মাদকের নেশা একটি মরণ নেশা। যে একবার মাদক দ্বারা নেশাগ্রস্ত হয়ে যায় তার পক্ষে সেই নেশা পরিত্যাগ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে এখন প্রায় সকলেই ওয়াকিবহাল, এমনকি মাদকসেবী নিজেও। কিন্তু তারপরও কেউ কেউ আবেগের বশবর্তী হয়ে এবং কৌতুহল প্রবণতার কারণে মাদক গ্রহণ করে। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তা নেশায় পরিণত হয়। আবার কেউ কেউ অসৎ বন্ধুদের কথায় কান দিয়ে মাদক গ্রহণ শুরু করে। বাংলাদেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। এমনকি এর ভয়াল থাবা এখন শিশুদের দিকেও প্রসারিত হয়েছে। পত্রপত্রিকাগুলোকে মাঝে মাঝেই আমরা দেখেতে পাই অবুঝ ছিন্নমূল শিশুদের মাদক গ্রহণের চিত্র। তাদের হাতে অবাধে মাদক তুলে দিচ্ছে অসাধু মাদক ব্যবসায়ীরা। ফলে এই পথশিশুরা অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে অবচেতনভাবেই গ্রহণ করছে মাদক। এর জন্য দায়ী কি ওই শিশুটি? অবশ্যই না, অসাধু মাদক ব্যবসায়ীদের মুনাফালোভী নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকান্ড এবং অভিভাবক বিচ্ছিন্নতাই এর জন্য দায়ী। আবার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে মাদক গ্রহণের যে প্রবণতা দেখা যায় তা সৃষ্টি হয় হতাশা থেকে। হতাশা সৃষ্টি হয় কোন ব্যর্থতা, বেকারত্ব, সম্পর্কের ভাঙ্গন এবং অতি কষ্টের কোন স্মৃতি থেকে। অতিরিক্ত হতাশাকে পরাজিত করতে না পেরে মনের খোড়া যুক্তিতে তারা বেছে নেয় মাদক গ্রহণের পথ। যা একসময় পরিণত হয় মরণ নেশায়। তাই মাদক সেবন প্রতিরোধে যুব সমাজকে নৈতিক ও যুক্তিবাদী চিন্তার অধিকারী করে গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে নৈতিকতার প্রসারণ ঘটাতে হবে। সর্বোপরি, যারা ঘৃণ্য মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত প্রয়োজনে তাদের বিরদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান পর্যন্ত রাখতে হবে এবং মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।