সংসদ নাকি সমস্ত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দু । নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ওখানে যান আর দেশের জন্য যাবতীয় ভাল কিছু করার জন্য প্রানপাত করেন। একথা আজকে কজন বিশ্বাস করে । হউক না এনিয়ে একটা জরিপ , এর ফলাফল কি হবে এটা সবারই জানা । কত কর্ম ঘন্টা সেখানে স্তুতি, অপর পক্ষের বিষোদগারে বা আরও খারাপ ভাবে বললে গুষ্টি উদ্ধারে বা ইতিহাস খোঁজার নামে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে অন্যের চরিত্র হননে ব্যয় হয় , যদি হিসেব করা হয় তা হলে বোঝা যেত এটা কিসের কেন্দ্র বিন্দু। এটা এমনই গনতন্ত্রের সংসদ যেখানে বিরোধীদল উপস্থিত থাকে না বছরের পর বছর এবং আরও মজার বেপার সেটা নিয়ে সরকারি দলটিরও কোন মাথা ব্যথা থাকে না । তো এই সংসদ নিয়ে বা তার প্রতিনিধিদের নিয়ে কিছু বললে একজন নাগরিককে যদি ক্ষমা চাইতে হয় সেটা কিসের গনতন্ত্র ? এটা কি গনতন্ত্রের লেবাসে সংসদীয় স্বৈরাচার নয় ? সাঈদ স্যারকে যদি কোদালকে কোদাল বলার জন্য ক্ষমা চাইতে হয় বা নিদেন পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করতে হয় তাহলে এ লজ্জা আমাদের সবার ।
কাল রাতে একুশে টিভির একটা টক শোতে একজন সরকারি দলের এম পি বলছিলেন , কয়েকদিন আগে ঘূর্ণিঝড়ে ওনার এলাকায় ২২টি ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে , এ নিয়ে উনি চিন্তিত। উনি বললেন এটা অধ্যাপক সাঈদ বা কোন বুদ্ধিজীবী কিংবা কোন সুশীল এসে করে দেবে না । উনি হয়ত ভুলেই গেছেন যে এটা ওনার দায়িত্ব আর এ জন্যই উনি নির্বাচিত হয়েছেন। কেউ তার দায়িত্ব পালন করবে এটাই তো স্বাভাবিক এটার জন্য ওনাকে বাহবা দিতে হবে কেন।
সগোত্রের প্রতি পক্ষপাতিত্ব যে একটা বর্নবাদি দৃষ্টি ভঙ্গির প্রকাশ এটাও বা আমরা কজন বুঝি । একজন প্রায় রাজনীতিতে নির্বাসিত বিরোধী দলের বক্তা গতকাল একই টক শোতে বললেন রাজনিতিবিদরা ছিল বলেই দেশ টা স্বাধীন হয়েছে ।গন মানুষের সম্মিলিত প্রয়াসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর জন্য অবশ্য ওনাকে ক্ষমা চাইতে হবে না । কারন উনি তো আরেকটি বড় দল করেন এবং রাজনীতিবিদদের এই ইস্যুতে সরকারি দলের এম পি টি ওনার যমজ ভাই।
একজন মন্ত্রি বা এম পি এলাকায় রাস্তা বানান বা যে কোন উন্নয়নমূলক কাজ করেন না কেন ,উনি কি এটা নিজের পয়সা খরচ করে করেন যে ওনাকে আমাদের নমস্য করে রাখতে হবে ? জনগনের পয়সায় যাদের বেতন এবং প্রভুত সুযোগ সুবিধা চলে তাদেরই বা এত আস্ফালন কেন ? চোর বা ডাকাদের মত আচরণ করছেন বলায় যদি ওনাদের গায়ে লেগে থাকে , তাহলে ওনারা প্রমান করছেন না কেন যে এর কোনটিই ওনারা নন। মন্ত্রিদের বাৎসরিক বেক্তিগত সম্পত্তির হিসেব দেবার যে বিধানটি চালু রাখা হয়েছিল সেটাই বা বন্ধ হয়ে গেল কেন ? কাল একজন প্রতি মন্ত্রি বললেন এসব তদন্তের জন্য দুদক তো আছেই ।হ্যাঁ দুদক অবশ্যই আছে তবে সেটা এখন ওনাদের পকেটে।
হয়ত সাঈদ স্যার ঢালাও মন্তব্য করে ফেলেছেন এজন্য কিছুটা সৎ যারা তারা হয়ত মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। আমার অবাক লাগল যখন দেখলাম যারা মোটামুটি আপাদমস্তক ………… তারাও মায়াকান্না জুড়ে দিয়েছেন। এম পি , মন্ত্রিদের নিয়ে কিছু বলা যাবে না , বললে সংসদ অবমাননা ,রাষ্ট্র দ্রোহিতা হবে এসব কথা যারা বলেন তারা বর্ণবাদী বা রেসিস্ট মানসিকতা লালন করেন । এনারা আত্তসমালোচনা তো দুরের কথা ,অন্যের মুখে সমালোচনা শুনলে তাকে অপ্রমানিত করার বদলে তেড়ে আসেন । আর এদের পেছনে যদি আমরা প্রগতির গাড়িটি জুড়ে দিতে চাই তাহলে সেই গাড়িটি খাদে পড়বে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই ।