‘ইনোসেন্স অফ মুসলিমস’ নামের বস্তাপচা ছবিটা যেভাবে হেডলাইনে এনে দুনিয়া জুড়ে রক্তপাত

কালবৈশাখী ঝড়
Published : 22 Sept 2012, 06:00 AM
Updated : 22 Sept 2012, 06:00 AM

আরেকটি রক্তাক্ত শুক্রবার পার হল। শুধু পাকিস্তানেই বিক্ষোভে ১৯ জন নিহত হল। বর্বর পাকিস্তানিরা রক্তপাতের জন্য তৈরিই ছিল, কারন সরকার বিক্ষোভে সুবিধার জন্য এই শুক্রবার সাধারন ছুটি ঘোষনা করে। (পাকিস্তানে উইকলি অফ রবিবার) ঢাকাতেও হয়েছে, শুধু বাইতুল মোকাররম গেট কেন্দ্রীক।

কোন স্টুডিওতে তৈরি না। নকুলা নামের এক ড্রাকুলার একটা বস্তাপচা হোম মেইড ফিচার ফিল্ম, আসলে একটি হোম মেইড ফালতু ভিডিও ছবি। ছবির বিভিন্ন অংশে কাঁচা হাতে নবীজি (সঃ) – কে বিদ্রুপ। আমেরিকার ছোট দুটি হলে মুক্তি দেয়া হয়েছিল, জুন মাসে। দুর্বল নির্মাণশৈলী নিম্নমানের অভিনয় ইত্যাদির কারনে তেমন কোন দর্শক না আসাতে হল ওয়ালারা ছবিটি ফিরিয়ে দেয়। ছবির ট্রেলার ইউটিউবে দেয়া হয়েছিল, ছবির কোন পাত্তা নাই।- ইউটিউবে দেয়া ছবির ট্রেলারেরও তেমন কোন হিট নাই। এইভাবে পার হল ৪ মাস। ভুলেই গেছিল সবাই।

এরপর এই মাসের শুরুতে ছবিটির ট্রেলারে উস্কানিমূলক ভাবে আরবি সাবটাইটেল যোগ করে ১৪ মিনিটের কাটপিস আবার আপলোড করা হল, ফেসবুকে ব্লগে শেয়ার করলো। এর পরও হিট নাই। রিএকশন তেমন নাই। শয়তান কি এত সহজে দমে যাবে?

মিশরের এক কট্টর মৌলবাদি চ্যানেল "আন-নাস" টিভির টক শো তে এই কাটপিস দেখানো হল, দেয়া হল জ্বালাময়ি বক্তব্য। এর পর দুএকটা মসজিদ ভিত্তিক খন্ড বিক্ষোভ, কিন্তু হালকা। শুধু মিশরের আলেকজান্ড্রিয়া সহ দুএকটি শহরে।

নাহ.হ ..না। হাল .. হাল ছাড়া চলবে না … রক্তের স্বাদ না পেলে শয়তান জাগ্রত হয় না। গৃহযুদ্ধ শেষে নাজুক আইন-শৃক্ষলার দেশ লিবিয়ার একটি শহর বেনগাজি, যুদ্ধ শেষ হলেও এখনো অনেকের হাতেই অস্ত্র। সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীর দল মেশিন গান, রকেট চালিত গ্রেনেড সজ্জিত হয়ে, পরিকল্পিত হামলা, হত্যা করলো মার্কিন রাষ্ট্রদুত সহ ৪ জনকে। নিহতরা হয়তো জানেই না ৪ মাস আগে কোন ফালতু ছবি কে কবে বানিয়েছিল। বিক্ষোভ করে মাইকে ঘোষনা করা হল, এই ছবি (ট্রেলার) দেইখা মনে খুব রাগ হওয়াতে, এই কাজ করা হইছে।

এর পরের কাহিনী সবার জানা। মানুষ মেরে ফেলেছে, নিশ্চয় সিরিয়াস কিছু। দুনিয়া জুড়ে মাওলানারা দলে দলে, কাতারে কাতারে, … ইসলাম গেল, ইসলাম গেল .. প্রতিদিন মানুষ মরছে, এরা শহিদ। ইসলাম রক্ষা করতে হবে। হুজুরেরা ইউটিউব দেখছে কিনা, .. ইউটিউব জিনিস টা কি ভাই?

যে আরব এই পাপিষ্ঠের ছবিটার উপর পবিত্র ভাষা আরবি সাবটাইটেল যোগ করলো, রি আপলোড করলো, শেয়ার করলো, মিশরের মৌলবাদী চ্যানেলে একটি টকশো -তে এটা দেখিয়ে উস্কানি দিল। এই পাপিষ্ঠদের সে দেশের টিভি দর্শকরা অনেকটা হিরোইক ভাবেই নিল। পুরো ছবিটা কেউ দেখেনি, পাবে কৈ? ইউটিউব কি জিনিস, ট্রেলার আর ছবি কি তফাত? সেটা জানার দরকার নাই।

৪ মাস আগে মৃত ফালতু জিনিসটাকে আবর্জনার গর্থ থেকে বের করে আরবি যোগ করে ফোকাসে আনা হল। নোংড়া কন্টেন্ট নোংড়া ভাবে হাইলাইট করা হল। আবার এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ..! রক্তপাত চলছেই … হযরত মোহম্মদ (সঃ) অসম্মান, কারা বেশী করছে?

শান্তির ধর্ম আমদের ইসলামকে বিশ্ববাসী এখন কি ভাবছে?