননাকর কথা লিখেছে।
'শুনেছি ব্লগ আর ইন্টারনেটে কি সব লেখা হয়েছে' আপনি দেখেছেন- হান্নানের উত্তর 'ব্লগ-ইন্টারনেট বুঝি না, হুজুর ডেকেছেন তাই যাচ্ছি।' কোন হুজুর ডেকেছে- প্রশ্ন করলে তিনি হুজুরের নাম বলেন নি। উল্টো অর্ধশিক্ষিত হান্নানের সঙ্গে থাকা অপর তিন জন রেজাউল, আলম এবং শহিদ তর্ক শুরু করে দেয় বাসের অন্য যাত্রীদের সঙ্গে।
উপরের খবর থেকে স্পষ্ট যে অন্ধ অনুসরণের পথেও রয়ছে এদের একটা বড় গোষ্টী।
ইসলামকে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়াতেও এরা কম দক্ষ না। এরা আমাদের আশেপাশেই বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সরকার যদি এরপরও এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আজকের এইসব নিদর্শণ বলে দিচ্ছে এরা কত ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে কারন এরা ধর্মকে হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে, এরা দেশের পতাকার সম্মান দেয় না , বাংলা ভাষাকে ভালবাসে না, সম্মান দেয়না ভাষা শহীদদের।