হরতালের সাথে ভাংচুরের কী সম্পর্ক?

মিনহাজ আল হেলাল
Published : 12 June 2011, 12:49 PM
Updated : 12 June 2011, 12:49 PM

প্রতিবাদের কিছু গণতান্ত্রিক উপায় রয়েছে। শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করা জনগনের তেমনি বহুল ব্যবহৃত একটি উপায়। সাধারনত রাজনৈতিক দল কিংবা অন্য কোন গোষ্ঠি তাদের দাবী দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে হরতাল পালন করে থাকে। অন্যান্য দেশগুলোতেও টুকটাক হরতাল পালন করা হলেও বাংলাদেশে এর ব্যবহার অত্যন্ত ব্যাপক। ছোটখাটো ব্যাপার নিয়েও এদেশে হরতাল পালন করার মত ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তুচ্ছ কারনে দিনের পর দিন হরতাল পালন করার মত ঘটনা ঘটেছে।

হরতাল বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও হরতাল পালন করা গণতান্ত্রিক অধিকার হওয়ায় এটার বিরুদ্ধে কোন কথা বলার প্রয়োজন দেখি না। উপরন্তু সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তির ছত্রছায়ায় বর্তমান শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়ার নানা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে হরতাল পালন করারও কোন বিকল্প নেই। আমার ধারনা সমাজ সচেতন জনগণ বর্তমান জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমার মত হরতাল সমর্থন করতে বাধ্য।

কিন্তু হরতালের সাথে সংশ্লিষ্ট এমন কিছু ব্যাপার হরহামেশাই চোখে পড়ে যেগুলো কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ, গ্রেফতার, নারী লাঞ্ছনা ইত্যকার ঘটনা হরতালের নিত্যসঙ্গী। গত দুই দশকে ধারাবাহিকভাবেই গণতান্ত্রিক অধিকারের নামে এই ধরনের প্রতিহিংসামূলক ঘটনা বৃদ্ধি সন্তোষজনক (!) পর্যায়ে পৌছেছে। গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন বিরোধী দল কর্তৃক হরতালের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছিল তা শত তপস্যা করেও ইতিহাসের পাতা থেকে মুছা যাবে না। তাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ তত্তাবধানে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারার মত জঘন্য ঘটনার সূচনা হয়েছিল। আর ভাংচুরের মত ঘটনাগুলো ছিল ঝাল মুড়ির মতই সহজলভ্য। বর্তমান বিরোধী দলের কিছু অতি উৎসাহী লোকজনকেও এই ধরনের অপকর্মে নিজেদেরকে জড়িত হতে দেখা যায়।

এক্ষেত্রে শাসক দলের দায়ভারও অনস্বীকার্য। ঠুনকো অভিযোগে ধরপাকড়, পুলিশি নির্যাতন, বিরোধী নেতাকর্মীদের মিছিল মিটিং করতে বাধা প্রদান প্রভৃতি ক্রিয়াকলাপ উৎসাহী কিছু কর্মীদের ভিন্ন দিকে প্ররোচিত করে। দাবী দাওয়া আদায় অথবা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ, যাই হোক না কেন, কোনভাবেই ভাংচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের মত ঘটনা গ্রহনযোগ্য নয়। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই সকলের এগুলো পরিহার করে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা উচিত এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা একান্ত কাম্য।