ময়মনসিংহে কৃত্রিম প্রজনন টেংরামাছ উৎপাদনে ফুলপুরে সফলতা

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 19 Dec 2016, 06:57 PM
Updated : 19 Dec 2016, 06:57 PM

ময়মনসিংহের ফুলপুরে ব্যাক্তিমালিকানাধীন "রুপালী হ্যাচারি এন্ড ফিশারিজে ২০১৫ সনের মার্চ-এপ্রিল মাসে সর্বপ্রথম টেংরা(Mystus vittatus) মাছের কৃত্রিম প্রজনন করে সফলতা অর্জন করেন।


সে সময় হ্যাচারি মালিক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি তার হ্যাচারিতে ৫ লাখ পোনা উৎপাদন করেন। তন্মধ্যে ৩ লাখ বিক্রি করেন এবং অবশিষ্ট ২ লাখ নিজের হ্যাচারিতে চাষাবাদ করেন।

বর্তমান ২০১৬ সনে তিনি মার্চ হতে জুলাই পর্যন্ত টেংরা মাছের কৃত্রিম প্রজনন করে রেণু ও পোনা উৎপাদন করে ৪০কেজি রেণু ও ১৮ লাখ পোনা বিক্রী করেন এবং আরও প্রায় ৪ লাখ পোনা তাঁর হ্যাচারিতে আছে বলে তিনি জানান।


য়মনসিংহ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গত ২৬ অক্টোবর ঐহ্যাচারি পরিদর্শনের সময় সিস্টার্নে অসংখ্য পোনা দেখতে পান। তিনি জানান, হ্যাচারি মালিক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ২০১০ সনে শিং মাছের পোনা উৎপাদন করে স্বর্ণ পদক পুরষ্কার লাভ করেন।

দেশে যখন দিন দিন দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেসময় কৃত্রিম উপায়ে বিলুপ্তপ্রায় টেংরা মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জন করে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা দেশে প্রথমবারের মত এ সফলতা অর্জন করেন।


বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় ৫৬টি ছোট মাছের মধ্যে টেংরা অন্যতম প্রজাতি। নানাকারণে প্রাকৃতিক প্রজনন ব্যাহত হয় মাছটি। তন্মধ্যে কীটনাশক প্রয়োগ অন্যতম ।এ মাছ রক্ষায় বিএফআরআই ২০১৪ সন থেকে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনের উপর গবেষণা পরিচালিত করে ।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খন্দকার রশীদুল হাসান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শওকত আহমেদ ও মালিহা হোসেন মৌ এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। গবেষণা করে তারা একটি মাছ ২০-২২ গ্রাম থেকে ৪০-৪৫ হাজার পোনা উৎপাদিত করতে সক্ষম হন।


এরপর তারা ঐ পোনা চাষিদের মাঝে বিতরণ করেন। ১৮ আগস্ট উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ঢাকাস্থ একটি কর্মশালায় উপস্থাপন করেন । সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিব । মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদের নিকট প্রযুক্তিটি তুলে দেন বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ। সেসময় তিনি বলেন, টেংরা মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন বাংলাদেশে একটি নতুন সংযোজন।