অপেক্ষায় আছে লাখো তরুণ

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ এর ব্লগ
Published : 8 May 2012, 08:39 AM
Updated : 8 May 2012, 08:39 AM

সকালে অনলাইনে সংবাদপত্রগুলোতে চোখ রাখতেই একটি সংবাদে চোখ আটকে গেল। সংবাদটিকে শুধুই সংবাদ না বলে সুসংবাদ বললে এতোটুকু বাড়িয়ে বলা হবে না। শুধু আমিই নই। পাঠকরাও এটিকে সুসংবাদই বলবেন। "জনপ্রিয় কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ দেশে ফিরছেন। তবে মাত্র সপ্তা দুয়ের জন্য। দু'সপ্তা পর তাকে আবারও ফিরতে হবে নিউইয়র্কে। চিকিৎসার জন্য। গেল বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে যান নন্দিত নরকের জনক হুমায়ূন আহমেদ। বৃহদান্ত্রে ক্যান্সারে ভূগছেন বাঙালী পাঠকের হৃদয় জুড়ে থাকা মানুষটি।

বিজ্ঞান শাস্ত্রে দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে পাশ্চের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও লেখালেখিকে ভালোবেসে ছেড়েছেন তাও। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে লেখালেখিতে সমসাময়িকদের নজরকারা গুণী এ মানুষটি পাঠ বিমুখ বাঙালীর নতুন প্রজন্মকে হাতে বই তুলে নিতে বাধ্য করেছেন। রাত জেগে নানু-দাদুর কাছে গল্প শোনার দিন চলে গেলেও রাত জেগে "বই" পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন। এ কৃতিত্বের পুরোটাই হুমায়ূন স্যারের ঝুলিতেই।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, লেখক স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন লেখকের দেশে ফেরা সম্পর্কে জানিয়েছেন, নিউইয়র্কের বেলভ্যু হাসপাতালে জুনের ১২ তারিখ হুমায়ূনের অস্ত্রোপচার হবে। লেখক চাইছেন অস্ত্রোপচারের আগে দেশে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কিছু দিন সময় কাটাতে। সে জন্য পুরো চিকিৎসা শেষ না হতেই দেশে ফিরতে হচ্ছে। তবে সপ্তাহ দুয়েক পর আবারও তৃতীয় পর্বের চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্ক ফিরে যাবেন বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশি পাঠকদের প্রাণ হুমায়ূন আহমেদের শারিরিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে শাওন আরো জানান, সোমবার চিকিৎসকরা হুমায়ূন আহমেদের এমআরআই রিপোর্ট পর্যালোচনা করেছেন। তার লিভারের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। রোগের লক্ষণগুলো যেমন ছোট হয়ে আসছে, তেমনি স্পটগুলোও সেরে উঠছে।

"জোছনা ও জননীর" রচিয়েতা হুমায়ূন আহমেদের বাঙলা সাহিত্যকে অনেক দিয়েছেন। তবে এখনও পাবার চাহিদা ফুরিয়ে যায়নি। এখন আরো অনেক পাবার আছে। তিনিও দিতে চান অনেক কিছু। শুনেছি তিনি এখন নিউইয়র্কে বসে ছবি আঁকছেন। কথার জাদুকর কলমের পাশাপাশি তুলির আচঁড়ও রেখে যেতে চান বাঙালীর কোমল হৃদয়ে। সত্যিই হুমায়ূন আহমেদকে পেয়ে জাতি হিসেবে আমরা অনেক ভাগ্যবান। বাঙালী আগামী শতবছরেও এরকম আরেকজন হুমায়ূন পাবেন কি না জানি না। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ বাঙালীর হৃদয়ে কোটি কোটি বছর বেঁচে থাকবেন। তার অমরকীর্তি দিয়ে। যদিও লেখক তার ৬০ তম জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, "আমি মরে যাওয়ার পর বেঁচে থাকতে চাই না।"

সুস্থ্য হয়ে উঠুন আগুনের পরশ মনির স্রষ্টা। আপনার স্বপ্নপূরণের জন্যই আপনাকে বাঁচতে হবে। গরিব দু:খীদের জন্য, যে ক্যান্সার হাসপাতালের স্বপ্ন আপনি সুদূর আমেরিকায় বসে দেখেছেন, তার যাত্রা তো স্যার আপনাকেই করতে হবে। অপেক্ষায় আছে লাখো তরুণ।

শুভ কামনা স্যার।