অবশেষে ধন্যবাদ বাহরাইন সরকারকে

এম নাসির
Published : 9 August 2017, 01:33 AM
Updated : 9 August 2017, 01:33 AM

অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে প্রবাসীদের হাতে ধরা দিয়েছে সোনার হরিণ! এই সোনার হরিণ পাওয়ার জন্যে প্রবাসীরা দীর্ঘদিন যাবত অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় এক লাখ অবৈধ প্রবাসী ছোট্ট রাষ্ট্র বাহরাইনে অতি দুর্ভোগে জীবন-যাপন করছিলেন। এদের মধ্যে অনেকে আট-দশ বছর ধরে অবৈধ ভাবে দুঃসহ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন। না পারছিলেন দেশে যেতে, না পারছিলেন বাহরাইনে শান্তিতে থাকতে।

বাহরাইন সরকার বিশেষ ঘোষণা দিয়ে সমস্ত অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ করার কজ শুরু করেছে গত ২৩ জুলাই (২০১৭) থেকে। এতে করে সব অবৈধ প্রবাসীরা এখন থেকে কোন প্রকার কফিল (মালিক) ছাড়া ফ্লেক্সি ওয়ার্কার ভিসা নিতে পারবেন লেবার অফিস থেকে। এখান থেকে ভিসা নিলে কোন প্রকার মালিকের ঝামেলা থাকবেনা। আর ভিসা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনাও একদম নেই, কেননা এই ভিসা সরাসরি এদেশের লেবার মার্কেট (এলএমআরবি) থেকে দিচ্ছে।

এই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক অবৈধ প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রথমবার ৪৪৯ বাহরাইনি দিনার, বাংলাদেশী হিসেবে ৯০ হাজার টাকা নিচ্ছেন। তারপর প্রতিমাসে ৩০ দিনার করে এলএমআরবি এর অ্যাকাউন্টে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।

.

এখানে প্রবাসীদের খেয়াল রাখতে হবে যে, ভিসা লাগানোর সময় আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ নূন্যতম ছয়মাসের উপরে থাকতে হবে। প্রতি ছয়মাস অন্তর অন্তর ভিসা নবায়ন করাতে হবে, এতে কোন প্রকার খরচ লাগবে না। যাদের পাসপোর্ট নেই, তারা বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে ডিজিটাল পাসপোর্ট বানিয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার খরছ লাগবে মাত্র ১৩ দিনার।

এই ভিসা দিয়ে আপনি সব কাজ করতে পারবেন শুধুমাত্র তিনটি কাজ- এক. রেস্টুরেন্ট, দুই. হোটেল ও তিন. সেলুনের কাজ ছাড়। বাকি সব এলাউড করে দিয়েছে সরকার। আপনি যতদিন ইচ্ছে থাকতে পারেন, কাজ করতে পারেন, কেউ বাধা দিবে না। পুলিশ আপনাকে ধরতে আর গাড়ির হুইসেল বাজাবে না। কোনো আরবি আপনার কাজের মজুরি মারতে পারবে না, কেননা আপনার পাশে থাকবে প্রশাসন। আগের মতো কাজ করিয়ে টাকা না দেয়ার দুঃসাহস দেখাতে পারবেনা।

আমার আশেপাশের অনেকজন ইতিমধ্যে এই ভিসা নিয়েছেন। অনেক খুশি হয়ে অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেছে। সবার একই কথা- ভিসা লাগালাম, এবার বৈধভাবে দেশে ছুটিতে যেতে অসুবিধে নেই। ছুটিতে যাওয়ার সময় অবশ্যই মনে রাখবেন, যত দিন বাড়িতে থাকবেন সেই হিসাবে এলএমআরবি এর পয়সা পেইড করে যাবেন। কেননা বাড়ি থেকে ফেরার পথে এদেশের এয়ারপোর্টে আটকে যাবেন, যদি বাকি থাকে পয়সা।

আমি আশাবাদী যে, এই সুযোগ সব অবৈধ প্রবাসীরা নিবেন। কারণ, অবৈধ প্রবাস জীবন খুব কঠিন। সবসময় বিপদ-আপদ থাকে কাছাকাছি। তাই আসুন সবাই প্রবাস জীবন বৈধতার মাধ্যমে উপভোগ করি। ভালো থাকুন প্রবাসী ভাইয়েরা, ভালো থাকুন প্রবাসী বোনেরা, এই কামনা করি।

এম নাসির (মুহাররক- বাহরাইন থেকে)