আরব বসন্তে ইউরোপীয় নীতি (পর্ব-২)

মেফতাউল ইসলাম
Published : 7 Nov 2012, 07:07 PM
Updated : 7 Nov 2012, 07:07 PM

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র আতাঁত এবং বিশ্বব্যাপী অভিন্ন স্বার্থঃ

এখন সমগ্র বিশ্বব্যাপী ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন স্বার্থ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা একসাথে কোনদেশে আগ্রাসন চালাচ্ছে আবার একসাথে কোন দেশকে সহায়তা করছে। বর্তমান একমেরু বিশ্বব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র চালকের ভূমিকা পালন করছে। আর ইউরোপের গ্রেট পাওয়ারগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পদলেহী তাবেদারে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী অভিন্ন স্বার্থ কায়েম করতে তারা গঠন করেছে ন্যাটো। যদিও এটি গঠিত হয়েছিল প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বলয় হতে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু এখন যেহেতু সেই দ্বিমেরুকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব নেই তারপরও ন্যাটোর টিকে থাকার আবশ্যকতা তাদের অভিন্ন স্বার্থ উদ্ধারের সামরিক হাতিয়ার হিসেবে ন্যাটোকে ব্যবহারের প্রাসাঙ্গিকতাকেই তুলে ধরে। শুধু অভিন্ন স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রেখেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়ান সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো একসঙ্গে আতাঁত করে যথাক্রমে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়ায় আগ্রাসন চালিয়েছে। আর প্রত্যেকটি আক্রমণের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়েছে তাদের সামরিক প্লাটফর্ম ন্যাটোকে।

বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের ধুয়াশা তুলে এখন মার্কিন ইউরোপীয় আতাঁত তাদের শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলোকে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। তারা নিজেরা চরম অস্ত্রীকরণে লিপ্ত থাকলেও বৈরীভাবাপন্ন দেশগুলো নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সামান্য অস্ত্র তৈরির উদ্যোগ নিলেই তারা একযোগে তা প্রতিহত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। নিজেদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী চাহিদা পুরণ করার জন্য ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের উদ্যোগ নিলে ইউরোপ মার্কিন আতাঁত অন্যায়ভাবে তার উপর আরোপ করছে একের পর এক অবরোধ। অথচ পার্শ্ববর্তী কুচক্রী ইসরাঈল বিশাল পারামাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার মজুদ করলেও সেদিকে এই আতাঁতের কোন মাথাব্যথা নেই। কেননা ইসরাঈল তাদের তাবেদার রাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় আতাঁত আরব বিশের সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে সেখানে তাদের স্বার্থ আদায়ে অভিন্ন কৌশল নির্ধারণ করেছে। তেলসমৃদ্ধ লিবিয়াতে তারা একত্রে আক্রমণ চালিয়েছে। আবার সিরিয়াকে একের পর এক হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। মিসরের হোসনি মোবারক পাশ্চাত্যদের নিকট দীর্ঘদিনের বন্ধুরূপে গণ্য হলেও সাম্রাজ্য হারানোর শেষ দিনগুলোতে তারা সামান্য সহানুভূতি পর্যন্ত প্রকাশ করেনি। পাশ্চাত্যরা নিজেদেরকে বরাবরই গণতন্ত্রেরশুভাকাঙ্খী বলে দাবি করেছেন। অথচ সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত গণতন্ত্রের বালাই না থাকলেও তারা সে বিষয়ে মুখ খুলছেনা। কেননা সৌদি তাদের পদলেহী রাষ্ট্র। এভাবে আমরা দেখছি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ইউরোপ আমেরিকানরা অভিন্ন লক্ষ্য ও লালসা নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে এবং নিজেদের ইচ্ছামত অন্যায় কর্ম সাধন করছে।

চলবে……