রিজভি-গয়েশ্বর মাথা ঠিক আছে তো …

কালবৈশাখী ঝড়
Published : 7 Nov 2014, 06:48 AM
Updated : 7 Nov 2014, 06:48 AM

কী বললেন? – "পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর জেলখানায় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ওই সময়ে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগের নেতারা। আর জিয়াউর রহমান ওই সময়ে বন্দি ছিলেন। জিয়াউর রহমানের কৃপায় শেখ হাসিনা দেশে ফেরার অনুমতি পান। ওনার অনুমোদন ক্রমে আওয়ামী লীগ আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছিল। শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেয়া ছিল জিয়ার একটি ভুল"।

ও তাহলে অনুমতি দেয়া না দেয়ার একটা ব্যাপার ছিল? ৬১ জন সহ মুজিবকে নির্বংশ করা, জেলে বাকি মাথাগুলো খতম করার পর আর দু-চারজন তো বাকি ছিল, অলিখিত মৃত্যুপরয়ানা, অলিখিত হুলিয়া ছিল তাহলে? তা না হলে একজন বৈধ সিটিজেনের অনুমতি নেয়ার প্রশ্ন কেন গয়েশ্বর বাবু?

তাহলে স্বীকার করছেন জিয়া ছিল সবকিছুর মাস্টারমাইন্ড। মুজিবকে নির্বংশ করা, অলিখিত মৃত্যুপরয়ানা, অলিখিত হুলিয়া! সবকিছু বহাল রাখা তার পরিকল্পনায়ই। সত্য স্বীকার করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

জিয়া বন্দি ছিলেন? বন্দি ছিলেনটা কি জিনিস? ভয়ে ঘর থেকে বের না হওয়াটা বন্দি? ভন্ডামি আর কত? পঁচাত্তরের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগের রাতেই তো অলিখিত ভাবে সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ বনে যান। ১৫ই আগষ্ট সকালে জিয়ার বাসভবনে – "স্যার ব্যাড নিউজ, প্রেসিডেন্ট ইজ ডেড। দাড়ী সেভ করতে করতে জিয়ার নির্লিপ্ত জবাব – "সো হোয়াট! ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার …"।

আর সেই রাতে মুজিবের ফোন পেয়ে 'কাপুরুষ' কর্নেল শফিউল্লা পাইক পেয়াদা ডেকে দেখে কেউ নেই, কেউ আসে না, নিচতালার ড্রাইভার টা পর্যন্ত নেই, গেটের দারোয়ানটাকেও দেখা যাচ্ছে না। কেউ ফোন রিসিভ করছেনা! 'কাপুরুষ' কর্নেল বাধ্য হয়ে মুজিবকে বললেন "স্যার! আমি কিছুই করতে পারছিনা, আপনি এক কাজ করেন, বাসা থেকে পালিয়ে যান"।

পরে অবশ্য 'কাপুরুষ' কর্নেলকে দয়া করে না মেরে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। পঁচাত্তরে মুজিব হত্যাকান্ডের কয়েকঘন্টার মধ্যেই জিয়া চিফ অব স্টাফ! কে বানালো তাকে সেনা চিফ? বলতে পারলেন না কেন "খুনি আফিসারদের সাথে আমি নেই, ওদের দেয়া দেয়া প্রমোশন-পদ নিব না।"

জিয়াউর রহমান জেল হত্যার সময়ে বন্দি ছিলেন? বাইন্ধা রাখছিল? না বাসায় ছিলেন? টেলিফোন তো চালুই ছিল। তার দলের সেই খুনির দল মিরজাফর মোসতাককে নিয়ে বঙ্গভবনে, পরাজয়ের আভাস পেয়ে বুদ্ধিজীবি হত্যার অনুকরনে (পরাজয়ের আগে মাথাগুলোকে খতম করা) জেল হত্যার জন্য খুনিদের জেলে পাঠায়। জেলার ঢুকতে না দিলে প্রথমে ফারুকের ফোন, পরে কাজ না হলে মোসতাক নিজেই জেলারকে ফোন – "আমি প্রেসিডেন্ট বলছি, ওদেরকে অস্ত্র সহ ভেতরে যেতে দিন, আমি অর্ডার করছি।"
তখন ওই সময়ে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগের নেতারা, ওরাই (নিজেদের) মেরেছে (বা আত্নহত্যা করেছে) বলে আর লোক হাসাইয়েন না।