প্রাথমিক দৃষ্টিকোন থেকে আমাদের মনে হচ্ছে কিছু ধর্মীয় লেবাসধারী শয়তান দেশ ধ্বংসের নেশায় মেতে উঠেছে।আসলে আমাদের বুঝতে হবে কি কারণে দেশে শয়তানের উদ্ভব হয়।প্রথমত কোন দেশে যখন একনায়তন্ত্রের আবির্ভাব হয় এবং ক্ষমতাশীনরা প্রচন্ড স্বার্থলীপসু হয়ে ওঠে,এই সুযোগে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নানা পন্থায় তাদের সুবিধা আদায়ের জন্য ঐ দেশে বিভিন্ন অপকর্মের বীজ বপন করতে থাকে এবং নৃসংশ ঘটনাগুলো ঘটানোর পর তারাই সহমর্মীতা দেখিয়ে ভেতরে ডোকার চেষ্টা করে।যারা দূর থেকে বাংলাদেশে এই ধরণের অপকর্মের নেপথ্য নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা অনেক ভাবে লাভবান হবে যেমন:দেশের প্রধান রপ্তানী ব্যবসাগুলোর নিয়ন্ত্রণ তাদের দিকে যাবে,যেমন গার্মেন্ট ব্যবসা।আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ভেনু পাকিস্থানের মত বাংলাদেশ থেকে তুলে নেওয়া হবে, ফলে বাংলাদেশকে ক্রীড়া ক্ষেত্রের আয় থেকে বঞ্চিত করে নিজের ঘরের আয় আরো বৃদ্ধি করা হবে। এর প্রভাবে নতুন খেলোয়ার সৃষ্টি বন্ধ হয়ে সন্ত্রাসী সৃষ্টি আরো তরান্বিত হবে। সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের কলঙ্কের কারণে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীদের সন্দেহের দৃষ্টিতে পড়ে চাকুরী হারাতে হবে। বিদেশী বিনিয়োগ ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকবে,দেশীয় বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তার চিন্তা করে বিদেশে বিনিয়োগ করবে, সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প আর প্রসার লাভ করবে না , কর্মসংস্থান হ্রাস পাওয়ার ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে,ফলে যুবসমাজ হতাশ হয়ে জীবন ও জীবীকার তাগিদে অপকর্মের দিকে ধাবিত হবে।সৃষ্টি হবে বিভিন্ন নামে উপনামে সশস্ত্র সংগঠনের।এই সব সন্ত্রাসী সংগঠনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে বাধ্য হয়েই সুশীল সমাজ ও বিবেকবান মানুষদের অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বাচার চেষ্টা করতে হবে, ফলে সৃষ্টি হবে আরো প্রতিরোধ সশস্ত্র সংগঠের ।চরম বিশৃংখলার দিকে চলে যাবে দেশ।কোন এক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে রাষ্ট্র, সৃষ্টি হবে গৃহ যুদ্ধের ক্ষেত্র ।এই অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুত্থান ও স্থিতিশীলতা আনতে সরকারকে দেশের সামরিক বিভাগের উপর নির্ভরশীল হতে হবে।তখন বিদেশ থেকে ভোগ্য পণ্য,প্রযুক্তিগত পণ্য আমদামীর পরিবর্তে অস্ত্র আমদানির দিকে গুরত্ব দিতে হবে। বঙ্গভূমিতে তৈরী হবে অস্ত্রের বাজার। আর সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের এই বাজার সৃষ্টি করার জন্য বিনিয়োগকৃত অর্থ অস্ত্র রপ্তানি এবং ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুদে আসলে তুলে নেবে। দেশের এমন অসহায় অবস্থায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের আজ্ঞাবহ কোমর ভাঙ্গা দল ও ব্যক্তিবর্গকে সরকার বানিয়ে দেশের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেবে।এমন সরকারের রূপ হবে বাংলার বেঈমান নবাব মীরজাফরের মত।
উল্লেখিত যে ভয়াবহ সূত্রের আবর্তে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে,সেই আবর্তে থেকে ফিরে আসতে হলে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্যের ঘোষনা দিয়ে এখনি এক টেবিলে বসে অপশক্তিকে রুখতে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।বর্তমান ক্ষমতাশীন স্বৈরাচারী সরকার আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী চক্রের পাতা লোভের যে ফাঁদে পা দিয়েছে সেখান থেকে এখনি সাবধান হয়ে কৌশলে বেরিয়ে আসতে হবে।দেশে গণতন্ত্রের পরিবেশ যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে আনতে হবে।অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে।অচল জাতীয় সংসদকে সরকারী ও বিরোধী দলের আলোচনা সমালোচনা মাধ্যমে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে।জাতির বিভেদ সৃষ্টিকারী 'স্বাধীনতার পক্ষ এবং বিপক্ষ'এই শব্দদ্বয় আইন করে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং « আমরা সবাই বাংলাদেশী, সবাই বাংলাদেশের পক্ষে »এই জাতীয় শ্লোগানে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা ফিরে এলে সেই সরকারের ভালো কাজে সাধারণ জনগনকে সমর্থন সহযোগীতা ও উৎসাহিত করতে হবে।বাংলার ভূমিতে অবস্থান করে , বাংলার আলো বাতাসে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহন করে যারা ভারত ও পাকিস্থানের গুণকীর্তন ও আনুগত্যে বিভোর থেকে দেশের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টিতে লিপ্ত থাকেন, তাদের চিন্তার পরিবর্তন এনে স্বভূমির প্রতি কৃতজ্ঞতার দিকে মনোনিবেশ করে খাঁটি বাংলাদেশী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
যদি এখনি উল্লেখিত কর্ম পরিকল্পনা ও বিষয়গুলোর দিকে মনোনিবেশ এবং বাস্তবায়নের উদ্যেগ না নেই, তাহলে ধ্বংসের যে সূত্রের আবর্তে বাংলাদেশ পা দিয়েছে সেই যাত্রার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে এবং চরম ভয়াবহতার স্বীকার হতে হবে সমগ্র জাতীকে।