কয়েকজনকে ফাঁসিতে লটকিয়ে দিতে পারলেই কাজ শেষ, এবার সুবোধ হবার পালা!

মিঠুন চাকমা
Published : 7 Feb 2013, 10:09 AM
Updated : 7 Feb 2013, 10:09 AM

এক একটি সংগ্রাম এবং বিপ্লবে যা বদলে গিয়েছে তা হচ্ছে চেতনা বা দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন।

আমেরিকায় যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছিল, যখন দাসপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল তখন বিপ্লবী বা সংগ্রামীদের চেতনায় ছিল মানুষ পশু হতে পারে না। তাদেরও মানুষই বিবেচনা করতে হবে। বিপ্লব সফল হবার পরে চেতনার পরিবর্তন ঘটেছিল।
ফ্রান্সে সামন্তীয় রাজঅধিপতিদরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঘোষণা উচ্চারিত হযেছিল 'সাম্য- মৈত্রী- স্বাধীনতার' বাণী। বিপ্লব সফল হবার পরে জনগণের চেতনায় এনেছিল বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সেই সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার চেতনার নিশান এখনো পতপত করে উড়ছে।

মার্ক্স এবং এঙ্গেলস যখন 'পুঁজি' এবং 'কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো' তুলে ধরেন তখন এই ।ভুগোলে এসেছিল শ্রেনী-সংগামের চেতনা। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনে সেই শ্রেনীচেতনার উচ্ছ্বাস-উৎসাহে শ্রমিকশ্রেনী দখল করেছিল রাষ্ট্রদন্ড।

আমাদের এই ভূখন্ডে যখন জন-জাগরণ দেখা দেয়, যখন জেগে ওঠে সংগ্রাম তখন সেই চেতনা-দৃষ্টিভঙ্গী কোন দিক বা কোন বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে দেখা দেয়? ১৯৭১ সালে 'দেশাত্মবোধের জাগরণ'?, ১৯৯০ সালে 'স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জন-জাগরণ'?
চেতনায় কী পরিবর্তন এনেছে? কী পরিবর্তিত হয়েছে? এই চেতনা কি আন্দোলনে রূপ নিয়ে সর্বব্যাপী হয়েছে? নাকি তার গতি এক অবরুদ্ধ বোধের কাছে বাধা পেয়ে নিঃসার চেতনা হয়ে গিয়েছে?

চেতনা বা দৃষ্টিভঙ্গী বদলই তো বিপ্লব। সেই বিপ্লব বা সংগাম এখনো তো আলোর নিকটে আসেনি!

তারপরও আমরা আশাবাদী। এবং এবারে যা শুরু হয়েছে ব্লগার এবং অনলাইন একটিভিস্টের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় তা কি আমরা দৃষ্টিভঙ্গী বা চেতনার আমূল পরিবর্তনের এক বিপ্লবী লড়াইয়ে রূপ দিতে পারবো? নাকি … ।

এই লড়াই কি এমন এক ইশতেহার উপহার দেবে যা দেশের সকল জাতি এবং জনগণের মধ্যে শিহরণ জাগাবে? যা কোটি মানুষের মনের মধ্যে এনে দেবে আত্মবিশ্বাস-একতা-ভ্রাতৃত্ব-সহমর্মিতা-পরষ্পর সহভাগিতা? যা মানুষকে জাগাবে তার নিঃসার চেতনা থেকে?

এই লড়াইকে এতই ঠুনকো ভাবতে অনুরোধ করবো না যারা ভাবছে এক 'কাদেরের ফাঁসি' এবং কয়েকজনকে ফাঁসিতে লটকিয়ে দিতে পারলেই কাজ শেষ। এবার সুবোধ বালক হবার পালা!
চেতনা বা দৃষ্টিভঙ্গীর আমূল বদল ব্যতীত এই লড়াইয়ে ইতি টানা মানেই মনুষ্যত্ব-মানবিকতা-দায়িত্ব-কর্তব্যবোধকে চোরাগলিতে নিক্ষেপ করা।

এই সময়ে এমন ঘোষনা বা ম্যানিফেস্টো ইফেকটিভলি শক্তিশালীভাবে আশা প্রয়োজন য়েখানে সকল জাতি ও জনগণের প্রকৃত মুক্তির কথা থাকবে এবং তা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করবে, এবং তা এতই বেশী ইফেকটিভলি হবে যা থেকে জন্ম নেবে জন-জাগরণ, জাগরনী চেতনা।

অতএব, বাঁধ ভেঙে দেবার এখনই সময়! উদাত্ত আহ্বান সকলের প্রতি, বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও …..