ময়মনসিংহে ট্রেনের ছাঁদে যাত্রী, দায় কার?

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 13 July 2016, 02:21 AM
Updated : 13 July 2016, 02:21 AM

ময়মনসিংহে শহরের রেলওয়ে জংশনের উপর দিয়ে চলাচলরত সকল ট্রেনের ছাঁদেই দেখা গেছে বৃষ্টিতে ভিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের চলাচল করতে। এ চিত্র প্রায় প্রতিদিনের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনগুলির ভেতরে স্বাভাবিক অবস্থা, তারপরও ছাঁদে অসংখ্য যাত্রী। সূত্রের দাবী, ট্রেনের ছাঁদে ওঠার প্রবণতা অধিকাংশের। ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর পর থেকে রেলের ছাঁদে যাত্রী পরিবহন প্রবণতা আরো বেড়ে গেছে। ঈদের কারণে ছাঁদে যাত্রীর সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে ঢাকা থেকে থেকে ছেড়ে আসা এবং ময়মনসিংহ থেকে জামালপুর, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন রোটে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে বৃষ্টির মাঝেও ভেতরের চাইতে বাইরেই যাত্রীদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। বিপরীতে বেশির ভাগ ট্রেনের ভেতরে যাত্রী ছিল স্বভাবিক। তবে ট্রেনের ছাদে যাত্রী সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো।

দিনব্যাপী চলাচলরত ট্রেনগুলির অধিকাংশ কোচের ভিতরে যাত্রী ছিল স্বাভাবিক। তবে ছাঁদে যাত্রীর সংখ্যা বেশি, তুলনামূলক অনেক বেশি। ছাঁদে চলাচলকারী যাত্রীদের বক্তব্য হলো, ভিতরে টিটিরা টিকিট চেক করেন। ছাঁদে টিটিরা টিটিক চেক করেন না। এ কারণেই কোনো যাত্রীই বেশি ভাড়া দিয়ে কোচের ভিতরে যেতে চাচ্ছেন না বলে একাধিক যাত্রীর দাবী।

ময়মনসিংহ রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ট্রেনের ছাঁদে যাত্রী পরিবহন প্রবণতা আছে এটা সত্য, কিন্তু ভাড়া বাড়ানোর ফলে ছাদে যাত্রী ওঠার প্রবণতা বেশি এটা ঠিক নয়। এজন্য তিনি ঈদকে দায়ী করেন।

ট্রেনের একাধিক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত কর্মকর্তা জানান, শুধু ঈদ উপলক্ষ নয়, কিছু যাত্রী আছেন যারা, জীবনের ঝুঁকি জানার পরও ছাঁদে চলাচল করেন।

এটা রোধ করা সম্ভব নয় বলে তারা আরো জানান, রেলওয়ের নেই পর্যাপ্ত জনবল। তারপরও স্টেশনে কাজ করছে নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তারা ছাঁদে উঠতে বাঁধা দিচ্ছেন, তারপরও লুকিয়ে উঠে পড়ছে অনেক যাত্রী।

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ঢাকাগামী বলাকা কমিউটার (৫০নং ডাউন) চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে হযরত আলী (২০) নামে যুবকের হাত পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উপজেলার কাউরাট নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত যুবককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হযরত আলী ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সুতারপাড়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র। সে রাজধানী ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো।

ঘটনার দিন ওই যুবক ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে পূর্বধলা স্টেশন থেকে বলাকা ট্রেনের ছাদে উঠেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ট্রেনটি শ্যামগঞ্জ স্টেশন ছাড়ার পর গৌরীপুর উপজেলার কাউরাট এলাকায় আসতেই ট্রেনের ছাদে বসা হযরত আলী হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে। এসময় গাছের ডালে ধাক্কা খেয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে তার ডান হাত ও বাম পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

যুবকটির মত হাত পা বিচ্ছিন্নই নয় ছাঁদের যাত্রী হওয়ায় হরহামেশাই ঘটছে আহত নিহত হওয়ার মত ঘটনা। তারপরও ট্রেনের ছাঁদে যাত্রী হচ্ছেন মানুষ। ছাঁদে চলাচলকারী যাত্রীদের সচেতন করা হলে অনেকাংশে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব এমন দাবী অভিজ্ঞ মহলের।