বেনাপোল। রাত গভীর হচ্ছে, আধো অন্ধকারেও শত শত সাংবাদিক, বিভিন্ন চ্যানেলের নামাঙ্কিত ভারি টিভি ক্যামেরাসহ সাংবাদিকও দেখা যাচ্ছে। নুর হোসেনকে আজ আনা হচ্ছে। উত্তেজনা .. নাটকীয়তা! তারচেয়ে চরম নাটকীয়তা চলছে নেপত্থে ঢাকায়। স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয় চেয়েছিল অনুপচেটিয়ার মত সম্পুর্ন গোপনে নুরহোসেনকে নিয়ে আসবে। পুলিশ র্যাব সবাই রাজী, হ্যা গোপনেই হোক।
কিন্তু গোল বাধলো র্যাবের একটি আবদার তাদের হাতে প্রথম একদিন থাকবে নুর। পুলিশ রাজী না, মন্ত্রীও রাজী না। কারনটা স্পষ্ট। এই মামলায় ৩২ জন আসামীই র্যাব, অনেক সেনা সদস্য সহ ২২ জন র্যাব জেলে, ৮ জন চাকরি ছেড়ে পলাতক। একে কোন অবস্থাতেই র্যাবের হাতে দেয়া যায় না। সরাসরি না করে দিলেন মন্ত্রী।
এবার ফোন আসলো সেনা সদরদফতর থেকে। কিন্তু পুলিশ মন্ত্রী অবিচল, কোন অবস্থায়ই দেয়া যায় না। সব নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে, র্যাব প্রধান বেনজীর আগেই সাফ বলে দিয়েছে "আমার রেঞ্জের বাইরে .. আমার কিছুই জানা নেই" তাই বাধ্য হয়ে গোপনীয়তা পাবলিক করা হল। এসপি ফোনে মিডিয়াকে জানালেন, শুধু জানানো হল "নারায়নগঞ্জ থেকে আমাদের গাড়ি গেছে বেনাপলে" আমরাই আনছি। এরপর তোলপার।
আবার ফোন, এবার সেনা প্রধান নিজেই। নিরুপায় মন্ত্রী ফোন দিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। গনভবনের লাল ফোনটি বেজে উঠলো, রাত ১১টার পর টকশো তামাসা দেখছেন সোফায় বসে। এসএসেফ মহিলা ফোনটি এগিয়ে দিলেন, স্বরাষ্টমন্ত্রী স্যারের ফোন। রিসিভার কানে সুধু শুনলেন অনেক্ষন .. এরপর রাগে অগ্নিষর্মা হাসিনা — "এই সামান্য ব্যাপার নিয়ে আমাকে বিরক্ত করা কেন? আপনে স্বরাষ্টমন্ত্রী একজন ফুলমন্ত্রী। র্যাব পুলিশ সম্পুর্ন আপনার অধিনে, র্যাবের সেনারা পেষনে সম্পুর্ন আপনার অধিনে। ওকে জ্যান্ত ফিরিয়ে আনতে যা যা দরকার করবেন, আমাকে ফোন করা কেন"?
গভীর রাত, নোম্যান্সল্যান্ডএ অদুরে পুলিশ বনাম র্যাব। অনেকগুলো নতুন গাড়ি। সবাই পাথরের মত নিশ্চুপ, কেউ টুঁ শব্দ করছেনা। র্যাব বদ্ধপরিকর, নুর হোসেনের সাথে প্রথম কয়েক ঘন্টা কথা বলতেই হবে, যে কোন মুল্যে।
এদিকে ভারতীয় পুর্বনির্ধারিত অলিখিত চুক্তি। BSF হস্তান্তর করবে প্রথমে BGBর কাছে, কারণ একমাত্র BGB নোম্যান্সল্যান্ড প্রবেশাধকার, অন্য কোন বাহিনী সে অধিকার রাখে না। BGB বেনাপোল কমান্ডার পদে সেনা কর্নেল, আগেই পিলখানা থেকে ফোন পেয়েছেন কি করতে হবে।
রাত বারটা তখনো বাজেনি, বেনাপোল বিজিবি পার্কিয়ে দুটি জিপ, একটিতে লেখা ডিবি পুলিশ, আরেকটি র্যাবের। অনেক্ষন যাবত দাঁড়িয়ে আছে। মিডিয়া বহু দূরে। ভারতীয় এলাকায় একটি সাংবাদিকও নেই। একটা সময় কয়েকজন বিজিবি সদস্য হাতবাধা নুরহোসেন কে ঠেলে উঠিয়ে দিল পুলিশের বদলে র্যাবের গাড়ীতে, অল্প কয়েকজন সাংবাদিক কিছুটা আগাতে সক্ষম হলেও বহু দূরে ওরা, ক্যামেরাজুম করেও হালকা ছায়ার মত ছাড়া কিছু দেখা গেলনা। আরে গাড়িটি ঐদিক কৈ যায়। অন্য একটি দুরবর্তি ট্রাক একজিট দিয়ে গাড়িটি অন্ধকারে তীব্রগতিতে চলে গেল। পেছনে ডিবি পুলিশ লেখা গাড়ীটিও …
আবার ফোন বেজে উঠলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর "স্যার, আমরা শুধু পথের সময়টা কথা বলবো, ঢাকা পৌছেই দিয়ে দিব"। আল্লার কছম স্যার"!
বিঃদ্রঃ – এটি সম্পুর্ন কাল্পনিক কাহিনী, জীবিত বা মৃত কোন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক নেই। মিলেগেলে দৈব কাকতালীয় বলে গন্য হবে।