পণ্য প্যাটেন্ট দখলে সরকারকে জাগ্রত করতে, কয়েকটি মানব বন্ধন করি

মজিবর রহমান
Published : 11 Jan 2013, 08:44 AM
Updated : 11 Jan 2013, 08:44 AM

ভাষা, সাহিত্য,ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে আমাদের জন্মভূমি পৃথিবীর কোনদেশের চেয়ে নগণ্য নয় বরঞ্চ অগ্রগামী। সেদিক দিয়ে বলতে হয়, ফল,পশুপাখির নাম, বনজঙ্গল, খাবার জগতের অন্যতম নাম আছে। যা প্রতিনিয়ত আমরা গর্বের সংগে ব্যাবহার করি দেশ বিদেশে। সেগুলো হল: জামদানি, নকশীকাঁথা, ফজলিআম, রয়েলবেংগল টাইগার, মত্স্য পণ্যসহ অনেক পণ্যের।

এবার আসি মূলপর্বে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন 23 টি চুক্তির একটি হচ্ছে ট্রেড রিলেটেড এসপেক্ট্স অব ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস (ট্রিপ্স) যা আমাদের সহ দুর্বল দেশগুলোর সুনামধন্য ঐতিহ্যগত যে নাম যুগ যুগ ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জেনে আসছি তা অন্য দেশ বা শক্তিশালী দেশ দখল করে নিচ্ছে। যে আইন তা হল ট্রিপ্স।

পূর্বেই জানিয়ে রাখি (জিআই) জিওগ্রাফিকেল ইনডিকেশন। ট্রেড মার্ক ও জিওগ্রাফিকেল ইনডিকেশন এর মধ্যে তফাত। ট্রেড মার্ক হচ্ছে কোনও ব্যেকটি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠী নিতে পারে। জি আই একটি দেশ করতে পারে যা ঐ দেশের পরিচয় বহন করে বিশ্বব্যাপী। এর ফলে স্থানীয় উদপাদকেরা সুনামের সাথে ভাল মূল্যে বিক্রি করতে পারে।

1992 সালেই ট্রিপসে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও ভারতসহ অনেক দেশ আর এখানেই বিপত্তি। এই চুক্তির পর ভারত তাদের দেশের আইন করে ফেলেছে 1999 সালে, যার ফলে তারা আমাদের বেশ কয়েকটি পণ্যের প্যাটেন্ট নিয়ে ফেলেছে। ভারত যে পণ্যগুলোর পেটেন্ট তা সবার অবগতির জন্য নিম্নে দেওয়া হল:-

জামদানি অন্ধ প্রদেশের উপ্পাদা জামদানি হিসেবে, নকশীকাঁথাকে পশ্চিম বংগের পণ্য হিসেবে, আর প্রিয় আম ফজলিকে পশ্চিম বাংলার মালদার পণ্য হিসেবে পেটেন্ট করেছে। এরকম 66 পণ্যের পেটেন্ট নিয়েছে ভারত। এখানেই শেষ নয় তারা বর্তমানে ইলিশ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার পেটেন্ট নেওয়ার পায়তারা করছে। এর পূর্বেই গ্রামবাংলার চিরচেনা অন্যতম ঐষধী নিমের পেটেন্ট প্রথম নেই যুক্তরাষ্ট্র তারপর ভারত নিয়েছে। বাসমতীর স্বত্ত নিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।

এই ট্রিপ্স এর বিপক্ষে আন্দোলনও চলেছে বিশ্বে অনেক দেশে কিন্তূ বাংলাদেশ কোনও জোর দাবি জানাইনি। এই চুক্তির স্বাক্ষরেরও বিপক্ষে আমার মত কারণ জিওগ্রাফিকেল ইনডিকেশন আইন হওয়া উচিত যে দেশের সুনাম বা ঐতিহ্য শুধুমাত্র সেই দেশই করতে পারবে।

বিগতও তত্ত্বাবধ্বায়ক সরকার ২০০৮ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন ও সংরক্ষণ অধ্যাদেশ একটি খসড়া তৈরি করে। যেখানে ১৪টি কৃষি, ১২টি ফল, ১১টি প্রক্রিয়াজাত খাবার, ৮টি শাকসবজি, ৪টি মৎস্যপণ্যসহ ৪৮টি খাদ্যপণ্য এবং খাদ্য বাদে ১৮টি পণ্য মিলিয়ে মোট ৬৬ পণ্যকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তূ দু:খের বিষয় ২০১১ সালে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করলেও এ খসড়া অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করে নেয়।

পণ্যস্বত্ত্ব হাতছাড়া হওয়ার সমস্যা অসুবিধা: দেশের ঐতিহ্য হাতছাড়া, সাহিত্য, সংগীত, আমাদের দখল থেকে অন্যদেশের যাবে। তখন পণ্যস্ব্ত্ত্ব প্রদান করতে হবে।

আসুন আমরা সবাই সরকারকে বাধ্য করি দিনের পর দিন মানববন্ধবন করে সরকারকে উপলধ্বী করাই। প্রতি শুক্রবার আমরা সরকারকে জানান দিই দেশের পণ্যের স্বত্ত্ব ফিরিয়ে আনতেই হবে যেকোনো মূল্যে। জান দেব তবুও দেশের ঐতিহ্য হাতছাড়া হতে দেব না। দেশের নামে দেশের ঐতিহ্য ফিরিয়ে নামকরণ করতেই হবে।
আমরা পেটেন্ট দখল করার বিরুদ্বে আন্দোলন করি।

তথ্যসুত্র: কারেন্ট এয়াফেয়ার্স ও অন্যান্য।