সাংবাদিকরাও সাংঘাতিক বনাম অর্বাচিন আমজনতার ভাবনা

ভালবাসার দেয়াল
Published : 24 June 2012, 06:18 PM
Updated : 24 June 2012, 06:18 PM

যদিও ইভা রহমানের বদৌলতে মাহফুজুর রহমানের আতলামি আমার দৃষ্টিকটু লাগে। তবে আমি ভাই সহজ বাংলায় আজকের ঘটনায় এটিএন বাংলার সাংবাদিকদের প্রতিবাদের পক্ষে। হাজার হলেও যে মানববন্ধন ছিল সাগর-রুনী হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে এবং সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে। যেখানে সব সাংবাদিক মহলই উপস্থিত ছিল বলে ভাবা যায়। সেখানে উস্কানিমূলক বক্তব্য কেনই বা দেয়ার দরকার ছিল প্রধানের? এ প্রশ্নের উত্তর লাঞ্ছিত হওয়া সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গির আলম প্রধানই ভালো বলতে পারবেন।

"আমার ভাই তোমার ভাই, অমুক ভাই তম্নুক ভাই" এই শ্লোগান রাজপথে রাজনীতি যারা করেন তাদের শ্লোগান। আমরা আমজনতা সবসময়ই তাই দেখে আসছি। এ রাজনীতির একটি চলমান দৃশ্য। এখন অবশ্য এ ধারায় সাংবাদিক মহলও যোগ দিয়েছেন। ব্যাপারটি বেশ পজিটিভ বলেই ধরে নিচ্ছি। আরও পজিটিভ যোগসুত্র যদি মেলাতে যান, তাহলে আরও বলি। এই তো কয়েকদিন আগে দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিকদের পুলিশ যখন বেধম মার মারে। তারপর দেখেছি মানব বন্ধন, মজার ব্যাপার হলো সাংবাদিক ভাইগন রাস্তা অবরোধ সহ গাড়িও ভাংচুর করেছেন! তাও এই আমজনতারাই লেবেঞ্জুস চুষতে চুষতে দেখেছি! কিন্তু কেউই কিছুই বলিনি অর্বাচিন আমজনতাগন। হাজার হলেও আন্দোলন করার অধিকার সবারই আছে বৈকি। তবে আর মান্যগন্য সাংবাদিকগন আর বাদ যাবেন কেন। রাজনৈতিক নেতাদের মতন গঠনমুলক আন্দোলন উনারাও জানে, তাই তখন দেখেছি! সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র আমরা! এখন আর সাংবাদিকদের কলমেরও জোর নেই! সাংবাদিকদের তাদের কলমের জোরই তো বিশাল বলে জানি। ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ক্যামেরার জোরও তো বিশাল। তবে আর বাস্তবিক হাতাহাতি কেন? এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই আমার।

সাগর-রুনী হত্যাকান্ড নিয়ে দেশ যখন তোলপাড়। তা নিয়ে কি তেলেসমাতি একেকটি কান্ড, সুশীলদের বিবৃতি, সরকারের গুষ্ঠি উদ্ধার সহ এহেন কর্মকান্ড নেই যা হয়নি। এরপরও যখন কোন কুল কিনারা হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় এত কিছু সহ্য করতে না পেরে কোনঠাসা, চৌকষ র‍্যাব সময় ক্ষেপনের নামে দুমাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ফরেনসিক রিপোর্টও আরেকবার করিয়েছিল। সে ফলাফলেও কোণ ক্লু পাওয়া যায় নি। আলোচ্য হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্লগারগনও কম যাননি। কর্পোরেট লেবাস এর গন্ধ মেখে একটি ব্লগ এর ব্লগারগন চা-চক্র থেকে শুরু করে রাজপথ রঙ দিয়ে রাঙ্গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বাদ্যযন্ত্র আর স্পিকার চালানোর অনুমতি না পেয়ে খালি গলায় প্রতিবাদি গান গেয়েও সে কর্পোরেট ব্লগের ব্লগারগন প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সবকিছুরই ফলাফল শুন্য একসময়!

আসলো সে এই হত্যাকান্ড ঘটনা পরবর্তী টার্নিং পয়েণ্ট-রুনির কর্মস্থলের মালিক মাহফুজুর রহমান লন্ডনে দিয়ে দিলেন এক মারাত্বক হাটে হাড়ি ভাংগার মতন বক্তৃতা। এরপর খুনি তো দূরে থাক মাহফুজুর রহমানকে নিয়েই সবাই হামলে পড়লো। প্রশ্ন আসে তাহলে –মাহফুজুর সত্য কথা বলাতেই কি দোষ? নাকি হাটে হাড়ি ভেংগে দেয়া মাহফুজুর রহমান আন্দলনকারী সব পক্ষকে এক্কেবারে হাস্যকর করে ফেললেন। ফলাফল সাগর-রুনী হত্যার বিচার এর আন্দলনকারীরা সে হত্যাকান্ডের বিচার বাদ দিয়ে প্রায় চেয়েই বসলেন মাহফুজুর রহমানের শাস্তি আর বিচার! এই অর্বাচিন হয়ে যাই তখন দ্বিধাম্বিত আর মনে উকি দেয় প্রকৃত খুনী এই সব দেখে হাসে অবলীলায়!

আজকে যে ঘটনা তা নিয়ে না হয় আর নাই বলি। যা বলিতেও লজ্জা। তবে একটি ব্যাপার আজকে দেখেছি বিরোধিদলের মদদপুষ্ট বলে খ্যাত প্রেসক্লাবের বিগত সভাপতিকে আজকেই খোলস ছেড়ে মিডিয়ার সামনে বক্তৃতা দিতে দেখেছি অনেকদিন পর। আরও মজার খবর এতদিন জানতাম সাংবাদিকদের দুটি সংগঠন এ ব্যাপারের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। আজ শুনলাম সাথে আরও চারটি সাংবাদিক সংগঠন যোগ হয়েছে!

একটি সিরিয়াস আন্দোলনকে কিভাবে হাস্যকর করে তোলা যায় তা এতদিন রাজনীতির মাঠেই দেখেছি। এখন থেকে আপনারা সিট বেল্ট বেধে বসুন- আরও নাটক আর খেলা সাংবাদিক মহলে দেখার জন্য তৈরী থাকুন।

মৃত্যুর পর মৃত মানূষরা আর ইহজগতের আর কিছু দেখতে পান না বলেই জানি। আর তা না হলে সাগর-রুনী কবর থেকেও এইসব দেখে লজ্জায় আরেকবার মৃত্যুবরন করতেন।

আর এই অর্বাচিন বলি- আমরা চাই সাগর-রুনী হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার, বিচার এবং বিচার।

বিডিনিউজ২৪

বাংলানিউজ২৪

দৈনিক প্রথম আলো