বক্সঅফিসহীন ঢালিউড এবং সংকটে সম্ভাবনাময় পেশা ‘চলচ্চিত্র সমালোচক’

শফিক মিতুল
Published : 6 Oct 2017, 04:34 AM
Updated : 6 Oct 2017, 04:34 AM

চলচ্চিত্র কেবল বিনোদন মাধ্যমই নয়, এটি একটি শিল্প। একটি বড় ধরনের ব্যবসাক্ষেত্র। এখানে বড় আকারে পুঁজি লগ্নি করা হয়, আর লাভ করা হয় পুঁজির কয়েকগুণ। তাই এটিকে কেবল পর্দায় দেখা কিছু কলা-কুশলীর অভিনয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ভাবা যায় না।

চলচ্চিত্রের প্রচার, প্রসার এবং এর ব্যবসা নির্ভর করে মূলত এর প্রচারণার ওপর। অনেক ভালো মুভি আশানুরূপ দর্শকপ্রিয়তা পায় না, তথা ব্যবসা করতে পারেনা। আবার দেখা যায়, স্বল্প বাজেটের অনেক চলচ্চিত্রও বক্স অফিস বাজিমাত করে দেয়। চলচ্চিত্র্রের এই প্রচারণার কাজটি কয়েকটি উপায়ে হয়ে থাকে। আর চলচ্চিত্রের প্রসারে এই প্রচারণার অন্যতম একটি মাধ্যম হলেন চলচ্চিত্র সমালোচকগণ।

চলচ্চিত্র সমালোচনা কী?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ট এর ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন স্টাডিজ বিভাগের এক গবেষণা জার্নাল বলেছে, "চলচ্চিত্র সমালোচনা হচ্ছে, কোন চলচ্চিত্রের অধ্যয়ন, ব্যাখ্যা, মূল্যায়ন।" (সূত্র- https://researchguides.uvm.edu/c.php?g=290200&p=3481769)। বিভিন্ন অনলাইন ডিকশনারী ও চলচ্চিত্র বিষয়ক বিভিন্ন সাইন ও জার্নাল ঘেঁটে যা পেলাম তা দিয়ে একটা সারমর্ম দাঁড় করানো যায় এভাবে- "অভিনয়, চিত্রনাট্য, সম্পাদনা, চলচ্চিত্র শিল্প এবং অন্যান্য পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে লেখনী ও মতামত, চলচ্চিত্র এবং চলচ্চিত্র মাধ্যমের বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন হচ্ছে চলচ্চিত্র সমালোচনা।" সমালোচকরা পাঠকদের চলচ্চিত্রের গল্প, প্লট ও অন্যান্য বিষয়াদি সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব চলচ্চিত্র সমালোচকদের কেউ কেউ অ্যাওয়ার্ড সিজনে ভোট প্রদানের কাজটিও করে থাকেন।

এক কথায় বলতে গেলে চলচ্চিত্রের ভাল, মন্দ, শক্তিশালী-দুর্বল দিক, কোন ইন্টারেস্টিং তথ্য (ট্রিভিয়া) অর্থাৎ মোটামুটি চলচ্চিত্রটির সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ দিক সম্পর্কে জানানোকে বোঝায়। বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্র সমালোচনা এতটাই বিসতৃতি লাভ করেছে যে তা অনেকেই পেশা হিসেবে নিচ্ছে। যদিও আমাদেও দেশে বিষয়টি এতটা জনপ্রিয়তা লাভ করেনি নানাবিধ কারণে। যাই হোক সে আলোচনো পরে।

চলচ্চিত্র সমালোচনার ধারা:

সাধারণত চলচ্চিত্র সমালোচনাকে দুই ধারায় দেখা যায়। এর এক প্রকার হচ্ছে সাংবাদিকতা ধারা, যা প্রতিনিয়ত পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন ও জনপ্রিয় গণযোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে পাওয়া যায়। অন্য ধারাটি হচ্ছে চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের দ্বারা প্রাতিষ্ঠানিক চলচ্চিত্র সমালোচনা, যারা চলচ্চিত্র তত্ত্ব সম্পর্কে সম্যক অবগত এবং চলচ্চিত্র নিয়ে তাদের মতামতগুলো বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়।

জার্নালিস্টিক সমালোচনা ধারা:

এ ধারায় চলচ্চিত্র সমালোচকরা সংবাদপত্র, অনলাইন মাধ্যম বা ব্রডকাস্ট মিডিয়া প্রভৃতির জন্য কাজ করে থাকেন। চলচ্চিত্রর প্লট, সারসংক্ষেপ, বক্স অফিস পর্যালোচনা ও এর সম্পর্কে রিভিউয়ারের মূল্যায়ন সাধারণ দর্শকদেরকে প্রভাবিত করে মুভিটি দেখার জন্য।

আমরা কয়েকজন সুপরিচিত সাংবাদিকতা ধারার চলচ্চিত্র সমালোচকের নাম স্মরণ করতে পারি। টাইম ম্যাগাজিনের জেমস অ্যাগি, নিউ ইয়র্ক টাইমসের ভিনসেন্ট ক্যানবেই, শিকাগো সান-টাইমস এর রজার এবার্ট, বিবিসি'র মার্ক কেরমডি, দ্য অবজারভারের ফিলিপ ফ্রেন্স, দ্য গার্ডিয়ানের পিটার ব্রাডশ, শিকাগো ট্রিবিউনের মাইকেল ফিলিপস্ প্রমুখের নাম উল্লেখ করতে পারি। যারা বিভিন্ন গণমাধ্যমের হয়ে চলচ্চিত্র সমালোচনা, পর্যালোচনার কাজটি করেন।

প্রাতিষ্ঠানিক ধারা:

চলচ্চিত্র তত্ত্ব বা চলচ্চিত্র স্টাডিজ বলতে যা বুঝি সেটা হল এই ধারা। এখানে আলোচনা করা হয় চলচ্চিত্র কেন তৈরি করা হয়েছে, এর আর্থ-সামাজিক ও রাজনীতিক প্রভাব, দর্শকদের ওপর চলচ্চিত্রের প্রভাব, দর্শক জরিপ প্রভৃতি একাডেমিক বিশ্লেষণ করা হয় এই ধারায়। তাদের এইসব বিশ্লেষণ গণ-প্রচারণার মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ হওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন জার্নাল ও পাবলিকেশন্সে প্রকাশিত হয়।

এ প্রসঙ্গে আমরা কয়েকজন একাডেমিক চলচ্চিত্র সমালোচকের নাম স্মরণ করতে পারি। এদের মধ্যে রয়েছেন, এন্ড্রি বাজিন, ক্রিস্টিন থম্পসন, ডেভিড বর্ডওয়েল, সার্জেই আইজেনস্টাইন প্রমুখ। বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক তেমনি একজন।

তাহলে চলচ্চিত্র সমালোচক কারা হবেন?

চলচ্চিত্র সমালোচক হওয়ার জন্য একজনকে চলচ্চিত্রের সাধারণ বিষয়গুলো থেকে শুরু করে জটিলতর ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলোও জানতে হবে। এ বিষয়ে তাদের পড়াশুনা থাকতে হবে। চলচ্চিত্র সম্পর্কে যত বেশি জানা যাবে, তত বেশি কার্যকরভাবে একজন সমালোচক বিভিন্ন আর্টিস্ট এর কাজের তুলনা ও পার্থক্য করতে পারবেন। অর্থাৎ এক কথায় বলা যায় চলচ্চিত্র বোদ্ধা হতে হবে।

আঠারো শতকের শেষাংশে ম্যাক্সিম গোর্কি একটি সিনেমা দেখে লেখেন, "তুমি ভুলে যাবে তুমি কোথায় আছো। অদ্ভূত কল্পনা জগত তোমার মন ও চেতনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে।" তার এ আহ্বান নিশ্চয়ই বহু দর্শককে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো সিনেমা হলের দিকে!

সিনেমার ইতিহাসের সর্বদাই অনেক মেধাবী লেখক-চিন্তক তাদের মতামত দিয়েছেন, যা তারা মুভিতে দেখেছেন, শুনেছেন, অনুভব করেছেন। তারা তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন যেন দর্শকেরা নিজে কিংবা বন্ধু, পরিজনসহ সিনেমা দেখতে যেতে আগ্রহী হয়। দর্শকরাও এমন ধরনের নির্ভরযোগ্য কাউকে প্রত্যাশা করেন যিনি একটি সিনেমা সম্পর্কে অধিক ও সঠিক তথ্যটি তাদের জানাবেন, যাতে করে তাদের অর্থ ও সময় যেন নষ্ট হয়। তাই চলচ্চিত্র সমালোচকের ভূমিকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চলচ্চিত্র সমালোচক রজার এভার্ট

চলচ্চিত্র বিষয়ক ওয়েবসাইট টেস্ট অব সিনমা সেরা দশজন মুভি সমালোচকের একটি তালিকা করেছেন। এই তালিকায় থাকা প্রত্যেকেই কোন না কোন পত্রিকা বা ম্যাগাজিনের হয়ে লিখতেন। তাদের কাজের মান যথেষ্ট উন্নত ধরনের ছিলো। চলচ্চিত্র শিল্পের প্রসারে তাদের এসব সমালোচনা বড় ধরনের প্রচারণার কাজ করতো। এদের মধ্যে রজার এভার্ট হলেন প্রথম চলচ্চিত্র সমালোচক যিনি মুভি সমালোচনার জন্য পুলিৎজার জিতেছিলেন। এভার্ট লিখতেন শিকাগো সান টাইমসের হয়ে। ১৯৬৭ সাল থেকে ২০১৩ সালে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এখানে লিখতেন। এসব চলচ্চিত্র সমালোচকদের বিভিন্ন মুভি নিয়ে করা সমালোচনা সংকলিত করে বিভিন্ন সময়ে বইও বেরিয়েছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, চলচ্চিত্র শিল্পের পাশাপাশি চলচ্চিত্র সমালোচনাও একটা বড় ধরনের প্রফেশনাল আর্ট ওয়ার্ক হিসেবে দাঁড়িয়েছে হলিউড বা ইউরোপীয় বলয়ে।

তারান আদার্শ

আমরা যদি সাম্প্রতিক ভারতীয় অর্থাৎ বলিউডের পানে তাকাই, তাহলে দেখবো এখানেও চলচ্চিত্র সমোলোচনায় পেশাদারিত্বের  প্রলেপ পেয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতীয় চলচ্চিত্র সমালোচক তারান আদার্শ (Taran Adarsh) এর নাম উল্লেখ করছি। এখন পর্যন্ত তিনি ৩১৮টি মুভির রিভিউ তথা সমালোচনা করেছেন। একই সাথে তিনি মুভির রেটিংসও করে থাকেন। তার ৩১৮টি সমালোচনার মধ্যে ২০৬টি পেয়েছে ইতিবাচক রিভিউ আর ১১০ টি চলচ্চিত্র পেয়েছে নেগেটিভ রিভিউ। ২টি চলচ্চিত্রের কোন রেটিং তিনি করেননি।

সুতরাং চলচ্চিত্র সামলোচক হবেন এমন কোন ব্যক্তি যিনি চলচ্চিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখেন। বাংলাদেশে হলিউড, বলিউড প্রভৃতির মত চলচ্চিত্র সমালোচনার প্রফেশনাল ধারা এখনো তৈরি হয়নি।

চিত্র-সমালোচনার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা:

এ পর্যায়ে গণমাধ্যমের প্রচারণা মডেলের ম্যাজিক বুলেট তত্ত্ব, দ্বি-ধাপ প্রবাহ তত্ত্ব ও আলোচ্যসূচী নির্ধারণ তত্ত্ব- এই তিনটি তত্ত্বের আলোকে চিত্র সমালোচকের কাজ ও প্রভাব ব্যাখ্যা করবো। ১৯২০ সালে গণমাধ্যম সম্পর্কিত ম্যাজিক বুলেট তত্ত্বটি আসে। এ তত্ত্বে বিশ্বাস করা হতো, ইনজেকশনের সুঁই যেভাবে চামড়া ভেদ করে, তেমনিভাবে গণমাধ্যমের বার্তাও শ্রোতাকে ঠিক তেমনিভাবে আঘাত করে। এভাবে গণমাধ্যম দর্শক-শ্রোতাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। [গণযোগাযোগ তত্ত্ব ও প্রয়োগ: শাওন্তী হায়দার, সাইফুল সামিন]

এ তত্ত্ব অনুসারে বলা যায়, চলচ্চিত্র সমালোচকগণ চলচ্চিত্র বিষয়ে তাদের মতামত গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন এবং এই মতামত ম্যাজিক বুলেটের মতো দর্শক-শ্রোতাদের প্রভাবিত করে। গণমাধ্যম গবেষকরা দর্শকের আচরণ সম্পর্কিত অনেক গবেষণা করে দ্বি-ধাপ প্রবাহ তত্ত্ব দিয়েছেন। এ তত্ত্ব অনুসারে গণমাধ্যমের প্রভাবিত করণের বার্তা সরাসরি দর্শকের কাছে না গিয়ে প্রথমে 'অপিনিয়ন লিডার' বা 'মতমোড়লদের' কাছে যায়। তারা সে বার্তা শোনেন, পড়েন, বোঝেন এবং যাদের কাছে তারা ইনফ্লুয়েন্সিয়াল বলে পরিচিত তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেন।

চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই অপিনিয়ন লিডারের ভূমিকাটি পালন করে চিত্র সমালোচকরা। চলচ্চিত্র দেখে তারা প্রথমে তাদের অভিমত দেন। দর্শকরা তাদের অভিমত নিয়ে তারপর চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়। তৃতীয় যে তত্ত্বটি, আলোচ্যসূচী নির্ধারণ তত্ত্ব, এটি সবসময় সরাসরি চিত্র-সমালোচকের বিষয় হয় না। এ তত্ত্ব অনুসারে গণমাধ্যম কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে একটি এজেন্ডা ঠিক করে সংবাদ প্রকাশ করে তথা প্রচারণা চালায়। এতে গণমাধ্যমের এই আলোচ্যসূচী এক পর্যায়ে দর্শকের আলোচ্যসূচীতে পরিণত হয়।

এ তত্ত্ব অনুসারে অনেক সময় চিত্র-সমালোচক কোন ছবির প্রমোশনের জন্য ছবির পক্ষে প্রচারণা চালালে তা আলোচ্যসূচী নির্ধারণ তত্ত্বে পড়বে। এক্ষেত্রে সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম সহায়ক হিসেবে কাজ করে। তবে মূল ধারার গণমাধ্যম তাদের অনলাইন, সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিন এর জন্য চিত্র সমালোচক নিয়োগ করেন। পরে এই চিত্র সমালোচকদের দেয়া তথ্য অনুসারে গণমাধ্যম তাদের চলচ্চিত্র বিষয়ক আলোচ্যসূচী নির্ধারণ করেন। ফলে চলচ্চিত্র নিয়ে গণমাধ্যমের এই বিষয়টি দর্শকদের আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয় এবং এভাবে দর্শক চিত্র-সমালোচকদের কাজের দ্বারা প্রভাবিত হন।

পরিচালকের দৃষ্টিতে সমালোচক:

চলচ্চিত্র সমালোচকদের কথা দর্শকদের ওপর প্রভাব ফেলে একথা সত্য। কিন্তু তা কি চলচ্চিত্র পরিচালকদের ওপরও প্রভাব ফেলে? প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় বলেছেন, সমালোচনা তার ছবির ওপর কোনই প্রভাব ফেলেনি। এক্ষেত্রে তার কথা, "সমালোচনার প্রভাব যদি আমার রচনায় বিস্তৃত হয়ে থাকে তবে তা হয়েছে পথের পাঁচালির পর থেকে। কিন্তু আজও অধিকাংশ চিত্র সমালোচক বলে থাকেন যে, পথের পাঁচালিই আমার শ্রেষ্ঠ ছবি, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে- তাহলে কি সমালোচনার প্রভাব কি আমার শিল্পের পক্ষে কল্যাণকর হয়নি?" (বিষয় চলচ্চিত্র: সত্যজিৎ রায়)

সত্যজিৎ রায়ের চোখে চিত্র সমালোচকের বড় ধরনের কাজ রয়েছে। তার মতে, "সমালোচক কাজের মত কাজ করেন তখনই যখন তিনি পরিচালক ও দর্শকের মাঝখানে একটি সেতু বন্ধন স্থাপন করতে সক্ষম হন। এটাই হলো তার প্রধান কর্তব্য। সমালোচককে সমঝদার হতেই হবে, কারণ সমালোচনাই তার জীবিকা। কিন্তু দর্শকদের সমঝদার হবার একমাত্র ব্যক্তিগত তাগিদ ছাড়া অন্য কোন তাগিদ নেই। যেখানে ভালো ছবি সহজ ছবিও বটে, সেখানে সমালোচকের দায়িত্ব কম- কারণ দর্শক বিনা সাহায্যেই সে ভালোয় পৌঁছতে পারেন। কিন্তু এমন ভালো ছবিও হয়ে থাকে, যার রসের আস্বাদ একমাত্র প্রকৃত গুণগ্রাহীরই লভ্য। সেখানে সমালোচকের এগিয়ে এসে শিক্ষকের ভূমিকাটিও গ্রহণ করত হয়।"

সমালোচক পরিচালকের সঙ্গে পা ফেলে এগিয়ে গিয়ে তার মূল সূত্রটি হৃদয়ঙ্গম করে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেবেন। তবে ছবি চলা না চলার বিষয়ে চলচ্চিত্র সমালোচকের হাত থাকার বিষয়ে সত্যজিৎ রায় আপত্তি জানিয়েছেন।

চলচ্চিত্র সমালোচনা হতে পারে সম্ভাবনাময় পেশা:

চলচ্চিত্র সমালোচনার সঙ্গে সঙ্গে বক্স অফিস পর্যালোচনাও যে একটা পেশা হতে পারে তা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এখনো হয়তো ভাবা হয়নি কিংবা কেউ সেই সাহসটি এখনো দেখাননি। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, চলচ্চিত্র শিল্পে বক্স অফিস বলতে চলচ্চিত্র ব্যবসার হালচাল যে স্থান থেকে সবিস্তর জানা যায় তাকে বুঝায়। কোন নির্দিষ্ট ‍মুভির টিকেট সংখ্যা বিক্রির পরিমাণ, কত টাকা আয় হলো ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্যাদি বক্স অফিস থেকে পাওয়া যায়।

এবারে একটি মজার তথ্য দেই। মুভি ক্রিটিক জব আউটলুক ও স্যালারি ইনফরমেশন বিষয়ে। দ্য ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্টাটিসটিকস (বিএলএস) এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৫ সালে চলচ্চিত্র সমালোচক এবং বিনোদন মাধ্যম নিয়ে লেখালেখি করেন এমন লেখকদের বাৎষরিক গড় বেতন হিসেব করা হয়েছে ৬০,২৫০ মার্কিন ডলার। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে উন্নত বিশ্বে এটি কেবল শখের বা আগ্রহের বিষয়ই নয়, একটি চাহিদাসম্পন্ন পেশা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে চলচ্চিত্র সমালোচনার কাজটি।

অনলাইন ফিল্ম রিভিউ:

সংবাদপত্র বা ম্যাগজিনের পাশাপাশি অনেক বিশেষায়িত ওয়েবসাইট রয়েছে চলচ্চিত্র সমালোচনার জন্য। রোটেন টমেটোস (Rotten Tomatoes) বা মেটা ক্রিটিক (Metacritic), বা ফিল্ম ক্রিটিসিজম জার্নাল (filmcriticismjournal.org) এর মত কিছু ওয়েবসাইট মুভির পর্যালোচনা, সমালোচনা করে থাকেন। একই সাথে তারা প্রতিটি মুভির একটা রেটিং পয়েন্ট দেয় তারা। এখান থেকে আবার সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিন তথ্য নিয়ে তাদের কাগজে ছাপায়।

ব্লগিং:

উৎসাহী চলচ্চিত্র সমালোচকদের, যারা চলচ্চিত্র নিয়ে লেখালেখিতে একদমই নতুন, কিংবা কোন বড় ট্যাগলাইন নেই, তাদের জন্য একটি নতুন মাত্র দিয়েছে ব্লগিং। তারা ব্লগে তাদের মতামতগুলো দিচ্ছেন। যদিও এগুলো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক বাজারে বড় কোন গুরুত্ব বহন করে না।  কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে কমিউনিটি লেভেলে এসব রিভিউর বেশ প্রভাব রয়েছে। কারণ এসবের ওপর ভিত্তি করে অনেকেই সিনেমাহলমুখী হন কিংবা বিমুখ।

চলচ্চিত্র সমালোচনার ক্ষেত্রে করণীয়:

চলচ্চিত্র সমালোচনা করতে গেলে প্রধান যে বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখতে হয় তা হলো চলচ্চিত্র দেখা। এছাড়া কোন দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে সমালোচনা করতে চাইলে সেখানকার চলচ্চিত্র শিল্পের অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হব। প্রাথমিক ধারণা বলতে সেখানকার চলচ্চিত্রের বাজার, চলচ্চিত্র প্রেমীদের রুচি, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, চলচ্চিত্রের নির্মাণ কৌশল, প্রযুক্তি, নির্মাতাদের দক্ষতা ও সীমাবদ্ধতা সর্ম্পকে জানতে হবে। তবে এটিই আবার শেষ কথা নয়। চলচ্চিত্র সমালোচনার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক নিয়ম আছে সেগুলোও মেনে চলতে হয়। যেমন-

১. চলচ্চিত্র সমালোচনার ক্ষেত্রে প্রথমে যে কাজটি করতে হয় তা হল দু-তিন লাইনে নিজের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে মতামত লিখতে হবে।
২. সিনেমার নাম, মুক্তির সাল, পরিচালকের নাম, মূল অভিনেতা-অভিনেত্রী, কী ধরনের সিনেমা- কমেডি, হরর, থ্রিলার ইত্যাদি অর্থাৎ সিনেমার মৌলিক কিছু তথ্য দিতে হবে এখানে এসে।

৩. বিভিন্ন আন্তজার্তিক মুভি রেটিং সাইট যেমন IMDb, Rotten Tomatoes ইত্যাদির রেটিং দিলে চলচ্চিত্র সমালোচনাটি আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। (যে সব ছবির রেটিং এইসব সাইটে কম থাকে বা থাকেনা সেইসব ছবির কথা ভিন্ন যেমন বাংলাদেশের অনেক ছবিরই রেটিং এইসব সাইটে পাওয়া যায়না।)
৪. এই পর্যায়ে চলচ্চিত্রের টুইস্ট যেন না প্রকাশ পায় এভাবে ছোট করে কাহিনী সংক্ষেপ লিখতে হবে।
৫. সিনেমাটি ভাল লাগলে কেন ভাল লেগেছে? খারাপ লাগলে কেন খারাপ লেগেছে? বিশেষ কোন দৃশ্য বা কোন ডায়ালগ ভাল লাগলে মোট কথা নিজের মতামতটা এখানে স্পেসিফিক করে বলতে হবে।
৬. সিনেমার কলাকুশলীদের পারফরমেন্স নিয়ে লিখতে হবে এখানে।
৭. সব শেষ যদি কোন ট্রিভিয়া বা দুর্লভ তথ্য থাকে তা সংযোজন করা যেতে পারে প্রভৃতি।

বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সমালোচনা:

বিগত চার দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নানান চড়াই-উৎড়াই এর মধ্য দিয়ে গেছে। নানান উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়ে বর্তমানে এটি মোটামুটি একটি অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে যদি তুলনা করি তবে অনেক পিছিয়েই আছি আমরা। আশার কথা বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্র যাই নির্মিত হোক না কেন তা নিয়ে পড়াশোনা, গবেষণা হচ্ছে বেশ ভালেই। অনুপম হায়াৎ, ফাহমিদুল হক, মঈনুল হাসান বাংলাদেশী কয়েকজন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র গবেষকের নাম। তারা বর্তমানে চলচ্চিত্র নিয়ে বেশ ভালো কাজ করছেন। কিন্তু তা হলেও একটি ক্ষেত্রে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য কোন অর্জনই নেই আমাদের। সেটি হচ্ছে চলচ্চিত্র সমালোচনা। বাংলাদেশে হয়তো এখন চলচ্চিত্র নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, পড়াশোনা হচ্ছে কিন্তু মৌলিক নিয়ম মেনে চলচ্চিত্র সমালোচনা হচ্ছে কয়টা?

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে যদি আমরা তাকাই তবে দেখতে পাবো তাদের চলচ্চিত্রের বাজার অনেক বড়। তাদের অফিসিয়াল বক্স অফিস ঘাটলে দেখা যায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে এই চলচ্চিত্র নিয়ে। তাদের দেশে আন্তজার্তিক মানের চলচ্চিত্র সমালোচকও আছে অনেক। তারাণ আদার্শ, অনুপমা চোপড়া, রাজিব মাসন্দ ভারতের বিখ্যাত কয়েকজন চলচ্চিত্র সমালোচকের নাম। তারা একই সাথে চলচ্চিত্র সমালোচক এবং বক্স অফিস বিশ্লেষক। অর্থাৎ তারা পেশা হিসেবেই নিয়েছে এটিকে। বর্তমানে ভারতের অনেক তরুণই চলচ্চিত্র সমালোচনাকে পেশা হিসেবে আগ্রহী। এটি একদিকে যেমন তাদের চলচ্চিত্রের প্রমোশনে ভূমিকা রাখছে অন্যদিকে কর্মসংস্থানের একটা নতুন পথ সৃষ্টি করছে।

বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সমালোচনার দিকে তাকালে দেখা যাবে এখানে সমালোচনা হয় অনেকটা নিজের ভাল লাগা, খারাপ লাগা বর্ণনা করার মাধ্যমে। ভারতে যেমন রেটিং করে ব্যাসিক নিয়ম মেনে চলচ্চিত্র সমালোচনা দেখা যায় তার বালাই এখানে নেই।

বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সমালোচনার সবচেয় বড় যে প্রতিবন্ধকতা তা হলো ঢালিউডের অফিসিয়াল কোন বক্স অফিসই নাই। অর্থাৎ বক্স অফিসের হিসাব বিশ্লেষণ করে যে কেউ এখানে রিভিউ লিখবে সে সুযোগটা এখানে নেই। তাই এখানে কেউ চলচ্চিত্র সমালোচনাকে পেশা হিসেব নেওয়ার কথা চিন্তাও করেনা। যে গুটিকয়েক মানুষ রিভিউ লিখে তা নিতান্তই মনের খোরাক মেটানোর জন্য বা শখের বশে। অথচ সঠিক পরিচর্যা ও শিক্ষার মাধ্যমে চলচ্চিত্র সমালোচনা দারুণ একটি আধুনিক পেশা হতে পারতো।

সিনেমা প্রমোশনে চলচ্চিত্র সমালোচকদের ভূমিকা:

ভারতের দিকে যদি দৃষ্টি দিই তবে সেখানে দেখা যাবে চলচ্চিত্রের প্রচারণায় চলচ্চিত্র সমালোচকরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটি ছবির টিজার মুক্তি পাওয়ার দিন থেকেই তাদের প্রচারণা শুরু হয়। এরপর তারা ট্রেইলার মুক্তি, চলচ্চিত্র মুক্তি সব ক্ষেত্রেই সরব থাকে। চলচ্চিত্র একেকটা দিন পার করে আরা তারা তাদের ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় সেই চলচ্চিত্রের ইনকাম, দর্শক কেমন দেখছে সে সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরে থাকে। এইসব বিষয়গুলো সাধারণ দর্শক অনুসরণ করে এবং প্রভাবিত হয়। আর এ বিষয়টা তো প্রমাণিতই যে চলচ্চিত্রের প্রচারণা চলচ্চিত্রের ব্যবসা অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়।

পক্ষান্তরে বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের দিকে এসব বিষয় খুঁজেই পাওয়া যাবেনা। যারা তাও কিছু চলচ্চিত্র রিভিউ করেন মানেন না নিয়ম, ধার ধারেন না কোন প্রচারণার। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো প্রচারণা অভাব। বাংলাদেশেও যদি ভালো চলচ্চিত্র সমালোচক তৈরি হয় তবে তা আবশ্যই চলচ্চিত্র শিল্পকে ত্বরান্বিত করবে বলেই আশা করা যায়।

ভারতে চলচ্চিত্র সমালোচনা ভিত্তি লাভ করলেও বাংলাদেশে কেন হচ্ছে না?

১. ভারতে সুপ্রতিষ্ঠিত একটি বক্স অফিস আছে। বাাংলাদেশে তাতো নেই-ই বরং যে আনঅফিসিয়াল একটা বক্স অফিস আছে তারা হিসাবে প্রচুর ভুল পরিলক্ষিত হয়।
২. ভারতে চলচ্চিত্র সমালোচনাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার প্রবণতা দিনদিন বাড়ছে। নানাবিধ কারণে বাংলাদেশে পেশা হিসেবে নেওয়ার কোন প্রবণতা নেই।
৩. সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন বা ব্রডকাস্ট মিডিয়া চলচ্চিত্র সমালোচক তৈরি কিংবা যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করছে।

চলচ্চিত্র সমালোচনার প্রসারে এবং সমালোচক তৈরিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কেন পথিকৃত হচ্ছে না?

আলোচনায় আগেই বলেছি, বিশ্বের বিখ্যাত সব চলচ্চিত্র সমালোচক বা ফিল্ম ক্রিটিকরা কোন না কোন অনলাইন, পত্রিকা বা ম্যাগাজিনের হয়ে কাজ করতেন এবং এখনো করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনলাইন বা পত্রিকা তাদের বিনোদন মাধ্যমের জন্য আলাদা এমপ্লোই রাখলেও তারা সেই মানের চলচ্চিত্র সমালোচক হয়ে উঠছেন না, যাদের কথা ধরে সাধারণ দর্শক সিনেমা হলে যাবেন কিংবা তাদের সূত্র ব্যবহার করে অন্যান্য গণমাধ্যম তাদের সংবাদ প্রস্তুত করবে।

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তাদের বিনোদন বিভাগের জন্য আলাদা ডিজাইনের একটা সাইটই রেখেছেন। নামটাও সুন্দর- গ্লিটজ। যতদূর জানি এই বিভাগে ভালো লোকও কাজ করে। কিন্তু তাদের কাজের মান আন্তর্জাতিক ভাবে কিংবা পার্শ্ববর্তী দেশের সাথেও তুলনা করা যায় না। একই কথা বাংলাদেশের প্রথম সারির পত্রিকা প্রথম আলোর জন্যও। আমরা এখানে হলিউড, বলিউড, টালিগঞ্জ এর বক্স অফিস নিয়ে হৈচৈ-আলোচনা দেখলেও ঢালিউড নিয়ে আলোকপাত কম দেখি। যা দেখি তা আশানুরূপ না।

আমরা দেখি যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর তার আরো কিছু বিভাগের জন্য বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উদ্যোগগুলো পাঠক হিসেবে আমাদের কাছে দৃশ্যমান না। বিডিনিউজ শিশুদের নিয়ে তাদের হ্যালো সাইটের জন্য ইউনিসেফের সাথে, সরকারের বিভিন্ন উইং এর সাথে একজোটে কাজ করছে। তাহলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কিংবা অন্য কোন উদ্যোগক্তাদের সাথে মিলে ঢালিউডের প্রমোশনের বিষয়ে, একটা অফিসিয়াল বক্স অফিস দাঁড় করানোর বিষয়েও উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা সেটা কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবে আশা রাখছি। তাহলে এটা একটা পথিকৃৎ ও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পাশাপাশি চলচ্চিত্র সমালোচনাকে একটা পেশা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে ও এর  ভিত্তি দাঁড় করাতে বিডিনিউজসহ অন্যান্য গণমাধ্যম কাজ করতে পারে। তারা 'চলচ্চিত্র সমালোচক'  নিয়োগ দিতে পারে।  এছাড়াও চলচ্চিত্র গবেষকদের বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে আরো ভালো ভালো উদ্যোগও নিতে পারে।

যাইহোক, আলোচনার লাগাম টানা যাক এবার। শেষ কথা হলো- চলচ্চিত্রে সাহিত্য, চিত্রকলা, আলোকচিত্র, সংগীত, নাট্যকলা, সম্পাদনা ইত্যাদি বহু মৌলিক মাধ্যমের মিলন ঘটে। চলচ্চিত্র এতটাই  বিস্তৃত একটা মাধ্যম যে এর সামাজীকরণের ভূমিকাও অন্যান্য যেকোন মাধ্যমের তুলনায় অনন্য। নতুন কোন চলচ্চিত্র মুক্তি পেলেই আমরা দেখি ছেলে-বুড়ো নির্বিশেষে সবাই প্রেক্ষাগৃহে তা দেখতে যায়। যেন এটা একটা উৎসব। বলাই বাহুল্য মানুষের উপর চলচ্চিত্রের প্রভাবও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নানাবিধ কারণে আমদের পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে চলচ্চিত্রের প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ। এজন্য অবশ্যই চলচ্চিত্র নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা হওয়া উচিত, এজন্য মানসম্মত সমালোচক তৈরি হওয়াটা আগে জরুরী। আর সম্ভাবনাময় পেশা হিসেবে এর তাৎপর্যের কথা তো জানালামই। ঢালিউড এগিয়ে যাক, অফিসিয়াল বক্স অফিস পাক, ভালো সমালোচক তৈরি হোক, বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের প্রসার ও উৎকর্ষ  ঘটুক এই প্রত্যাশায় শেষ করছি।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ: লেখাটি প্রস্তুতে আমাকে পরামর্শ দিয়ে ও বিভিন্ন তথ্যাদি দিয়ে সহায়তা করেছেন আইরিন আপু ও বন্ধু সোয়াইব আহমেদ।