লক্ষ লক্ষ টাকা ফি নিয়েও হাজিদের জন্য অমানবিক ব্যবস্থাপনা

কালবৈশাখী ঝড়
Published : 25 Sept 2015, 04:01 PM
Updated : 25 Sept 2015, 04:01 PM


অধিক অর্থ হাসিলের আশায় প্রতি বছরই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হাজি আনছে।

"আল্লাহ মহান, তারা সৌভাগ্যবান এবং জান্নাতে যাবে"! এসব কথা অব্যাবস্থাপনা, অবহেলা থেকে দৃষ্টি সরানোর দায়সারা কথাবার্তা।
ওরা লক্ষ লক্ষ টাকা ফি নিয়েও হাজিদের অমানুষিক ভাবে গাদাগাদি করে রাখে, চরম তাচ্ছিল্লের সাথে নির্মান যন্ত্রপাতি ফোল্ডিং না করে অবহেলামুলক ভাবে খাড়া করে রাখে। দুর্ঘটনা হলে বলে আল্লার ঘর, ওরা বেহেস্তে চলে গেছে।
নন-আরব হাজিদের ওরা মানুষই বলে মনে করে না। হজে চরম অব্যাবস্থাপনা বছরের পর বছর। প্রতি বছরেই কমবেশি পদদলিত হয়ে, আগুনে পুড়ে হাজি মরছে। অথচ প্রতি বছর হাজিদের থেকে ফি বাবদ ৪ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। কিন্তু অপচয়ের মাত্রা ভয়াবহ

ফ্রান্স সফরে একটি গোটা বিচ সহ পর্যটন এরিয়াকেই সৌদি প্রিন্সের জন্য খালি করতে হয়। সৌদি বাদশার জন্য একটা গোটা হোটেলই ভাড়া করা লাগে। সোনায় মোড়ানো টয়লেট গিফট করে। এরা লাসভেগাসে জুয়ার আড্ডায় মিলিয়ন ডলার নষ্ট করছে। আর কোটি কোটি ডলার ফি নিচ্ছে পিলগ্রিমসদের কাছ থেকে। সেই অনুযায়ি কতটুকু সার্ভিস তারা দিচ্ছে? বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ হলেও কখনোই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আসা পিলগ্রিমদের থেকে কোন ফি বা সার্ভিস চার্জ নেয় না। প্রতি বছর লাখ লাখ বিদেশি এজতেমায় আসে, লক্ষাধিক ভারতীয় ও নেপালি লাংগলবন্ধে আসে স্নান করতে, কারো কাছ থেকে একটি পয়সাও ফি নেয়া হয় না। তাদেরকে বিনা মূল্যে সম্মানের সাথে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া হয়।

আপডেট – ২৫/৯/২০১৫
৩৫০ জন নিরাপত্তা কর্মীসহ এক ভিআইপি যুবরাজের জন্য হাজিদের ব্যবহার করার তিনটি রাস্তার দু'টি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়, একারনেই স্ট্যাম্পিডের ঘটনা।
এই অভিযোগ সত্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৭১ টিভির জেদ্দা সংবাদদাতাও এই খবরটিকে সমর্থন করতে দেখলাম। আজ প্রথমআলো পত্রিকা বলছে – ভয়াবহ ওই পরিস্থিতির হাত থেকে মা সহ বেঁচে গেছেন লিবিয়ার এক হাজি আহমেদ আবু বকর (৪৫)। তিনি ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, 'প্রচণ্ড ভিড় ছিল। পুলিশ অজ্ঞাত কারনে প্রবেশ ও নির্গমন ফটক বন্ধ করে দিয়েছিল।' মক্কা ভিত্তিক ইসলামিক হেরিটেজ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ইরফান আল-আলাবি বলেন, প্রচুর পুলিশ ছিল, কিন্তু তাঁরা যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন না। এমনকি বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হাজিদের সঙ্গে কথা বলার মতো ভাষাজ্ঞানেরও অভাব ছিল তাঁদের।'

সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেনারেল মনসুর আল-তুর্কি ও স্বীকার করেন তিনটি পথের দুইটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়, মিনা থেকে জামারায় পাথর ছোড়ার জন্য লাখো হাজি চলেন কাতারে কাতার। হঠাৎ দুটি সড়কের সংযোগস্থল থমকে যায়। কিন্তু পেছন থেকে একই গতিতে আসা হাজিরা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তাই তাঁরা সামনেই অগ্রসর হতে থাকেন। ফলে মাঝখানের হাজিরা ভিড়ে চাপা পড়েন ও পদদলিত হয় শত শত মানুষ। সামনে বা পেছনে যাওয়ার কোনো উপায় না থাকায় সেখানকার পরিণতি ছিল ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যাওয়া।
সূত্র – রয়টারস ও প্রথম আলো।

লেবাননের আরবি "দৈনিক আদদিয়ার" এব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছে,
সৌদি যুবরাজ শাহজাদা মুহাম্মাদ বিন সালমানের গাড়ি বহরই প্রাণঘাতী এই বিপর্যয় সৃষ্টির মূল কারণ।
সকালে ২০৪ নম্বর সড়ক থেকে ২২৩ নম্বর সড়কের সংযোগস্থল দিয়ে রাজপুত্রের গাড়ীবহর পার হওয়ার সময় হঠাৎ করেই কিছুক্ষণের জন্যে থামিয়ে দেয়া হয় হাজিদের মিছিল। তার গাড়ি বহর ও নিরাপত্তায় দেহরক্ষীদের গাড়ীবহর মিনার রাস্তা অতিক্রম কালে হাজী চলাচলের দুটি রাস্তামুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এরপই হাজিরা ভিড়ে চাপা পড়েন। সৌদি সরকার এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হজের সময় মিনায় সালমানের সফর বা তার উপস্থিতি সংক্রান্ত খবর প্রচার নিষিদ্ধ করেছে বলে লেবাননিজ দৈনিকটি উল্লেখ করেছে।