ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্রের তীরে মানুষের ঢল

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 14 Sept 2016, 06:54 AM
Updated : 14 Sept 2016, 06:54 AM

ময়মনসিংহে শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্রের তীরে ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে মানুষের ঢল। মঙ্গলবার ঈদের দিন বিকাল থেকে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে নদের তীর ।


জেলা শহরসহ আশপাশের উপজেলা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিনোদনপ্রেমী হাজারো মানুষ ভিড় করছেন, শশী লজ, আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্ক ও সংগ্রহশালা, স্বাধীনতা স্তম্ভ,ময়মনসিংহ যাদুঘর, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিপিন পার্ক, সাহেব কোয়াটার পার্ক ,বিজিবি পার্ক এলাকায়।


ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থান ময়মনসিংহ শহরের বিরাট একটি অংশ। নদের তীর জুড়ে থাকা শহর-রাকারী বাঁধের বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে ময়মনসিংহ পার্ক যা শহরবাসীর মূল বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি। ঈদের ছুটিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষ, শহরবাসীসহ ভ্রমন পিপাসুদের নদের সৌন্দর্য্য দেখতে ভিড়।

ঈদের দিন বিকেলে পুরো বাধ এলাকায় নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের ভিড় ছিলো চোখে পাড়ার মতো। দর্শনার্থীদের বাড়তি বিনোদন হিসেবে নৌকায় নদ ভ্রমনের ব্যবস্থা আছে এখানে। দর্শনার্থীরা নদের একপাশের শহর আর একপাশে গ্রামীন জনপদের ছোঁয়া পেয়ে যাচ্ছেন সহজে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের দিন মঙ্গলবার ও আজ বুধবার ২ দিন ধরেই ওইসব এলাকায় প্রতিদিন বহু মানুষেল পদচারণায় মুখরিত। সেখানে মানুষের ভিড় আর মুখের হাসি বলে দেয় প্রাকৃতিক সৌন্দয্য কতোটা মন কেড়েছে তাদের। নদের পানির কলকলানি শব্দ ধরে ওপারে তাকালেই সবুজের সমারোহ, সবুজের ওপর দিগন্ত বিস্তৃত সাদা কাশফুল ও নীলের ছোঁয়া।

জানা যায়, তিব্বতের ইয়ারলুং সাংপো নদী দক্ষিণ তিব্বত থেকে হিমালয় হয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে দিহাং নাম ধারণ করে আসাম হয়ে বাংলাদেশে আসতে আসতে ব্রহ্মপুত্র নদ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ তবে ক্ষীণকায় এই নদ চোখ জুড়ায় মানুষের প্রথম দর্শনেই। নদের তীরে প্রচুর কাশবন, বৃক্ষরাজি আর সবুজ ঘাসে ছাওয়া মাঠ। নদের তীরেই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালার অবস্থান।

১৯৭৫ সালের ১৫ এপ্রিল তেলচিত্র ও রেখাচিত্রসহ শিল্পীর মোট ৭০টি চিত্রকর্ম নিয়ে এই সংগ্রহশালা যাত্রা শুরু করে। তদানীন্তন অবিভক্ত ভারত তথা বাংলার বৃহত্তর ময়মনসিংহেই ১৯১৪ সালে শিল্পীর জন্ম। ব্রহ্মপুত্র ছিল তাঁর প্রিয় নদ। যে নদের তীরে বসে তিনি প্রচুর ছবি এঁকেছেন। ১৯২৬ কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন ময়মনসিংহের মহারাজা শশীকান্তের আমন্ত্রণে শশীলজে। বিশ্বকবি অবস্থান করেছিলেন, নদের তীরে আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলে ।