বর্তমান অর্থনীতি আজ আমাদের শিক্ষা দেয় শুধু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার। তাইতো যে কোন উপায়ে ধনবান হওয়াই আজ আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য। কল্যাণ-অকল্যাণের পার্থক্য সেখানে গৌণ। অন্যদিকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল-কুরআনের চর্চা বাদ দিয়ে মুসলিমরা বহুদা দলে বিভক্ত। তাই নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ মানব হিসাবে প্রমাণ করতে তারা ব্যর্থ।
দিকভ্রান্ত অর্থনৈতিক দর্শন আর ধনী হওয়ার অনৈতিক চর্চা কিছু মানুষকে করেছে উন্মাদ। তাইতো তারা যুদ্ধের হলি খেলায় নেমেছে, বিপন্ন করছে মানবতাকে। এর বাস্তব উদাহরণ আমরা দেখতে পাই আজকের সিরিয়াতে। একাধিক পক্ষ অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য যুদ্ধে লিপ্ত। কেউ কেউ তাদের নতুন অস্ত্রের পরীক্ষাও করছে মানবতাকে বলি দিয়ে। কারণ আজকের অর্থনৈতিক দর্শনই আমাদের শিক্ষা দেয় ধনী হওয়ার উপায় হল অন্যের সম্পদ লুণ্ঠন করা, আর অর্থ উপার্জনের মধ্যেই রয়েছে মানবের সফলতা। সম্মান-অসম্মানের বিষয় আজ আর মানবের কল্পনায় নেই।
এতসব ভুল শিক্ষা, দিকভ্রান্ত আর বহুদা দলে বিভক্ত মানুষ মানবতাকে হারিয়ে সাফল্য অর্জন করতে চাইছে। অথচ কয়েক'শ বছর আগেও অর্থনৈতিক দর্শনে মানব কল্যাণকেই প্রাধান্য দেওয়া হত। তখন বলা হত, মানবের অকল্যাণ করে এমন কোন কাজ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অর্ন্তভূক্ত নয় এবং অর্থনৈতিক সাফল্যেও তা গণনা করা হয় না। সেই অর্থনৈতিক দর্শন আরও বলতো, দানে সম্পদ বাড়ে, সাধারণের ভোগ শিল্পোন্নয়ন তরান্নিত করে, ব্যক্তিত্ব আর ব্যবসায়িক উদ্যোগ দারিদ্র বিমোচন করে। মানবের অধিকারে সাফল্য আসে, সম্মান আসে। ভিক্ষা অসম্মান আর দারিদ্র দেয়, ঐক্য আর ভালবাসা শান্তি দেয়।
আজকের মানুষ এ তত্ত্ব থেকে সরে এসেছে, আর অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে অশান্তিকে চিরসাথী করে নিয়েছে। তাই তো বলতে হয়, ভুল অর্থনৈতিক দর্শনে বিপন্ন সিরিয়া, বিপন্ন মানবতা।
মোঃ মশিউর রহমান, ব্যাংকার।