তরুন প্রজন্মের রাজনীতি বিমুখতা ও কিছু প্রাসঙ্গিক কথা…

মির্জা লিও
Published : 1 Jan 2012, 10:52 AM
Updated : 1 Jan 2012, 10:52 AM

আদর্শগত রাজনীতি প্রয়োজন বাংলাদেশে । তরুন প্রজন্মের রাজনীতি বিমুখতা প্রধান কারণ দেশের রাজনীতিতে আদর্শের চর্চা না থাকা ।বাবার কিংবা স্বামীর ছবি দেখিয়ে ভুলানো যাচ্ছে না নতুন মেধাবী প্রজন্মকে ।তারা আদর্শগত অবস্থান জানতে চায় ।নীতিগত অবস্থান জানতে চায় ।তরুনরা অনেক সাহসী । বুড়োদের মত ভীরু নয়। তরুনরা কাজ করতে পছন্দ করে । এরা যেমন স্বপ দেখে তেমনি স্বপ্ন কে বাস্তবে পরিনত করতে নিদ্রাহীন পরিশ্রম করতে জানে ।এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের লেজুরবৃত্তিকে ঘৃনা করে ।

তরুন প্রজন্ম জানতে চায় তারা কেন একটি রাজনৈতিক দল করবে ।কি তার মুলমন্ত্র , কি তার মুলভাবনা ।কি তার শিক্ষানীতি , কি তার সমাজনীতি , কি তার কুটনীতি , কি তার অর্থনীতি , কি তার বিজ্ঞাননীতি ইত্যাদি ।পরবর্তি সময়ে কিভাবে তারা তাদের এইসব নীতি বাস্তবায়ন করবে । তরুনরা হিংসা, পরচর্চার দোষে দুষ্ট নয় । এরা বলতে জানে সত্য , বিশ্বাসও করে । এরা আকাশ কে হৃদয়ে ধারন করে যেখানে ঝড় যেমন উঠে তেমনি সুশীতল ঝরনা নামে । বাংলাদেশের মূল দুইটি রাজনৈতিক দলের কাছে একজন তরুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে আকুল আবেদন দুইজন নেতাকে নিয়ে বিতর্ক কতদিন ???? তাদের কাজের জন্য তারা চিরস্বরনীয় একদল অন্য দলের নেতা সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করাকে পছন্দের চোখে দেখা বন্ধ করুন । মাহাত্তা গান্ধী, আব্রাহাম লিংকন , জর্জ ওয়াশিংটন কে কোন দলের নেতা বোলা হয় না , তারা জাতীয় নেতা । দুনিয়ার কোন নেতায় বিতর্কের উর্ধে নয় । তাই বলে পিছন ফিরে তাকিয়ে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করলে দেশ আগাবে না ।

আমরা তরুন প্রজন্ম বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশ যখন জন্ম নিয়েছিল তখন একটি অসুস্থ শিশুর মত জন্ম নিয়েছিল । স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য আমাদের সকল স্থাপনা করতে হয়েছিল । যেটা ১৯৪৭ সালে ভারত, পাকিস্তান কে করতে হয়নি ।১৯৭১ এর পর বহির বিশ্বের অনেক রাষ্টের শত্রুসুলভ আচরণ আমাদের মাথা তুলে দাড়াতে দেয়নি । আমাদের অনেকের জানা আছে ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের সময় যুক্তরাষ্ট্র নগদ টাকায় কেনা খাদ্য বোঝাই জাহাজ আসতে দেয়নি ।অনেক প্রতিকুলতার মাঝে আজ বাংলাদেশ সুস্থ কিশোর থেকে যৌবনে পা রেখেছে । তরুন প্রজন্ম অনেক পজিটিভ চোখে দেখে এই বাংলাদেশকে । কিন্তু রাজনৈতিক দল গুলো তাদের আদর্শগত বারবার বিচ্চুতির কারনে তরুনদের থেকে দূরে সরে গেছে । মেধাবীরা ভীরতে পারে না রাজনৈতিক মঞ্চের আশেপাশে । ছাত্র নামের বখাটে দের হাতে চলে যাচ্চে জাতির ভবিষ্যত । ভাবতেই শরীর হিমশীতল হয়ে আসে ।

কি চায় তরুন প্রজন্ম ?? ভাবার সময় এসেছে । মেধাবীদের সুযোগ দিতে হবে । বি,সি,এস, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ , গবেশণামুলক প্রতিস্থানে দলীয়করন থেকে মুক্ত রাখতে হবে । তারা করে গেছে বলে আমরা করে যাব । এটা অনেকটা কুকুরকে কামড়ে দেওয়ার মত । রাজনৈতিক দল গুলোর উচিত কথা ও কাজের মধ্যে সমন্যয় আনা । যাকে সৈরশাষক বলে মুখে ফেনা তুলা হচ্ছে তারই সাথে এক মঞ্চে বসতে আদর্শগত মুল্যবোধ বাধা দেয়না তাদের ।

দেশের অনেক বড় নেতার মুখস্থ করা কিছু বুলি আমাদের তরুনদের কোন আশার আলো দেখায়না বরং আশাহত করে ।এখন দেশকে ভালবাসার সময় এবং দেশের জন্য কাজ করার সময় । পুরোনো ইতিহাস ঠিকই জানে তরুনরা । তাই বলে পিছন ফিরে উলটা হাটতে রাজি নয় তারা । বানিজ্যনীতি গুলো আরো দেশের মঙ্গলজনক হবে এটা প্রানের দাবী তরুনদের । ভারতে তাদের গাড়ী শিল্পকে বাচাতে এম্বাসেডর গাড়ীতে ব্যাবহার করে তাদের মন্ত্রিরা (টেক্সি হিসেবেও ব্যাবহার হয় ওই গাড়ী)। কিছু বছর আগে তাদের চলচিত্রে দেশীয় গাড়ী ব্যাবহার ছিল বাধ্যতামুলক । সফটওয়্যার শিল্প প্রসারে আরো সাহায্য বাড়াতে হবে আমাদের সরকারকে । সরকার জানেও না হয়তো কত সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে এই শিল্পে । ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ছাত্রদের সরকারি প্রতিস্থানে ৬মাসের/ ১ বছরের শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষন বাধ্যতামুলক করতে পারে সরকার । এতে শুধু সরকার লাভবান হবে না শিক্ষার্থীদের জন্যও ভাল হবে। গবেশনাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হোক । স্থাপনার নামকরন করে মনে হয় না তরুন প্রজন্মের হৃদয়ে স্থান করা যাবে । ইন্টারনেট যখন হাতের মুঠোয় তখন ফেসবুক কে দোষ দেওয়ার বোকামি না করাই ভাল । দেশের মেধাবী প্রজন্ম যেখানে হাত দিয়েছে সেখানে সোনা ফলেছে ।(সফটওয়্যার শিল্প, ঔষধ শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প , রেমিটেন্স প্রবাহ , বহির বিশ্বে অধ্যায়নরত ছাত্র রা ). এই সেক্টর গুলো দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে । তাহলে রাজনীতিতে মেধাবীদের স্থান দেয়া হচ্ছে না কেন ?? তবে কি আমাদের রাজনীতিবিদরা ভীরু । রাজনীতিতে জ্ঞানের চর্চা এত কম কেন । নতুনদের গ্রহন করার ক্ষমতা এত কম কেন আমাদের রাজনীতিবিদদের । কতইবা বয়স বারাক ওবামার??? রাজনীতিতে পরচর্চায় কি সব । অন্য কে নিয়ে যতটা না ভাবে এই বুড়োর দল তার থেকেও অনেক কম ভাবে নিজের আদর্শগত অবস্থান নিয়ে । রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র এত শক্ত কেন?? (অন্য কোন ক্ষেত্রে এতো পরিবার এর প্রভাব নেই…) এই সব প্রশ্নের জবাব খুজে পায় না বলে NEXT GENERATION (british council এর প্রকাশনা) এ দেখা গেছে ৭৪% তরুনের রাজনীতি বিমুখতা । আমরা তরুন প্রজন্ম এইসব প্রশ্নের উত্তর পেলে রাজনীতি মুখী হব মেধাবী মানুষে ভরে উটবে রাজনৈতিক অঙ্গন আর সোনা তো ফলাবোই……।