কারো কেউ নইতো আমি কেউ আমার নয়, তাই নয় কি?

মনির হোসেন মমি
Published : 23 June 2017, 03:38 AM
Updated : 23 June 2017, 03:38 AM

কারো কেউ নইতো আমি
কেউ আমার নয়,,,,,
সত্যিই কি তাই? ছোট্ট এ জীবনটি আসলে কে কার জন্য অথবা আমি বা কার এমন সব প্রশ্নের উত্তর খুজতেঁ গেলে,জীবনের অনেক গুলো সময় অতিবাহিত হবে তবুও এর উত্তর মন মত পাবো বলে মনে হয় না তবুও কেউ না কেউ তো ভাবেন আমিও তাই হয়তো আমার ভাবনাগুলো সবার সাথে মিলবে না অথবা মতের অমিল হতে পারে তাই বলে কেউ দুঃখ নিবেন না।

জন্ম পূর্ব মা বাবার আক্ষেপ; যদি বন্ধান্ত কিংবা আটখুরার বদনাম ঘুচাতো! আবার কারো বা মেঘ না চাইতে জলের ঝর্ণা ধারা বছর বছর প্রবাহিত হয় ধর্মীয় অনুশাসনে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে যে তাদের বাধা।জন্মের স্থান নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই,যে যেখানেই জন্মায় জন্মাক সমস্যা নেই তবে জন্মের একটি কারন অবশ্যই আছে।সেই কারনগুলোই আমাকে খুজেঁ বের করতে একটু চেষ্টা করছি মাত্র।

  • প্রথম আমার জন্ম আমার পরিবারের জন্য।পিতা মাতার আনন্দ ঘন ইচ্ছের বহিঃপ্রকাশতো বটেই বোধয় এটাই জীবন চক্রের প্রথম ধাপ।
  • দ্বিতীয়তঃবিশ্বাসের খুটি যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন স্রষ্টা আল্লাহ ভগবান যিষু বৌদ্ধ শুধু মাত্র তাদের বন্দনা গাইবার জন্য তারা আমাকে পৃথিবীতে পাঠান কোন এক নর নারীর উদরে।
  • তাহলে আমি কে বা কার জন্য কাদবো! এক অদেখা শুধু মাত্র বিশ্বাস করা স্রষ্টার জন্য নাকি কষ্টে লালন পালন জন্ম দাতা দাত্রীর জন্য।আমার জীবনে কার বেশী অবদান স্রষ্টা নাকি পিতা মাতার।অবশ্যই নিঃসন্দেহে বলব পিতা মাতার।স্ব-চোখে দেখা তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষণ কাটে আমার বা সন্তানের ভবিষৎ ভাবনায় অথচ শেষ বয়স পর্যন্ত তারাও আমাকে ধরে রাখতে পারেন না।মৃত্যু!মৃত্যু নামক নিষ্ঠুর খেলাটি খেলেন ঐ আল্লাহ্-ঈশ্বর-ভগবান।তাদের ইচ্ছের কাছে আমার পিতা মাতার ইচ্ছের মরন আর আমি হই প্রিয়দের পর তাহলে মৃত্যুর পর আমি আবার কার কে বা আমার।

যদিও পূর্ণ জনম কেউ বিশ্বাস করেন কেউ বা করেন না। আমি সেদিকে যাব না কিন্তু যাহা দেখি না দুই নয়নে তাহা বিশ্বাস করি কেমনে? আমার মন্দ ভালর যা ফসল তা এখানে ইহ জগতেই পরি সমাপ্তি যেহেতু এটা বাস্তব।তাহলে পরকালকে আমি বিশ্বাস করি না! দোহাই আপনাদের এ ভাবে ভাববেন না বরং একটি প্রশ্নের উত্তর দিন কোন মার্ডারে মামলায় অ-দেখাদের স্বাক্ষী নেয়া হয় না কিন্তু কেনো? যেহেতু ঘটনা সে দেখেননি তাই তার কথা মিথ্যে হতে পারে বলে,তাই না?তাহলে অদেখা জগৎটাকে আপনি কি করে বিশ্বাস করবেন।তবুও আমরা আমি বিশ্বাস করি,দুঃখিত বিশ্বাস করি বললে হয়তো ভুল হবে বলতে হবে বিশ্বাস করায় এ সমাজ এ সমাজের অতি ধার্মিক লোকগুলো যারা এ সমাজ তথা এ দুনিয়ার ধর্মপ্রান মানুষদের তাদের ফতোয়া ধর্মে ধার করায় যেখানে গলদ আর মন গড়া ঈশ্বরের বাণীতে সয়লাব।
এবার একটু স্পর্শকাতর বিষয়ে আসব; আমার সৃষ্টির শুরুতে আমি হিন্দু নাকি মুসলিম নাকি খ্রিষ্টান ধর্ম গোত্রের হয়ে পৃথিবীতে আগমন করেছি। এ সত্যতা কি জন্মপূর্বে আমার জানা বা চাওয়ার মাঝে ছিল? অবশ্যই না, তাই যদি হয়,যদি আমি ভিন্ন ধর্মে জন্মাই তাহলে ইসলাম ধর্মের মতে আমি কেনো বেহেস্তের আশা করতে পারি না, তবে কি জন্ম গোত্রের ভুলটির জন্য! তবে এ ভুলটি কার? বলতে পারেন সবিই স্রষ্টার ইশারা। হ্যা, সবিই স্রষ্টার ইশারা। তার ইশারা ছাড়া যদি গাছের পাতাটিও না নড়ে তবে খুন করলে শুধু খুনি বা মানুষের কেনো পাপ হবে? তবে কথিত আছে আল্লাহ ভগবান ঈশ্বর যে নামেই আমরা ডাকি না কেনো সব মূল মন্ত্রেই স্রষ্টা এক এবং অদ্বিতীয়। আমার মতে সবায় এক অন্তর আত্মাকেই পূজোঁ প্রার্থনা বা এবাদত করেন। অনেক কিতাবে আছে পৃথিবীতে মানুষকে পাঠিয়ে স্রষ্টা পরীক্ষা করছেন সুপথ-কুপথে তার জ্ঞান কতটুকু বা মানুষের ভাল মন্দের কার্যকলাপ বেদাবেদের কর্ম ফল স্বর্গ এবং নরকের যাবার প্রতিযোগীতায়।

জন্ম থেকে নিজ হাতে স্রষ্টাকে মূর্তি বানিয়ে পূজো করছি আবার তা জলেতে ভাসিয়ে কাদো কাদো নয়নে ভেঙ্গে চূরে নদীর জলে ভাসিয়ে দিচ্ছি এটাও পরীক্ষা। জমিনে অযথা কেউ কারো অনিষ্ট করলে ক্ষমতার কার কতটুকু তা দেখা যায় আর স্রষ্টা বা প্রকৃতি দ্বারা কারো কোন অনিষ্ট হলে বলেন সবই উপরওয়ালার ইচ্ছে। কান নিয়েছে চিলে, সবাই চিলের পিছু ছুটলেন এমন অদৃশ্য অদেখা অন্তর জামি বিশ্বাসের খুঁটিতে নড়বরে দাঁড়িয়ে খোদাকে ডেকে ডেকে রাত্রি দিবস কত পবিত্র রজনী দিলাম করে পার অথচ বৃদ্ধ পিতা-মাতার খোঁজ নেই না। যার ফল হয়তো পাবো তবে এ পৃথিবীতে জীবিত থাকতে জানতেও পারব না, তা কি হয়? হয় কিছু কিছু পাপের নতিজা এ পৃথিবীতেই দেখতে পাই তার মধ্যে পিতা মাথার অবহেলাকারী বুঝতে পারেন এ পৃথিবীতেই এ শাস্তি কতটা ভয়ংকর, কোন না কোন ভাবে মা-বাবাকে কষ্ট দেয়ার কথা মনে হয়।এমন এক সন্দেহময় মরিচিকার দ্বারে কি ভরসা করা যায়?তার চেয়ে ভালো যা বর্তমান তাই হাত পেতে লই অতীত আর ভবিষৎকে মারি তুড়ি।

এবার আসি জন্মের পর আমার স্বরূপ।পুরো জীবনটাই স্বার্থবাদী। স্বার্থ ছাড়া কেউ এক পাও এগোবে না আমিও তাই। স্কুল কলেজ ভার্সিটিতে লেখা-পড়া তাও ভাল কোন ইকামের আশায় আবার গার্ডিয়ানদের অর্থ বিনিয়োগ তাও ছেলের রোজগার কামাই খাওয়ার আশায়। যদি স্রষ্টা আপনাকে আমাকে সৃষ্টি করে থাকেন তবে স্রষ্টার স্বার্থ ছিলো যে তার অনুগত্য স্বীকার করে নেয়া।শুধু স্বার্থ নেই তোমার আমার যে জীবনে ক্ষয় আছে, এতো কষ্ট করে স্বাধের পৃথিবী সাজালাম অথচ এক দিন স্রষ্টার বিধানে বিশ্বাস করি বলে আমাদের এ জগতের সব ধন সম্পদ, মায়ার সংসারের সব আদরের সন্তানদের রেখে নিজেকে চির তরের জন্য চলে যেতে হবে ভিন্ন কোন জগতে।

তবে একটি স্থানে মানব জীবন স্বার্থক তা কেবলি মানব সেবায়।এক মাত্র মানব সেবাই আপনাকে আমাকে জীবনের পরিপূর্ণতা দিতে পারবে অথবা জীবন তা থেকে কিছু পেয়ে থাকেন।জীবন তাদের জন্য তারা জীবনের জন্য।একটু ভেঙ্গে বলছি পৃথিবীতে হাজারো লক্ষ কোটি অর্থ সম্পদ কামাইয়ে আপনার রিটার্ন বলে কিছুই নেই বরং এ ধন সম্পদ অর্জন করতে আপনি আমি যে পাপ পূর্ণ করেছি তার নতিজা দেখেন পৃথিবীর জীবিত মানুষ।যেই পাহাড় পরিমান সম্পদ আপনি রেখে পৃথিবীকে বিদায় জানালেন তা নিয়ে হয়তো কোথাও না কোথাও তার উত্তর সূরীদের মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগে যায় বা যাবে তাহলে এখানেও আপনি পর কেউ আপনার আপণ নয়।অথচ এ সম্পদের কিছুটা যদি মানব সেবায় স্কুল কলেজ হাসপাতাল অথবা দুস্থ্য পরিবারদের সহায়তা করতেন তা থেকে ফিডবেক পেতেন নিশ্চিত প্রথমতঃ আজীবন আপনার নাম পৃথিবীর  বুকে স্বরণীয় করে যাওয়া।তাই মৃত্যু যেহেতু নিশ্চিৎ মরতেই যখন হবে তখন সু-মরন চাই আর সেই লক্ষ্যে জীবন অতিবাহিত করলে বেলা শেষে আপনার একাকিত্বের মনোভাবটাও কেটে যাবে।কেউ না কেউ আপনার কথা স্বরণ করবেন নিশ্চয়।

এ যাবত পৃথিবীতে অকালে যত মানুষ অত্যাচারিত কিংবা মৃত্যু বরণ করেছেন তার সব চেয়ে বেশী কেবল ধর্মের কারনে হয়েছে।পৃথিবীতে যদি ধর্ম না থাকত তবে কেমন হতো আমাদের জীবন চলা চলের বিধান,এটাও একটু ভাববার বিষয়।ধর্ম যদি নাই থাকত আমাদের জাতের পরিচয় হতো কেবল একটি তা হলো মানব জাত।আর জীবন চলার বিধান হতো একটিই যেখানে ভাল এবং মন্দ চিন্তার বসবাস।রক্ত ক্ষয়ী কমতো কি না জানি না তবে ধর্মের অজুহাতে মানুষ মানুষের মাঝে জেগে ভাই ভাইয়ের উপর ওঠা রক্তাক্ত থাবা হয়তো হত না।অদেখা অদৃশ্য সর্বোচ্চ ক্ষমাধর বলে কিছুই আর ভাবা হতো না হতো না পূজা এবাদত কিংবা প্রার্থনাকে প্রতিষ্ঠিত করতে রক্তক্ষয়ী এ চলমান সংঘর্ষ।পৃথিবীতে মানব জাতির জন্য আসা বিভিন্ন ক্ষমতাধর স্রষ্টার দূতেরা যদি ধর্ম প্রচার না করে মানুষ শিক্ষা দিত মানবতা কি,আমাদের জীবন কি,একবার জীবন চলে গেলে সে জীবন আর ফিরে পাবো না ইত্যাদিকে মানুষের মনে প্রতিষ্ঠিত করে যেতেন তবে আজকে আই এসও অথবা রক্তক্ষরণ কোন ধর্মের কারনেই হতো না।
লেখার বিষয় বস্তুর খাতিরে আবার এটাও বলতে হয় "জীবনে ধর্ম আছে বলেই মানুষ পাপ পূর্ণ্যের পার্থক্য বুঝেন,জীবনকে ধর্মের আদর্শে রঙ্গীন করেন।সংঘর্ষের  জন্য এখানে ধর্ম কোন বিষয় নয় সব ধর্মের নীতিই হলো বুদ্ধি জ্ঞানে পূর্ণ্যের দিকে জীবনকে চালিত করা,প্রায় মানুষের মনে এ বিষয়ে জ্ঞানও আছে প্রচুর কিন্তু আফসোস তা বাস্তবতায় দেখি না।সামান্য কারনে ধর্মকে টেনে এনে চালায় রক্তের হোলি খেলা আর অতি ধর্মান্ধতায় হয়ে যায় কেউ কেউ জঙ্গি বা সিরিয়াল কিলার।কিন্তু দুনিয়ায় এতো সব জঞ্ছাট ঝামেলা পাপ পূর্ণ মায়া মমতা ইত্যাদির পিছনে ছুটতে ছুটতে শেষ বেলায় আপনি কি পেলেন।পেলেও কি আত্মার আত্মীয়দের কি বুঝাতে পারলেন আপনি নিশ্চিত সূখী!বেহস্ত বা নরকে আপনার অনন্ত জীবনের যাত্রা শুরু।এই প্রশ্ন আপনাদের কাছে।তাহলে!
কেউ কারো নয়তো আমি কেউ আমার নয়, নয় কি?

ছবি:অনলাইন সংগৃহীত