জীবনের কথামালা -১

এম এ জোবায়ের
Published : 19 May 2012, 09:39 AM
Updated : 19 May 2012, 09:39 AM

সিরিজ ব্লগিং হিসাবে প্রথমে আমার নজরে পড়ে ব্লগার সাহাদাত উদরাজীর ছোট ছোট কথামালা। বেশ ভাল লাগে উদারজীর এই ছোট ছোট কথামালাগুলো। পরে আরও অনেকের সিরিজ ব্লগ দেখেছি আর সে গুলো ভালোও লেগেছে। কুজোরও চিৎ হয়ে শুতে ইচ্ছা করে, আমারও সাধ হয়েছে সিরিজ ব্লগ লিখতে। শুরুতো করি তার পর দেখা যাবে।

আমার বয়স এখন ৬০। বাবা চাকুরীজীবি হবার কারনে জায়গা জায়গা ঘোরা, নানা মানুষের সাথে পরিচিতি এবং তাই জীবনের স্মৃতি একটু বেশী বলেই মনে হয়। জীবনের মজার মজার স্মৃতিগুলো আগে থেকেই সবার সথে শেয়ার করতে ইচ্ছা হত, লেখার অভ্যাস ছিলনা তাই মনের ভাব প্রকাশের কোন পথ ছিলনা। এখন ইমেইল আছে, ব্লগ আছে, আছে সোসাল নেটওয়ার্কিং, আরো অনেক কিছু আছে, নেই শুধু আমার লেখার মন আর অভ্যাস।

ফেসবুক, ব্লগ আমার বয়সীদের জন্য নয়। আমার বয়সের কাউকে এখানে দেখিনা। যাদের দেখি তাদের সংখা খুবই কম। আমরা (বুড়োরা) যে যেগাযোগের মাধ্যম হিসাবে এগুলো ব্যবহার করতে পারি সেটা কেউ মানতে চায় না। ফেসবুকে ঢুকলে চ্যাট স্ক্রীন পপ করে ছেলের মেসেজ পাই 'বাবা তুমি বুড়া মানুষ তুমি ফেসবুকে কি কর?' বিজনেস কার্ডে ইমেল আইডি দেখে মেয়ে বলে 'তোমার আবার ইমেইল আইডির কি দরকার?' তবুও জীবনের শেষ প্রান্তে এসে জীবনের মজার স্মৃতির কিছুটাও যদি সবার সাথে শেয়ার করতে পারি তাহলে ভালই লাগবে। ধন্যবাদ বিজ্ঞানকে বিশেষ করে কম্পিউটার বিজ্ঞানকে ইমেইল, সোসাল নেটওয়ার্কিং, ব্লগকে আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দেবার জন্য। তবে একটা কথা সত্য কম্পিউটার প্রযুক্তিতে আমারা অনেক অনেক পিছিয়ে। ২০০৫এ একটা কনফারেন্সে ভারতের মুম্বাই গিয়েছিলাম সেখানে দুজনকে পেয়েছিলাম যদের বয়স ৭৫ থেকে ৮০ হবে, কম্পুউটার প্রযুক্তিতে তাদের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান দেখে টাশ্‌কি খেয়েছি।

আমার জন্ম ১৯৫২ সালে বৃহত্তর ফরিদপুর/ বরিশালের কালকিনি, পাতারহাট অথবা মুলাদীতে, সঠিক জায়গাটা জানা নেই। ছাত্র জীবনে আমি খুব ঘর-বিমুখি ছিলাম তাই মা প্রাই বলতেন 'তুই ঘরে থাকবি কি ভাবে, তুই পেটে এসেছিস এক ষ্টেশনে, বড় হয়েছিস দুই তিন ষ্টেশনে আর জন্ম নিয়েছিস আর এক ষ্টেশনে'। বাবা চাকুরীজীবি হবার এই এক সুবিধা ছোটবেলা থেকেই ঘোরাঘুরির অভ্যাস হয়ে যায়। আমি একটা সুবিধা প্রায়ই নেই কালকিনি, পাতারহাট অথবা মুলাদীর কারও সাথে পরিচয় হলে তার বাড়ি যেখানে সে জায়গাকে আমার জন্মস্থান বলি, সে খুব খুশী হয় এবং তার কাছ থেকে একটু বিশেষ খাতিরও পাই।

আমি অসম্ভব অলস, লেখার ব্যপারে আলসেমী আরও কয়েকগুন বেশী আবার যদি কিবোর্ড দিয়ে বাংলায় লিখতে হয় তাহলে তো কথাই নেই। আলসেমীর কারনে ভুমিকা পর্ব দিয়েই আজকের পোস্ট শেষ করছি। আবার শীঘ্রই দেখা হবে।