ময়মনসিংহে খরগোশ

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 23 Nov 2015, 08:12 AM
Updated : 23 Nov 2015, 08:12 AM


ময়মনসিংহে খরগোশ।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খরগোশ পালন দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। খরগোশ র‌্যাবিট ও হেয়ার এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত। তবে খামার ভিত্তিতে র‌্যাপিট পালন সহজ ও লাভজনক। মিশর, সুদান , লিবিয়া, আলজিরিয়া , পোল্যান্ড ,রাশিয়া, কোরিয়া ,জাপান ও চীনে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশের খামার রয়েছে। দেশে খরগোশের মাংস অভিজাত শ্রেণীর প্রিয় খাবার।


খরগোশ বা শশক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বর্গ Lagomorpha-এর গোত্র Leporidae-এর সদস্য প্রাণীদের সাধারণ নাম। এই গোত্রটিতে প্রায় ৫২টি প্রজাতির শশক ও খরগোশ অন্তর্ভুক্ত। এই প্রাণীর সবাই প্রধানত তৃণভূমি এলাকার বাসিন্দা।
শশক প্রায় সবাই তৃণভূমি এলাকায় বসবাস করে থাকে। তীব্র ঠাণ্ডা এলাকা থেকে অতি উষ্ণ এলাকা পর্যন্ত সর্বত্রই এদের বিস্তৃতি রয়েছে। অবশ্য কেবল মাত্র কুমেরু অঞ্চলে এদের দেখা যায় না। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং আরও কয়েকটি দেশে এরা স্থানীয় বাসিন্দা নয়। মানুষের মাধ্যমেই সে দেশে এদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং সেখানে এরা ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। পূর্ব গোলার্ধে এদের প্রজাতি সংখ্যা ২৮, পশ্চিম গোলার্ধে ২৪। অধিকাংশই Lepus এবং Silvilagus গণের সদস্য।
শশক জাতীয় প্রাণীদের লেজ খাটো, কান লম্বা এবং পিছনের পা লম্বাটে। এরা সামাজিক প্রাণী। অবশ্য খরগোশ অতটা সামাজিক নয়।

বাংলাদেশে ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথম খরগোশ পালন শুরু হয় মুক্তাগাছার লক্ষীখোলা এলাকায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড.আবিদুর রেজার তত্বাবধানে এবং জেএনডিপির ব্যবস্থাপনায় খরগোশ পালন জনপ্রিয়তা লাভ করে। মুক্তাগাছার বিভিন্ন স্থানে অনেক দরিদ্র পরিবার খরগোশ পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখানকার শতাধিক পরিবারের মহিলারাই খরগোশ পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কাঠগড়া গ্রামের এক খরগোশ চাষী হাফিজ জানান, গৃহপালিত হাঁস-মুরগী,ছাগল-ভেরার মত এগুলো অন্যের ক্ষেতের ফসল বিনষ্ট করে না। ঘরের এক কোণে খাঁচায় রেখেই এদের লালন-পালন করা যায়। খরগোশ চাষীরা আরো জানান, নামমাত্র খরচে বাঁশের ঝাকায় খরগোশ পালন করা যায়। তৃণভোজী খরগোশ ঘাষ ছাড়াও খরকুটা , গম, গাজর, মূলা মিষ্টি , আলু ছোলা , সয়াবিন ও বার্লি জাতীয় খাবার পছন্দ করে। একটি খরগোশ প্রতিদিন মাত্র ১৫০ গ্রাম খাবার খায়। ৬মাস বয়সে বাচাচা দেয়একসাথে কমপক্ষে ২০ টি। ৩ মাসে খরগোশের ওজন হয় ৩ কেজি।খরগোশের মাংস খুবই সু-স্বাদু এমং হালাল। ঢাকার পাইকাররা স্থানীয় বাজার থেকে খরগোশ কিনে নিয়ে যায়। চাষীরা অভিযোগ করেন, পশুপালন বিভাগের অসহযোগীতায় প্রতি বছর নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বহু খরগোশ মারা যায়। এজন্য তাদের লোকসান গুনতে হয়। উপজেলা পশুসম্পদ অফিস জানায়, খরগোশের রোগব্যাধী ও চিকিৎসায় আমরা যথাসাধ্য সহযোগীতা দিয়ে থাকি।

ছবি ক্যাপশণ , মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ): বাঁশের ঝাকায় পালন (১) বাজারে বিক্রি করতে আনা খরগোশ (২)