আমার বন্ধু লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে আটক করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলার একটি পশ্চাৎপদ উপজেলা হল লক্ষীছড়ি। ০২ জানুয়ারি ভোর রাত দুইটায় তাকে লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রদত্ত সরকারী বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিউজে দেখলাম তাকে পিস্তল ও তাজা গুলি দিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। তার কাছে ‘অস্ত্র’ ও ‘গুলি’ পাওয়ার ঘটনা সাজানো নাটক না হয়ে পারে না। তার সাথে আমি কয়েকবছর মিশেছি। লক্ষীছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লেখাপড়া করে পুরো লক্ষীছড়ি উপজেলার মধ্যে প্রথম এম এ বা মাস্টার্স ডিগ্রীধারী ছিল। তার নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও থাকতে পারে। তবে সে যে সাদামাটা আইন মানা একজন মানুষ তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
কয়েকদিন আগেও তার সাথে কথা হয়েছিল। সে বলল যে, সে খুব চাপের মধ্যে আছে। তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে, যেকোন মুহূর্তে তাকে ‘ধরা’ হবে। এ নিয়ে রসিকতা করে বলেছিল, একজনকে বলেছি যদি আটকই করা হয় তবে যেন সম্মানজনকভাবে আটক করা হয়।
সে বলেছিল যে, কয়েকদিন আগে লক্ষীছড়িতে ধর্মীয় গুরু বৌদ্ধ ভিক্ষু লক্ষীছড়িতে আসেন। লক্ষীছড়িতে বৌদ্ধভিক্ষুদের সেনা নিরাপত্তা চেকপয়েন্টে হেনস্থা করা হয়। এই হেনস্থা হবার ঘটনায় এলাকার জনগণ ক্ষুব্ধ ছিল। তারা প্রতিবাদে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রোগ্রাম একযোগে বর্জন করে। সুপার জ্যোতি বলেছিল এই কারণে তার উপর খুব চাপ যাচ্ছিল এবং হুমকিও দেয়া হচ্ছিল। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি আশা করিনি তাকে এভাবে ‘প্রতিহিংসা বশত’ আটকের নাটক সাজানো হবে। যারা ‘ক্ষমতাধর’ তারা আরো ‘সহনশীল’ না হলে কষ্টের শেষ থাকে না!
পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে এই ধরনের আটকের ঘটনা ও নাটক কবে শেষ হবে আমরা জানি না। আর কার কার জন্য ‘আটক’ অপেক্ষা করছে তা কে জানে?
এলডোরাডো বলেছেনঃ
সুপার জ্যোতি চাকমা এক সময় ইউপিডিএফ এর রাজনৈতিক পরে সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। তার নামে একাধিক মামলা ছিল/আছে যার মধ্যে একটি সম্ভবত খুনের মামলা (আমার ভুল হলে ক্ষমা প্রার্থী)। কালা পাহাড়ের পাদদেশে ইউপিডিএফ এর সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের পেছনে এরকম অনেক সুপার জ্যোতি রয়েছে। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার আগে তিনি সব সময় অত্যন্ত গোপনে একাধিক অস্ত্র এবং আর্মড বডি গার্ড নিয়ে চলাফেরা করতেন। ইউপিডিএফ এর প্রত্যক্ষ মদদ এবং সন্ত্রাস না থাকলে সুপার জ্যোতি’র মত এত বড় মাপের সন্ত্রাসীরা কখনোই উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত (নাকি কলংকিত?) করতে পারতেন না।
আমাদের মিঠুন দা’ যখন এরকম বড় মাপের সন্ত্রাসী এবং (আমার মতে রাষ্ট্রদ্রোহী) ব্যাক্তির পক্ষে ব্লগে সাফাই গান তখন বিস্ময় আর হতাশায় ন্যুয়ে পড়ি। আর সাফাই গাইবেন না কেন? তারা সবাই জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠার নামে রাষ্ট্র দ্রোহী এক ভয়ংকর খেলায় লিপ্ত। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের আগে আমাদের “লারমা” মহাশয় এবং তার দলবল একই কাজে লিপ্ত ছিলেন এবং আমার ধারণা, প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে এখনো তারা সেই চক্রান্তে লিপ্ত আছেন। আর তাই ইউপিডিএফ, জেএসএস, জেএসএস (সংস্কারবাদী) সবাই মিলে হাজার দুই এর মত অস্ত্রধারী বাহিনী পোষেন।
মাঝখান দিয়ে তাদের সন্ত্রাস আর বেপরোয়া চাঁদাবাজির শিকার হয়ে অসহাইয় জীবন যাপন করে পাহাড়ের মানুষ।
মিঠুন দা, ভয় পাবেন না। সুপার জ্যোতি খুব শীঘ্রই জামিনে বেরিয়ে আসবেন। সরকারী উকিল (জেলা এটর্নী জেনারেল) থেকে শুরু করে সাংবাদিক, বুদ্বিজীবি, ব্যবসায়ী এমনকি বিচার বিভাগেরও অনেকের সাহস নেই ইউপিডিএফ এর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। তাই সুপার জ্যোতিকে আটকিয়ে রাখে এরকম সাহস কারো নেই।
মিঠুন চাকমা বলেছেনঃ
ডিযার এলডোরাডো,
আবার ‘ছদ্মনামীয়’ পরিচিতি প্রদর্শন বিহীন, এলডোরাডো নামীয় একজনের মন্তব্যের জবাব আমাকে বারবার দিতে হচ্ছে তার জন্য আমি দ্বিধাগ্রস্ত। যদি নিজের পরিচয়ে মতামতা দেয়ার কেউ হতেন তবে সম্ভবত, তিনি যা বলেছেন, তাতে ‘সাম্প্রদায়িক’ ‘উগ্র জাতীয়তাবাদী’ এমনকি ‘জামায়াতপন্থী’ তকমাধারী হতে তিনি বিব্রবত বোধ করতেন!
তবে, তারপরেও, তো আপনি অন্তত মন্তব্য করছেন তাতেও বা কম কিসে!
যা বলেছেন, “সুপার জ্যোতি চাকমা এক সময় ইউপিডিএফ এর রাজনৈতিক পরে সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। তার নামে একাধিক মামলা ছিল/আছে যার মধ্যে একটি সম্ভবত খুনের মামলা (আমার ভুল হলে ক্ষমা প্রার্থী)। ”
একদিকে এমন ধরণের গুরুতর অভিযোগ করছেন যার জন্য একজন ব্যক্তির সকল ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন বা তাকে আইনের দ্বারা ’অপরাধী’ সাব্যস্ত হতে যে হবে তা নিশ্চিত, অথচ, আপনি, ‘বানিয়ে বানিয়ে’ মানে গল্প বানানোর মতো তা অবলীলায় বলে যেতে পারলেন! এবং শেষে ‘আমার ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী’ বলেই দায় সেরেছেন!
আপনার প্রথম এই মন্তব্য বা বক্তব্য থেকেই পরের বক্তব্যগুলো যে কতটা বানোয়াট বা আপনি না জেনেও গল্প ফাঁদতে পারবেন তা পরিষ্কার হয়ে যায়।
সুতরাং, আপনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে যা-ই বলবেন তা যে, চর্বিত চর্বন সেই ‘সাম্প্রদায়িক’ ’উগ্র জাতীয়তাবাদী’ ধ্যানধারণা লালন করে বলবেন, তা দ্বিধাহীনভাবে বলা যায়!
তবে, শেষের দিকে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আপনার খেদ বা আফসোস প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে হয়!
বাংলাদেশ নিশ্চয়ই গণতান্ত্রিক একটি দেশ। এবং দেশের সংবিধানে একজন নাগরিকের অধিকার নিশ্চয়ই স্বীকার করা হয়েছে। আপনি জানেন না, বা না জানলে বা না বুঝলে বলা দরকার যে, দেশে আইন, বিচার ও শাসন বিভাগ নামে তিনটি আলাদা বিভাগ রযেছে। বিভাগ বন্টন অনযায়ী সাংবিধানিকভাবে দেশ পরিচালিত হয়। তবে খুবই দুঃখের বিষয়, আপনাদের মতো ‘উগ্রবাদী’দের কারণে রাষ্ট্রের এই পরিচালনা নীতিমালা নানাভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
আপনি যে, সুপার জ্যোতিকে অস্ত্র মামলা দিয়েও ‘স্বস্তি’ পান না তা আপননার এই কথায় বোঝা যায়। আর তাই মিঠুন চাকমা যখন বিচার ৯৮ দিন পরে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে আবার ব্লগ-েইন্টারনেটে সক্রিয় থেকে অধিকারের কথা বলেন, তখন, আপনিই যে, আবার তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আবার তাকে জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা নিচ্চেণ না তা-ই বা কিভাবে বলি! আমি তো আপনাকে চিনি না!
যাই হোক, একটু সোজাসাপ্টা কথা বলার জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।
তবে, আপনার সাথে সামনা সামনি কথা বললে আমার খুব ভালোই লাগত! দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ই্স্যুতে ’ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ কথা বলে লা্ভ নেই!
ধন্যবাদ আপনাকে
এবং আরেকবার দুঃখপ্রকাশ করছি কটু কথা বলে থাকলে
এলডোরাডো বলেছেনঃ
খুব সংক্ষেপে আপনার মন্তব্যের উত্তর দেব।
১। আমার ছদ্মনাম নিয়ে আপনার এত অন্তর্জ্বালা কেন বুঝি না। ছদ্মনামে লেখা দোষের কিছু নয়।
২। আমার সাথে সাক্ষাতের আগ্রহ দেখানোয় ধন্যবাদ। কিন্তু আমি মোটেই উৎসাহী নই, কারণ তাহলে আমার জীবনের নিরাপত্তা বলে আর কিছু থাকবে না। আর যাই হোক, ইউপিডিএফ কে বিশ্বাস করা যায় না।
৩। বাংলাদেশকে খন্ডিত করে “জুম্মল্যান্ড” নামে স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য গোপনে গোপনে সামরিক প্রস্তুতি, দেশের সংবিধান এবং সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সমান্তরাল বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন এমনকি আলাদা মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করার কথা যদি বানোয়াট হয়, তাহলে আমার যে সমস্ত বাক্য বা তথ্য কে আপনি বানোয়াট বলছেন সেগুলি বানোয়াট বলে মেনে নেব।
৪। স্বাধীন, সার্বভৌম, অখন্ড বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলা যদি উগ্র জাতীয়তাবাদ হয় , তাহলে আমি মহা উগ্র জাতীয়তাবাদী। এক্ষেত্রে আমি আপোষ করবো না।
৫। ইউপিডিএফ এর অনেক কার্যকলাপের ব্যাপারে কথা উঠলে আপনি প্রায়শঃই সেগুলো সচেতনভাবে এড়িয়ে যান বা প্রতিবাদ করেন। এই এড়িয়ে যাওয়া বা মেনে না নেয়াটা আপনাদের দলীয় কৌশল, কিংবা আপনার স্বভাবজাত। যদি এর কোনটাই না হয় তবে ধরে নিব, দল আপনাদের মত কিছু ভাল মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। দলের ভেতরের অনেক কিছুই আপনি জানেন না বা আপনাদের মত প্রকাশ্যে থাকা দলীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বা বুদ্ধিজীবিদেরকে জানতে দেয়া হয় না। আপনি না জানলেও আমি এরকম একটা তথ্য আপনাদের দলের প্রথম সারির এক নেতার কাছ থেকে শুনেছি এবং আমার কাছে ডকুমেন্টারী প্রমানও ছিল। ২০০৭-০৮ অর্থ বৎসরে খাগড়াছড়ির জেলার শুধুমাত্র একটি উপজেলায় আপনাদের দলের নামে চাঁদা ওঠানো হয়েছিল ৬৩ লক্ষ টাকা! সব উপজেলা মিলিয়ে কত হয়? আপনাদের দলের সামরিক শাখার মোট সদস্য কত, কয়টি কোম্পানী, কোন কোম্পানীর দলনেতা কে, এসব বিষয়ে গেল সপ্তাহে একটা পত্রিকায় বিস্তারিত প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। এর বেশী আর কি জানতে চান? কই আপনারা তো সেই প্রতিবেদনের কোন করেন নি? তাহলে আমি কিছু লিখলেই এতে গাত্র দাহ কেন?
ভাল থাকুন মিঠুন দা। ব্লগিং চলুক।
মিঠুন চাকমা বলেছেনঃ
ডিয়ার এলডোরাডো,
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রতিমন্তব্য করার জন্য।
এবার সংক্ষেপে বলছি।
এক. ‘অন্তর্জালা’ কথাটি ব্যবহার করার জন্য ধন্যবাদ!। আসলে এই শব্দটি আমি আগে আপনার ক্ষেত্রে ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করেছিলাম। দেখা গেছে আমি কোন না কোন ভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ‘সত্য কথা’ বলতে শুরু করলে আপনার মত ‘ছদ্ম নামীয়’ আইডি থেকে নানা আজগুবি জবাব আসা শুরু করে। অথচ, আমি আগে যা বলেছিলাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরাসরি কেউ কথা বলেন না! এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে হেঁয়ালিভাবে ‘ইউপিডিএফ ভীতি’ তার কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেও তার পেছনে যে আরো ’কারণ’ জড়িত তা ভেবে আকুল হই বটে!
দুই. আমার সাথে সাক্ষাত না করার আগ্রহ থাকবে না জানি! তবে একটু সৎসাহস দেখালে ক্ষতি কি!
তিন. আপনার তৃতীয় আলোচ্য বিষয় নিয়ে ‘নয়া দিগন্ত’ দৈনিক পত্রিকার আজকের সংস্করণে(১০ জা্নুয়ারি, ২০১৭) একটি লেখা বেরিয়েছে। লেখাটি সম্ভবত ‘আপনার’ লেখা! দক্ষিণপন্থী ও জামায়াত ঘেঁষা বা ‘উগ্র’ মতাদর্শিক ধারাবাদীরা এসকল বলে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে’ সিদ্ধহস্ত!
চার. আপনার কাছে ‘স্বাধীনতা’ সার্বভৌমত্ব’ ইত্যাদি হল পাকিস্তান আমলীয় জামায়াতী ’পাকি প্রেম’। আমাদের কাছে দেশপ্রেম, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব তার চেয়ে বেশি কিছু। ’পাকি আমলীয়’ ‘পাকি প্রেমী’দের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম হল বংশ বৃদ্ধির উর্বর ক্ষেত্র। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে উগ্রবাদী জাত্যাভিমান ও জাতিবিদ্বেষ সবসময় লালন করে তা স্বতসিদ্ধ। আপনার ক্ষেত্রেও বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন। সুতরাং, আপনার মেকি দেশপ্রেম প্রদর্শনে যে কোন জনসমষ্টির বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটবে তাও সত্য।
পাঁচ. ইউপিডিএফ বিষয়ে এড়িয়ে যাবার প্রশ্নই আসে না! আমার আগের লেখা ও মন্তব্য পড়ুন! আমি আগেও বলেছি, কেউ দুরভিসন্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করলে আমি এই দুরভিসন্ধি নিয়ে প্রথমে কথা বলব, তারপর অন্য বিষয়ে। আপনার ’প্রাকসিদ্ধান্তমূলক’ দক্ষিণপন্থীয় উগ্রবাদী আদর্শের বিপরীতে আগে আমাকে কথা বলতে হবে। আর কোন ‘পত্রিকা’য় যেন বিস্তারিত প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে? অখ্যাত ’সাংবাদিক’র ’গালগল্প’ পড়ার সময় আমার নেই। ঐসকল পত্রিকায় যা ছাপা হয়েছে তাতে যদি সত্যতার লেশমাত্র থাকত তবে তারা ’ইউপিডিএফ’ বিষয়ে কোনকিছু প্রকাশ করার আগে এবং প্রথমেই সেই সংগঠনের দায়িত্ববানদের সাথে যোগাযোগ করত।
সবশেষে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আলোচনা করার জন্য।
গঠনমূলক আলোচনায় আসবেন আশা করি।
এলডোরাডো বলেছেনঃ
মিঠুন দা,
আপনার কাছে সারগর্ভ উত্তর আশা করেছিলাম, কিন্তু আমাকে এভাবে “জামাতী” হিসেবে ব্রান্ডিং করার অপচেষ্টা করে আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দিবেন সেটা ভাবিনি। তার মানে দাঁড়াল এই যে ইউপিডি এফ এর সকল কর্মকান্ড (প্রকাশ্য এবং গোপন) সম্মন্ধে আপনি অবগত। আরো খোলসা করে বললে বলতে হয় জ্ঞানপাপী। তাই আবারো অনেক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন।
খাগড়াছড়িতে তথা পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন বাংগালী (দয়া করে এই শব্দ ব্যবহার করার কারণে আমাকে রেসিষ্ট ভাববেন না) ইউপিডিএফ এর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস রাখে না। কারন এর ফল অবধারিত ভাবে হয় ভয়াবহ। হয় রাতের আধারে হামলা করে পঙ্গু করে দেয়া হবে, অথবা তার বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়া হবে, কিংবা ফলের বাগান থাকলে সব গাছ কেটে দেয়া হবে। বেশী বাড়াবাড়ি করলে মেরে ফেলা হবে। পাহাড়ী হলে নির্ঘাত মৃত্যু, ভাগ্নায খুব বেশী ভাল হলে আজীবন “ঘর বন্দী” । এর সবই আপনি অবগত আছেন। তাই আমি সাহস করে আমার পরিচয় প্রকাশ করার মত বোকামী করবো না। তবে যদি কোনদিন আপনি এবং আপনার দল সকল গুপ্ত কার্যক্রম বন্ধ করে সত্যিকারের প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন তাহলে আমি নিজেই আপনার সাথে দেখা করে পরিচয় দিব।
আমি ১০ তারিখের নয়া দিগন্ত চোখেই দেখিনি, কারণ সেটা আমি পড়ি না। আমি যে সময়ের কথা বলেছি সেই সময়েই জাতীয় একটা পত্রিকায় ইউপিডিএফ নিয়ে প্রতিবেদন এসেছে। আপনাদের চোখে পড়েনি, সেই দায় আমি নেব না। আর আমি সাংবাদিক নই, এই পরিচয় জেনে রাখুন।
১৯৭১ সালে জামাতীদের অখন্ড পাকিস্তান চাওয়া আর ২০১৭ তে আমার অখন্ড বাংলাদেশ চাওয়াকে এক করে দেখার সুযোগ নেই। তারপরও আপনি সেটা শুধুমাত্র আপনার দলের সন্ত্রাসী এবং দেশ বিরোধী কার্যকলাপ আড়াল করার জন্য করেছেন । হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অনেক ব্লগার এখানে আবোল তাবোল বলে ব্যক্তিগত আক্রমন শুরু করে। আপনার মাঝেও সেই প্রচেষ্টা কিঞ্চিৎ লক্ষ্য করছি।
আপনার দলের দায়িত্ববান বলতে কাকে বুঝাচ্ছেন? সব থাকে গহীন জংগলে। উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা ছাড়া আর কেউ কি প্রকাশ্যে ছিলেন বা আছেন? দলের প্রতিষ্ঠাতা নেতা প্রসীত বিকাশ খীসা কোথায়? রবি শংকর চাকমা সহ স্থায়ী কমিটির অন্যরা কেউ কি প্রকাশ্য জীবন যাপন করেন? কার সাথে যোগাযোগের কথা বলছেন? আপনি নিশ্চয়ই দলের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের কেউ নন। দয়া করে দলের নীতি নির্ধারকদের নাম গুলো প্রকাশ করুন। দলের একটা ওয়েব সাইট ছিল । সেটাও দীর্ঘদিন বন্ধ। বিদেশ থেকে (কানাডা, জাপান এবং কোরিয়া) কিছু সাইট চালান, সেখানে সাধারণের প্রবেশের বা মতামতের সুযোগ কোথায়? আর কিছু গোপন ওয়েব সাইট চালান যার খবর শুধু আপনার মত হার্ডকোররা জানেন। আপনি নিজে কয়েকটা ওয়েব পোর্টাল চালান, সেখানে আপনাদের মতের পরিপন্থী কোন মন্তব্য করার উপায় আছে? ঐসব সাইটে দলের প্রচারণার তথা নেতা -পাতিনেতা এবং সমর্থকদের চাংগা করার নামে আপনি এবং আপনারা কি করেন সেটা নিয়ে একদিন লিখবো। উপর দিকে থুতু মারার আগে নিজের অবস্থান জেনে নিবেন দাদা।
আমার কথা হলো, ব্লগে এসে দলের বা দলের নেতাদের নামে প্রচারণা চালাতে পারেন তাতে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু দয়া করে এক চোখা বিষয় নিয়ে লিখবেন না। এখানকার অধিকাংশ ব্লগার আপনাদের মূল উদ্দেশ্য সম্মন্ধে অবগত না থাকার মানে এই না যে, সবাই চোখ বন্ধ করে আছে।
ভাল থাকুন। আর দয়া করে ব্যাক্তিগত আক্রমন না করলেই খুশী হব।
আপনার দল নিয়েই কিছু লিখুন না?