ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বেতাগৈর ইউনিয়নের চরমখামটকালী গ্রামের সিদ্দিক সিকদার ও নুরুল ইসলাম আসন্ন ঈদুল আযহা -কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে গরু লালন-পালন করছিলেন। কিন্তু গত সোমবার রাতে চোরেরা তাদের দুটি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে। এ অবস্থায় ওই দুই কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে।
শুধু সিদ্দিক সিকদার ও নুরুল ইসলামই নন, গত ১ সপ্তাহে বীরকামটকালী গ্রামে ১টি ষাড়, চরমখামটকালী গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ২টি গরু, খড়িয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ১টি ষাড়, সিদ্দিক সিকদারের ১টি গাভী, দুলাল মিয়ার ১টি গাভী, হযরত আলীর দুধের একটি গাভী বাছুর, রাজগাতী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের শহিদ মিয়ার ৩টি গরু ও একই গ্রামের আব্দুল বারেকের ৩টি গরু চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ইদানীং সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরু চোরচক্র। সংঘবদ্ধ চোরের দল রাতে গোয়ালে ঢুকে গরু নিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। কীভাবে এ চক্র নিঃশব্দে গরুগুলো বের করে নিচ্ছে সেও এক রহস্য। এভাবে একের পর এক গরু চুরির ঘটনায় ঈদ উপলক্ষে মৌসুমি গরু ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। হয়রানির ভয়ে তাঁরা থানায় মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পর্যন্ত করেন না।
ঐসব গ্রামে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষকরা বলেন, এলাকার বাইরের শক্তিশালী একটি চক্র এসব চুরির সঙ্গে জড়িত। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে স্থানীয় কিছু মানুষ।
গ্রামের গৃহিনীরা বলেন, একটি গরুর পেছনে অনেক খাটুনি। ধারদেনা করে অতিকষ্টে সংসার চালাতে হয়। এ অবস্থায় চোরেরা গরু নিয়ে গেলে গরিব মানুষের যে কী দশা হয়, সেটা যার যায় সে ছাড়া অন্য কেউ বুঝবে না।
কৃষকরা বলেন, গরু চুরির পর থানার পুলিশকে বললে আরও বিপদ। তখন দেখা যাবে, পুলিশ তো কিছু করবেই না, চোরেরা বাদবাকি গরুও নিয়ে যাবে। অন্যভাবেও হয়রানি করবে।
এদিকে নান্দাইলে গরু চুরির অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ । সোমবার ভোররাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মুন্তু মিয়া (৫৫), পিতা মৃত ফজর আলী, খোকন মিয়া (৩৫), পিতাঃ ফাইজ উদ্দীন, উভয় সাংঃ বড়াইল, নান্দাইল। সেলিম (২৫), আলীম উদ্দীন (২২), উভয় পিতাঃ নাজিম উদ্দীন, উভয় গ্রাম পাছপুরুরা, উপজেলা, তাড়াইল, জেলা, কিশোরগঞ্জ।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডাংরি এলাকায় টমটম বোঝাই করে ২টি গরু পাচারকালে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গরু দুটি উদ্ধার এবং সংশ্লিষ্ট অভিযোগে ঐ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
নান্দাইল মডেল থানার এসআই নুর ইসলাম জানান,গরুর মালিক আব্দুল কাদির বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের আসামী করে চুরির অভিযোগ করেছেন।