ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা শহরে ৪ টি বাজারে ১২শ' জন পণ্য সামগ্রী বিক্রেতার মধ্যে একমাত্র নারী সুফিয়া খাতুন (২৬) । দরিচারআনি বাজারে সারাদিন শাক সবজি বিক্রি করে কোন রকমে চলে যায় তার সংসার। কর্মচাঞ্চল্যে সদাব্যস্ত সুফিয়া ভুলে থাকে না পাওয়ায় কষ্ট।
জন্মের পর পরই গত হয় বড়গ্রাম ইউনিয়নের রওয়ারচর গ্রামের বাসিন্দা বাবা শাহাদ আলী আর মা চিনু বেগম। এরপর নানী আমেনা বেগম এর বাড়িতে বেড়ে ওঠা। সুফিয়ার ১২ বছর বয়স হলে নানীর মৃত্যুতে কপাল ভাঙ্গে।
সব হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ডান চোখটি নষ্ট হয়ে যায় । জীবিকার তাগিদে মানুষের বাসা বাড়িতে ঝি এর কাজ বেছে নেয়। এ পেশায় ৬ বছর। এই ৬বছরে বাসা বাড়ির মালিক ও তাদের আত্নীয় স্বজনের কুদৃষ্টির কবল থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মুক্তাগাছা শহরে পদার্পন ঘটে সুফিয়ার। দরিচার আনি বাজারের বাসিন্দা তাছেন আলীর বাসায় আশ্রয় নেয় সে । এরপর ঐ বাসার ছোট বাচ্চাদের লালন পালন করতে থাকে । বাড়ির মালিক খুশি হয়ে নগদ ৫শ' টাকা তুলে দেয় সুফিয়ার হাতে।
৯ বছর আগে এই ৫শ' টাকা নিয়ে দরিচারআনি বাজারের একটি ভিটিতে শাক সবজির দোকান দেয় সে। ৪ বছর আগে জমানো টাকা খরচ করে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে । বিয়ের পর স্বামী টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে । জুয়াড়ি স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বিয়ের ৬ মাসেই সংসার ভাঙ্গে তার।
প্রতিদিন গড়ে ২শ' থেকে ৩শ' টাকা আয় হয় সুফিয়ার। সুফিয়া জানায়, ব্যবসা আর কর্ম ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে ভূলে থাকার চেষ্টা করি হারানোর ব্যথা।