কাজের বেলায় আমরা পুলিশ

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 15 March 2015, 07:30 PM
Updated : 15 March 2015, 07:30 PM

কাজের বেলায় পুলিশ । পোষাকও দেখতে পুলিশের মতো । টাইটেলও পুলিশ । তবে, পুলিশ নয়, গ্রাম পুলিশ। বেতন ভাতায় বৈষম্য থাকলেও এদের কাজ প্রায় একটাই।পরিশ্রম চকিদার-দফাদারদেরই বেশী। বাংলাদেশে এখন ৫০ হাজারেরও অধিক গ্রাম পুলিশ বছরের পর বছর ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।সরকার থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি কেউ এদের দিকে সুদৃষ্টিতে তাকায় না । কেউ শোনে না এদের দুঃখের কথা। ময়মনসিংহের গ্রাম পুলিশদের দেখলেই সারা দেশের করুণ চিত্র ফুটে ওঠে। দশটি ইউনিয়নে এদের সংখ্যা শতাধিক । ১ থেকে শুরু করে ৫ বছর পর্যন্ত এদের বেতন-ভাতা বকেয়া। বোনাসও পায়না তারা। এদের বেতনও খুব একটা নয় । টিম লিডার বা দফাদার ১ হাজার ৫০টাকা । সৈনিক বা মহল্লাদার ৮শ"৫০ টাকা। পরিবারের বাজার-সদাই , কাপড়-চোপড়, চিকিৎসা, সন্তানের লেখাপড়া প্রভৃতি ব্যয় নির্বাহ করতে হয় এ বেতন থেকেই। অপরদিকে সপ্তাহের প্রতি বুধবার ২ থেকে ১০ মাইল পর্যন্ত রাস্তা পায়ে হেটে অথবা অন্য যে কোন উপায়ে থানা কার্যালয়ে হাজিরা দেয়া বাধ্যতামূলক। সরকারীভাবে মুসলমান চকিদারদের ২ ঈদ এবং হিন্দুদের দুর্গাপূজায় সামান্য বোনাস দেয়ার বিধান থাকলেও তারা তা পাচ্ছে না ।

গ্রাম পুলিশ সোহান, রব্বানী, জগন্নাথ,সজল জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ৫০ ভাগ এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৫০ ভাগ বেতন পরিশোধের সরকারী নির্দেশ থাকলেও চেয়ারম্যানরা এই নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে চলেছেন । উপরন্তু পান থেকে চুন খসলেই দিতে হয় নানা কৈফিয়ত এমনকি হুমকি- ধমকি খেতে হয় চকিদার দফাদারদের । অন্যদিকে অপরাধিরাও এদেও শত্র", কারন অপরাধিরা জানে যে, এরাই খবর দিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করিয়ে থাকে। নানা রোগ ব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে বেতন না পেয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন এমন চকিদার দফাদারের সংখ্যাও কম নয় । তারা জানান, সরকারের অধিনস্থ আমরা দেশ গড়ার কাজে অন্যান্য বাহিনীর মত সক্রিয় অশংগ্রহন করে থাকি। স্থানীয় আইন শৃংখলা রক্ষা তথা চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস দমন, চোরা চালান রোধ, সমাজ বিরোধী কার্যকলাপছাড়াও উন্নয়ন কর্মকান্ডে সার্বিক সহযোগীতার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। শুধু বেচে থাকার তাগিদে দু বেলা দু মুঠো অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থার লক্ষ্যে তারা সরকারের নিকট দাবী জানান।