বর্তমান সাহিত্য বিশ্বে ছোট ছোট প্রেসগুলোই কৃষকদের স্থানীয় বাজারের মত হয়ে উঠছে। ভাল খাবার বলতে আজকাল কৃষকের ঘরের নিজের চাষ করা খাবার -দাবারকেই বুঝে থাকি। পুরো বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি ছোট ছোট প্রেস আছে, এবং এসব অধিকাংশই অলাভজনক অথবা ক্ষতির সম্মূখীন। তারা শ্রমকে ভালবাসে, এই শ্রমকে তারা পণ্য পরিণত করতে চায় না। অনেকেই এই বইগুলোকে উপহার হিসেবে প্রকাশ করেন। ইংরেজিতে একে বলে chapbook। এইচেপবুকগুলো হাতে হাতে দেওয়া হয়, হয়ত বা বিলি করতে একটু বেশি সময়ই লাগে। এই কবিতাগুলো লিখতে কবি অনেক সময় নেন। তারা খুবই অল্প পরিমাণে এটি প্রকাশ করেন। এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনটা হয় অনেক ধীরে ধীরে। কৃষকদের যেমন একটি ছোট বাজার থাকে, তাদেরও একটি ছোট পরিসর। পুরো বিশ্ব জুড়ে এই ছোট ছোট আন্দোলনটিই হয়ে উঠছে এখন বিকল্প সাংস্কৃতিক আন্দোলন।
ঠিক এমন একটি জায়গা ধরে ডেল স্মিথ নামের একজন কবি ধীরগতির কবিতা আন্দোলন বা ইংরেজিতে slow poetry movement(sp) গড়ে তুলেন। ২০০৮ সালের জুনে তিনি এই আন্দোলনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্যকে সামনে তুলে ধরেন।
এই আন্দোলন নিজেকে প্রতিফলিত করে, এটি মুক্ত প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
এই আন্দোলন স্থানীক জীবন যাত্রাকে প্রাচীন কাব্য কৌশলের বরাত দিয়ে চিত্র তৈরি করে।
এই আন্দোলন অডিয়েন্সকে গুরুত্ব দেয়।
এই আন্দোলন বিশ্ব অর্থনীতির প্রভাবকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
এই আন্দোলন অপ্রাসংগিকতাকে প্রশ্রয় দেয় কিন্তু অনেক ধীর ও প্রগতিশীল লয়ে।
এই আন্দোলন নানা জনের আলাপ ও চিন্তাকে পর্যবেক্ষণ করে, যেখানে বৈশ্বিক অবস্থার আক্রমণ ও টালমাটাল অবস্থাকে সামনে টেনে আনে।
এ নিয়ে রবার্ট হিউজেসের একটি সংজ্ঞাকেই হাজির করা হয় । তিনি বলেন, ধীরগতির শিল্প আন্দোলনকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে যে, শিল্প ১০ সেকেন্ড অনুভূতির কোনও বিষয় নয়, এটি শুধু অনুভূতি দানের কোনও বিষয় নয়, এটি খুব ধীরে ধীরে অনেক গভীরে আমাদের সংক্রামিত ও চিন্তিত করে ।
একুশ শতকের শুরুর কাব্য আন্দোলন নিয়ে আরও একটি বিষয় বেশ জোড়েসোড়ে উচ্চারিত হলেও একচেটিয়া খাদ্য বা পণ্য উতপাদনের বিরুদ্ধে কথা বলার মত একচেটিয়া শিল্প উপাদানের বিরুদ্ধেও যে শব্দ উচ্চারিত হচ্ছে সেটি অনেকটাই ধীর গতির শিল্প আন্দোলন করতে পারছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।