কাছে থেকেও যেন ছিল দূরে…

আসাদ জামান
Published : 28 July 2016, 02:59 AM
Updated : 28 July 2016, 02:59 AM

হরেক রকমের মানুষ ওরা। সবাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। অবার পড়েও হরেক রকম বিভাগে। কেউ ভালবেসে ভর্তি হয়েছে রসায়নের মত রসহীন বিভাগে, রাজনীতি ভালবেসে কেউ আবার ভর্তি হয়েছে সরকার ও রাজনীতি বিভাগে, টাকা পয়সার প্রতি লোভ থেকে কেউ কেউ অর্থনীতি কিংবা বাণিজ্য অনুষদের নানা বিভাগে নিজের জায়গা পোক্ত করেছে। এর মধ্যে 'মাটিই নাকি সকল সম্পদের ভান্ডার' এমন যুক্তিতে মাটি খোঁড়াখুড়ি'র বিভাগ নামে খ্যাত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নিতেও ভুল করে করে নি আরিফুল ইসলাম, জুবায়ের, লতা, রত্না কিংবা জাকিয়ার মত শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনই নাকি 'দেশের সব' এই বলে নিজ বিভাগ লোক প্রশাসনের কথা জানান দেয় তনুজা, মাসুম, তানভীর ও আজীমরা। অন্যদিকে দার্শনিক কিংবা নৃ-বৈজ্ঞানিকদের দাপটও ছিল দেখার মত।

আর হ্যাঁ, সবাই হরেক রকম বিভাগে পড়লেও সবার নাঁড়ি যেন একই সুতোই গাঁথা। একই জেলার আলো বাতাসেই সবার বেড়ে ওঠা। সেটি হল মওলানা ভাসানী ও কবি ইসমাঈল হোসেন সিরাজীর জন্মস্থান ও সাফল্যময় এলাকা 'সিরাজগঞ্জ জেলা'য়। সবাই সবাইকে চিনত না। ছিল না তেমন কোন পরিচয়। এরই মধ্যে ডাক আসে "সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি"র এক চড়–ইভাতি অনুষ্ঠানের। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেনে ও অন্যদের প্রচেষ্টায় হয়ে যায় এক "মিলনমেলা'। বিশ্বদ্যিালয়ের সর্বোচ্চ ব্যাচের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি হয় সেখানে। এর সঙ্গে যোগ দেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আলী আজম এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলামসহ সিরাজগঞ্জ জেলার অন্যন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তারাগণ। এ যেন শতসদস্যের একটি পরিবার!

সবাই মিলে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজে ছায়াঘেরা সপ্তমছায়া মঞ্চে। সকাল থেকেই চলে হইহুল্লোড় ও পরিচিতি পর্ব। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে আয়োজিত হয় মোরগ লড়াই, বিস্কুট দৌড়, বালিশ খেলা, স্ট্যাম্পিং এর মতো মজার মজার অনেক খেলাই। গায়ের জোড়ে মোরগ লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জুবায়েরের কাছে ভেড়াও যেন মুশকিল এমন মন্তব্য করতে ভুললেন না আবু সায়েম। মোরগ লড়াই, বালিশ খেলার আয়োজনে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে তৈরী হয় এক 'নস্টালজিক পরিবেশ'। সবাই যেন একমুহুর্তের জন্য ফিরে যায় ছোট্টবেলার স্মৃতির রোমন্থনে। খেলায় সবার অংশগ্রহণে পূর্ন মাত্রা যায় সেদিনের চুড়ুইভাতি এমনটায় বলছিলেন শ্রদ্ধা ভাজন ব্যক্তিত্ব আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানের অন্য এক আকর্ষণ ছিল নতুন নেতৃত্ব নেওয়া। আরিফুল ইসলামের ঘোষনায় নাম উঠে আসে জুবায়ের, তনুজা, ইভা, আলহাজ্ব, পঙ্কজ, মাসুম, সুমন, আসাদ, রবিন, নাসিমুল, রাব্বি, জাাহিদ, আজিম, জাহিদ, তানভীর, ছন্দা, জাকিয়ার মতো একনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন আন্তরিকপূর্ণ শিক্ষার্থীর নাম। সাথে সাথে সবাই মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে স্বাগত জানাতেও ভুল করলেন না। শিক্ষক উপদেষ্টা হিসেবে একসাথে প্রত্যয় জানান আলী আজম, রায়হান রাইন, কামরুল ইসলাম, ড. নজরুল ইসলাম, আফসানা ম্যামের মত বেশ কয়েকজন শিক্ষকগণ। একই সাথে সাবেক হলেও ছায়া হিসেবে থাকতে সম্মতি দেন আরিফুল ইসলাম, রাজিব, ইব্রাহীম হোসেন, সোহাগ রুবায়েত, সুমন, আরিফ, ফাহাদ, আজাদসহ বেশ হয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থীবৃন্দ। পরিশেষে সবার মাঝে একই চেতনা একসাথে পথ চলব, নিজেকে গড়ব, নিজের জেলাকে অগ্রসর করব। সাথে সাথে সোনার বাংলাদেশ গড়তে কাজ করব। এভাবেই স্মৃতির ফ্রেমে যোগ হয় আরও একটি দিনের মুহুর্ত।

লেখকদ্বয়: আসাদুজ্জামান ও আজিম