পদ্মা দেখতে পাটুরিয়া ঘাটে

মো: শাহিন রেজা
Published : 6 August 2019, 02:17 PM
Updated : 6 August 2019, 02:17 PM

সময়টা বর্ষার। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই বললেই চলে। কখনও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে আবার কখনও বা লম্বা সময় ধরে বিরতি নিচ্ছে। একদিন বিকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াতে বসে সিনিয়র ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ঐ দিন প্রচণ্ড বৃষ্টি ছিল। গল্পের ফাকে তমা আপু জানালো আমরা নদী দেখতে যাবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়েই ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হওয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম পাটুরিয়াতে যাবো পদ্মা নদী দেখতে ।

এই বছরের এপ্রিলে আমরা একটা ট্যুর গ্রুপ খুলেছি। আমাদের উদ্দেশ্য সারা পৃথিবী ঘুরে দেখা। এর মূল উদ্যোক্তা জাবি লোক প্রশাসন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী তমা আপু। স্থান নির্বাচন, ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সমস্ত কাজ আপু করেন। আমরা শুধু যাত্রাসঙ্গী। এরই মধ্যে আমরা ঢাকার আশেপাশে অনেক জায়গায় ঘুরেছি। ডিসেম্বরে ভারতে যাবার পরিকল্পনাও রয়েছে আমাদের।

সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে জাবির ডেইরি গেট থেকে পদ্মালাইন বাসে রওনা হলাম। তমা আপু আর আপুর দুই কলিগ গাবতলী থেকে রওনা হয়েছিল। ডেইরি থেকে ঐ বাসে উঠে পড়ি আমি।  প্রায় দুই ঘন্টা পর আমরা পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছালাম।

প্রচণ্ড রোদ আর গরম ছিল। তাতে কি! কোন কিছুই আমাদের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। আমরা লঞ্চঘাট, ফেরিঘাটে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। প্রচণ্ড স্রোত ছিল নদীতে, ফেরি পারাপার বিঘ্ন হচ্ছিল। লঞ্চঘাট ঢুবে যাবার উপক্রম। বাস-ট্রাকের লম্বা লাইন পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছিল।

আমরা ১ নং ফেরি ঘাটের কাছাকাছি যেয়ে পানিতে নেমে পড়ি। শুরু হয় ফটো তোলা। আলিম ভাই খুব ভালো ফটো তোলেন। আমাদের সবার ফটো তুললেন। এরপর আমরা হেঁটে হেঁটে নদীর দেখা শুরু করলাম। আমরা দেখলাম নদীতে নৌকা, ফেরি চলাচল করছে।

জীবিকার তাগিদে মানুষ নদীর ধারে নানা দোকান বসিয়েছে। কয়েকটা মন্দিরও চোখে পড়লো। এক ৫০ বছর পার করা এক মহিলার শুটকি মাছ প্রক্রিয়ার করার দৃশ্য আমাদের দারুণ আগ্রহী করলো।

ঘুরতে ঘুরতে দুপুর হয়ে এল। এবার খাবার সময়। পদ্ম নদী দেখতে এসেছি আর ইলিশ খাবো না তা না কি হয়! রাস্তার ধারে সারি সারি খাবারের হোটেল, আমরা নিরিবিলি পরিবেশে একটা হোটেলে বসলাম। ইলিশের স্বাদে আমরা দুপুরের খাবার শেষ করলাম।

এবার ফেরার পালা। মন একদমই সায় দিচ্ছিল না। নদী আর প্রকৃতি আমাদের বার বার পথ আটকাচ্ছিল। আমরা সমস্ত মায়া উপেক্ষা করে রওনা হলাম ঢাকার পথে। আসার সময় নদীকে বলে আসলাম আমরা আবারও আসবো তোমাকে দেখতে, তোমার ঠাণ্ডা জল স্পর্শ করতে আর প্রকৃতির বাতসে সুখের পরশ নিতে।