ময়মনসিংহে রস সংগ্রহে খেজুর গাছে ব্যস্ত গাছি

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 27 Oct 2016, 01:20 AM
Updated : 27 Oct 2016, 01:20 AM

ময়মনসিংহে এবার শীত বিলম্বে এলেও জমিনে রোদ্দুরের গায়ে আধো আধো সোনালি রঙ ধরেছে। বিগত বছরগুলিতে এ মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করতেন গাছিরা । দেরিতে হলেও ভোরের ঘুম ভাঙা সকাল এখন কুয়াশায় মাখামাখি।

খেজুরের গাছগুলিতে হাঁড়ি ঝুলানো শুরু করেছেন গাছিরা। যদিও তারা বলছেন, শিত বেশি পড়ছে না বলে রসও হাঁড়িতে খুব একটা উঠছে না। আর রসের হাঁড়ি না ভড়া পর্যন্ত চলছে তাদের অপেক্ষার পালা । ইটভাটায় জ্বালানির দাপটে খেজুর গাছ কেটে অনেকটাই সাবাড় হয়ে গেলেও যা আছে, ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষকে তা খুশি করার পক্ষে কম নয়।

জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার সাহেব আলী জানান, অক্টোবর এই সময়ের মধ্যে গাছিরা একেক জন অন্তত দেড়শ থকে দুইশ খেজুর গাছ কেটে ফেলতেন। অথচ, এ বছর ১০-১৫টির বেশি গাছ কাটতে পারেননি। তিনি জানান, একটা খেজুর গাছ তিনবার কাটার পরে তাতে নলি লাগিয়ে রসের জন্য ভাঁড় পাতা হয়। একটা খেজুর গাছ থেকে দিনে দু'বার রস মেলে।

ভোরের রসকে মিষ্টি এবং বিকালের রসকে তারি বলে। মাঘ মাস থেকে রস কমতে শুরু করে। ওই সময়ে রসের ঘনত্ব বাড়ে। ময়মনসিংহ জেলা বাংলাদেশের কৃষিপ্রধান অঞ্চল হিসাবে সমাদৃত। জেলার ময়মনসিংহ সদর, মুক্তাগাছা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জে, নান্দাইল, হালুয়াঘাট, ফুলপুর, ফুলবাড়ীয়া, ত্রিশাল, তারাকান্দা, গফরগাঁও ও ভালুকা উপজেলায় কয়েক লাখ খেজুর গাছ রয়েছে।

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, এখনও বহু গাছ ঝাড়া হয়নি। স্থানীয়রা জানান, অতীতে বহু খেজুর গাছ ছিল। ইটভাটায় জ্বালনি হিসাবে অনেক গাছ বিক্রি করা হয়েছে । রস মৌসুমে প্রতিটি খেজুর গাছ বিক্রি হয় ২/৩শ' টাকায়। গাছ বাইরে থেকে কাঠ ব্যবসায়ীরা গ্রামে এসে গাছ কিনে নিয়ে যান। মূলত ইট ভাটার জ্বালানির জন্য খেজুর গাছের চাহিদা রয়েছে। যদিও দাম অন্য গাছের তুলনায় কম।

খেজুর গাছের মালিকরা জানান, এখনও শীত না পড়ায় রস তেমন ভাবে হচ্ছে না। মৌসুমে একটি খেজুর গাছ থেকে ১৫-২০ কেজি রস পাওয়া যায়। সপ্তাহে একদিন গাছ কাটা হলে তিন দিন রস পাওয়া যায়। কিন্তু এ বার একদিনের বেশি রস হচ্ছে না। পরিমাণেও তা ৫ কেজির বেশি নয়। শীত না পড়ায় রসে স্বাদ আসেনি। শীতের সকালে ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে খেজুর রস খাওয়ার মজাই আলাদা।