বৈশাখের আমন্ত্রণে কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনা ঘুরে এসে (পর্ব-৩)

মু: গোলাম মোর্শেদ উজ্জ্বল
Published : 7 Oct 2016, 01:40 AM
Updated : 7 Oct 2016, 01:40 AM

মিরাদোর কলমে বিরতির পর মল দোলা ফুজতা(Moll de la Fusta)দিয়ে সমুদ্র সৈকতের দিকে যাওয়ার সময় সুসজ্জিত সারি সারি পাম গাছ দেখে মনে হলো আমরা যেন কোন এক মরূদ্যানের মধ্য দিয়ে হেঁটে চলছি।পাশেই বন্দরে নোঙ্গর করা ছোট বড় জাহাজগুলো ভূমধ্যসাগরের বুকে ভেসে বেড়াতে অপেক্ষমান।বন্দর পার দিয়ে আফ্রিকানদের বার্সেলোনা ক্লাবের সেরা তারকা মেসি ও নেইমারদের জার্সি,সানগ্লাসের ভ্রাম্যমান দোকানগুলোর কোলাহলপূর্ণ পরিবেশের ভেতর দিয়ে ক্যাপ দো বার্সেলোনায় আসার পর একটি রেস্তোরায় উজ্জ্বল ভাইয়ের আতিথেয়তায় আমাদের মধ্যাহ্ন ভোজের পর্ব শেষ হলো।খারার মেন্যুতে ছিলো আমার পছন্দের তার্কিশ কাবাব , যা প্যারিসে অনেক খেয়েছি কিন্তু বার্সেলোনায় এসে পেলাম একই খাবারের অতুলনীয় ব্যতিক্রম স্বাদ এবং পরিবেশনের মধ্যেও রয়েছে ভিন্নতার ছোঁয়া।

আমরা এখান থেকে একটি আবাসিক এলাকার মধ্যদিয়ে হেঁটে সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার সময় চোখে মিললো প্রতিটি বিল্ডিংয়ের বেলকুনিগুলোতে বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাব ও কাতালোনিয়া অঙ্গ রাজ্যের বৈজয়ন্তী টাঙ্গানো। এ থেকেই মনে হলো এই শহরের মানুষের ফুটবল নিয়ে রয়েছে অফুরন্ত উচ্ছাস উন্মাদনা এবং ভালোবাসা,আর কাতালানদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন কাতালোনিয়া রাষ্ট্র নিয়ে যে স্বপ্নের লালন চলছে এই পতাকাগুলো জানিয়ে দিলো তারই প্রতি অসীম মমত্বের বহিঃপ্রকাশ।

লা বার্সেলোনতা সমুদ্র সৈকতটি পর্যটকদের সামগ্রীক সুবিধার কথা চিন্তা করে স্থানীয় প্রশাসন সু-পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে রেখেছে। সাগর পারের বেলাভূমিতে পৃথিবীর নানা দেশ থেকে আসা শত শত নারী পুরুষ এবং শিশু কিশোরদের নানাবিধ কর্মকান্ডে যেন সৈকতটি এক পর্যটক মেলায় পরিণত হয়েছে।কেও স্বল্প বসনে প্রখর রোদ্রের মধ্যে শুয়ে আছে,কেউ ব্যায়াময়ের সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো স্থানে ব্যায়াম করছে,কেউ সাগর জলে শরীর ভেজাচ্ছে, কেউবা ছুটোছুটিতে মগ্ন। দূরে বিশাল জলরাশির মধ্যদিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা আকৃতির ছোট বড় পর্যটন জাহাজ।পোষাকের প্রস্তুতি না থাকায় আমাদের মধ্যে কেউই সৈকতের বেলা ভূমিতে হেঁটে বেড়ানো বা ভূমধ্যসাগরের জল ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে পোষন করলোনা। সাগর পারের বিশ্রাম চেয়ারে গল্প করেই আমাদের অধিকাংশ সময় কাটলো।

সৈকতের পার দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে নানা স্থাপনা ,সড়ক ,সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য দাড়িয়ে আছে সারি সারি পাম গাছ।


গাছগুলোর পাশ তৈরি করা হয়েছে আরো একটি ছোট্ট পরিসরের রাস্তা তা শুধুই সাইকেল আরোহীদের জন্য ,সেই রাস্তা দিয়ে সাগরের উন্মুক্ত হাওয়া গায়ে লাগিয়ে ক্রমাগত ছুটে চলছে নানা আকৃতির দ্বিচক্রযান চালিত শত শত আরোহী। স্পেনের বার্সেলোনা একটি সাইকেল বান্ধব শহর।শুধু এই সমুদ্র পারেই নয় ,এই শহরের আনাচে কানাচে এমন সাইকেল চালানোর দৃশ্য সব সময় দেখা মেলে।তবে অধিকাংশ সাইকেলগুলোই ব্যক্তিগত নয়, এগুলো বিভিন্ন সাইকেল ভাড়া প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভাড়া দেওয়া হয়।এই সাইকেলগুলো চালাতে হলে মাসিক বা বাৎসরিক চাঁদার বিনিময়ে সদস্য হতে হয়।সদস্য হলে তারা একটি ইলেকট্রনিক্স কার্ড দেয় ।এই কার্ড দিয়ে ইচ্ছে মত যে কোনো গ্যারেজের ছোট্ট খুটির সাথে লক করা সাইকেলগুলো থেকে কার্ড পাঞ্চ করে একটি সাইকেল তুলে ইচ্ছে মত চালোনো যায়,আবার অন্য যে কোন গ্যারেজে রেখে দেওয়া যায়।

আমাদের ক্ষুদে ভ্রমণসঙ্গী আঞ্জু তিনমাস আগে এই সাগর পারের ডেল মার হসপিটালে জন্মগ্রহন করেছে।হসপিটাল সম্পর্কে আলোচনা করতে উজ্জ্বল ভাই জানালো এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থার এক ব্যতিক্রমধর্মী কৌশলের কথা।এখানকার চিকিৎসকেরা শুধু চিকিৎসা বিদ্যা দিয়ে মুমূর্ষু রোগীর শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গের চিকিৎসাই করেনা ,স্বপ্রণদিত হয়ে রোগাক্রান্ত মানুসিক ভাবে ভেঙ্গেপরা মানুষদের মনের উৎফুল্লতার দায়িত্বও নিয়ে থাকেন।তাই হসপিটালের চিকিৎসক ও সেবিকারা যখন রোগী পরিদর্শনে বের হয় তখন তাদের পেশাগত পোষাকের পাশাপাশি মাঝে মাঝে রোগীর সামনে বৈচিত্রময় কমেডিয়ান পোষাক পড়ে হাজির হন এবং রোগীকে চমকে দিয়ে দুঃচিন্তাগ্রন্থ মনকে প্রফুল্লতায় ভরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।বিষয়টি জেনে আশ্চর্য হলাম এবং ভালো লাগলো রোগীর প্রতি চিকিৎসকদের এমন মমত্ব ও ভালোবাসা প্রকাশের ব্যতিক্রম উদ্ভাবনে।
আমাদের সবার শরীর বিশ্রামের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে, তাই আজ আর অন্য কোথাও ঘোরার ইচ্ছে হলোনা।সৈকত থেকে আমরা বাসে চলে এলাম প্লাসা ম্যাকবা অর্থাৎ উজ্জ্বল ভাইয়ের বাসার এলাকাতে।এখানে পরিচয় হলো বৈশাখী মেলা আয়োজকদের অন্যতম সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব শফিক খানের সাথে।তিনিও এক সময় প্যারিসে থাকতেন কিন্তু পরবর্তীতে এই সাগর পারের শহরে থিতু হয়েছেন।এখানে একটি বাঙ্গালী টেইলার্সের দোকানে কয়েকজন স্থানীয় প্রবাসী বাঙ্গালীদের সাথে পরিচয় হলো।কেউ একজন আমাদের জন্য মুঠোফোনে চায়ের অর্ডার করলেন ,কিছুক্ষণের মধ্যে একজন বাঙ্গালী প্রবাসী ভাই চায়ের কেটলি নিয়ে হাজির হলেন ,চায়ের স্বাদ পুরোপুরি বাংলার গ্রাম্য হাঁট বাজারের ঝুপড়ী চায়ের দোকানের খাঁটি দুধের চায়ের মত।কিন্তু এই চা বিক্রেতা ভাইয়ের এখানে কোন স্থায়ী চায়ের দোকান নেই।প্লাসা মাগবার আসে পাশে মূলত আমাদের দক্ষিন এশিয়া ও অন্যদের দেশের প্রবাসীদের বসবাস।পরিবেশটাও গড়ে উঠেছে আমাদের অঞ্চলের দেশগুলোর মত। রয়েছে অসংখ্য বাংলাদেশী ,পাকিস্থানী এবং ইন্ডিয়ানদের দোকানপাট।এইসব দোকানগুলোতে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে প্রবাসীদের আড্ডা ,সেই আড্ডায় খোশ গল্পগুজবের পাশাপাশী চলে চা চক্র।এই আড্ডা স্থলগুলো থেকে ঐ চা বিক্রেতা ভাইকে ফোন করা মাত্র তিনি চায়ের কেটলি হাতে হাজির হয়ে চা পরিবেশনের মাধ্যমে আড্ডাকে আরো প্রাণবন্ত করতে ভূমিকা রেখে থাকেন।আর এটাই তার সুদূর প্রবাসের জীবন ও জীবীকা।


এখান থেকে আমরা চলে গেলাম বৈশাখী মেলার প্রস্তুতি ও মহড়া স্থলে।দেখা হলো আমাদের প্যারিসের প্রিয়,পরিচিত ও সদা হাস্যজ্জল মুখ চিত্রশিল্পী মুহিদ জ্যেতির সাথে।বৈশাখী আয়োজনের নানা প্রকার শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।কাজের ফাকে অনেক রমনীর অনুরোধে তাদের পোর্টরেট ছবি এঁকে দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেকের বেশ প্রিয়ও হয়ে উঠেছেন তিনি।এই রিহার্সাল স্থলের পরিবেশটা অনেকটা ঈদের চাঁন রাতের মত আনন্দঘন অবস্থা বিরাজ করছে।ইতোমধ্যে আমন্ত্রিত প্রধান শিল্পীদের মধ্যে সঙ্গীতশিল্পী তপন চৌধুরী বার্সেলোনায় অবস্থান করছে।আর আমাদের সাথেই রয়েছেন পুঁথি শিল্পী কাব্য কামরুল।স্থানীয় সঙ্গীত ও নৃত্য শিল্পীরা যুক্তরাজ্য থেকে আগত যন্ত্র শিল্পীদের বাদ্যযন্ত্রের সুরের তালে মহড়ায় ব্যস্ত।দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতির প্রদর্শন হবে আগামীকালের প্লাসা ম্যাকবার বৈশাখী মঞ্চে,তাই স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের সহযোগীতায় ছুটোছুটির মধ্যে আছে।আয়োজক নেতৃবিন্দু অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্যের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সদা কাজ করে চলেছেন।রাত এগারোটার দিকে প্যারিস থেকে বিমানে উড়ে এলেন পবন দাস বাউল দম্পতি।রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহড়া স্থল বৈশাখী আয়োজনের সমস্ত প্রস্তুতির যবনিকা টানতে লাগলো।এবার অথিতিদের রাত্রি যাপন ও রাতের খাবারের বন্দবস্থ করতে আয়োজকরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠলেন।

আমাকে এবং পবন দাস বাউল ও তার স্ত্রী মিমলু সেনকে হোটেলে তুলে দেত্তয়ার জন্য আয়োজক নেতৃবিন্দের একজনের সঙ্গে করে মহড়া স্থল থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।ট্রাক্সি করে হোটেলে যাওয়ার সময় পবন দাস বাউলের সঙ্গে তার গান,দর্শন এবং বাংলাদেশে তার গানের জনপ্রিয়তা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বেশ আলাপ জমে উঠলো।২০০৬ সাল, তখন ঢাকায় ধানমন্ডিতে একটি ফ্লাটে আমরা সাত আট জন ব্যাচেলর মেছ করে থাকি।মাঝে মাঝেই আমাদের মেছে রাতে বিশেষ আড্ডা জমে উঠতো,বাইরে থেকে দু একজন বন্ধু যোগ দিতো সেই আড্ডায়।আমাদের সেই আড্ডায় মাঝে মাঝেই পবন দাস বাউলের ঐ সময়ের জনপ্রিয় একটি গান « বসুন্ধরার বুকে বরষারই ধারা »বেশ গাওয়া হতো।ভালোই লাগলো সেই গানের স্রষ্টার সাথে ক্ষণিকের সান্নিধ্য। একই প্যারিস শহরে বসবাস করলেও পূর্বে তার সাথে আমার কখনো সাক্ষাৎতের সুযোগ হয়নি।পবন দাস বাউল ও মিমলু সেন দম্পতিকে হোটেলে উঠিয়ে দিয়ে এবার আমাকে রাতের খাবারের জন্য নিয়ে যাওয়া হলো ভিলাদোমাত(viladomat) রোড়ে অবস্থিত পিজারিয়া বার্গার রেস্তোরায়। রেস্তোরায় আসার সময় বার্সেলোনা শহরের রাতের বেশ কিছু চিত্র ধরা পড়লো। মধ্যরাতের পর সাধারণত যে কোন শহর নিস্তব্ধ হয়ে যায়, বিশেষ করে প্যারিস শহর এবং এখানে সন্ধ্যে নামার সঙ্গে সঙ্গে নিস্তব্ধ নিরবতা নেমে আসে, অন্য কারো অসুবিধা অনুভব হবে ভেবে কেউ উঁচু স্বরে কথা পর্যন্ত বলেনা,রাত্রে উচ্চ শব্দের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় আইনও রয়েছে। কিন্তু বার্সেলোনায় দেখা মিললো মধ্য রাত থেকে এই শহরের নতুন রূপে জেগে ওঠার চিত্র।রাস্তার পাশের ওলিগোলীগুলোতে তরুন তরুনীদের আড্ডা ও হইহুল্লোর,রেস্তোরাগুলো জেগে আছে ভোজন রসিকদের রসনার তৃপ্তি মেটাতে।ঐদিন ঐ সময়ে চলছিলো এ্যাটলেতিকো মাদ্রিদ ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্য একটি ফুটবল ম্যাচ,ম্যাচের উত্তেজনাপূর্ণ মূহুর্তগুলোর আনন্দ উচ্ছায় বিনিময় চলছে এক ফ্লাটের জালানা খুলে অন্য ফ্লাটের সমর্থকদের সাথে।এমন ফুটবল উন্মাদনা দেখে মনে হলো এই শহরকে ফুটবলের তীর্থ ভূমি বললে ভুল হবেনা।এছাড়া বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল ক্লাব 'বার্সেলোনা'তো এই শহরেরই অহংকারের ধন।

রেস্তোরায় কাব্য কামরুল দম্পতি আমার জন্য অপেক্ষা করে ইতোমধ্যে খাওয়া শুরু করেদিয়েছেন।তাদেরকে অতি মমতায় আতিথেয়তা করছেন পিজারিয়া বার্গার রেস্তোরার মালিক এম ডি আওয়াল ইসলাম এবং তার সহধর্মীনি জাহানারা বেগম।আমিও যোগ দিলাম তাদের সাথে। খাবারের মেন্যুতে রয়েছে সালচা(আলুর ফ্রাই),পিজ্জা ,মূল খাবার আমাদের দেশের খিচুরি সদৃশ পায়লা(Paella)।খিচুরি ভেবেই থালা ভরে পায়লা তুলে নিলাম কিন্তু একটু ভালো ভাবে দেখে খেতে গিয়ে হোঁচট খেলাম কারণ খাবারটির মধ্যে অন্যান্য উপকণেরর মধ্যে রয়েছে ঝিনুক, অক্টোপাস এবং চিংড়ি মাছ।ফরাসিদের অতি প্রিয় খাবার ঝিনুক হলেও দীর্ঘদিন এই ভূখন্ডে বাস করেও রান্না ঝিনুকের স্বাদের সঙ্গে পরিচিত হইনি আমাদের দেশে এই খাবারটি না খাওয়ার অভ্যাসগত কারণে।চিংড়ি আমার অতি প্রিয় খাবার কিন্তু ঝিনুক ও অক্টোপাসের কারণে কিছুক্ষনের জন্য দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েগেলাম।একবার ঢাকার গুলশানে একটি রেস্তোরায় অফিসিয়াল পার্টিতে কৌতুহলবসত কাঁকড়া খেতে গিয়ে পরে তা খেতে পারিনি যা আমাদের দেশের অনেক মানুষই খায়।সিদ্ধান্ত নিলাম এখন থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে।এই ভেবে খাওয়া শুরু করলাম।ঝিনুক ও অক্টোপাসের স্বাদ চিংড়ি মাছ থেকে খুব একটা ব্যতিক্রম মনে হলো না।বেশ তৃপ্তিসহকারে নিলাম বার্সেলোনার ঐতিহ্যবাহী খাবার পায়লার স্বাদ।
খাবার পর্ব শেষ করে হোটেলে পৌছুতে প্রায় রাত দুইটা বেজে গেলো।হোটেলে পৌঁছানোর সাথে সাথে অবসন্ন শরীর আর জেগে থাকার সময় দিলোনা , মুহূর্তের মধ্যে চলে গেলাম গভীর ঘুমে। আমি যে হোটেলটিতে ছিলান সেটি বাংলাদেশ সমিতি বার্সেলোনার সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমারের মালিকানাধীন এবং তার সৌজন্যে।

যে মানুষটি খাবারের ব্যবস্থা ও রাত্রি যাপনের স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাকে সাথে নিয়ে টিপ টিপ বৃষ্টির মধ্য সারাদিনের কর্মক্লান্ত দেহে মধ্যরাতের বার্সেলোনা শহরে ঘুরে বেড়িয়েছেন তার নাম 'সহজ'। প্রথমে যখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভাই আপনার নাম কি ?উত্তরে, আমার নাম সহজ বলে থেমে গেলেন।আমি আবার তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার সহজ সেই নামটি কি ?উনি বললেন আমার নামই সহজ।তখন বুজলাম কোন মানুষের নাম সহজও হতে পারে।তবে মাদারীপুরের সহজ ভাইয়ের সঙ্গে যতটুকু মেশার সুযোগ হয়েছে তাতে তাকে একটুও জটিল মনে হয়নি,তার নামের মতই স্বভাবেও খুবই সহজ , বন্ধুসুলভ এবং অতিথিপরায়ণ মানুষ মনে হয়েছে।…….চলমান……….
বৈশাখের আমন্ত্রণে কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনা ঘুরে এসে (পর্ব-১) পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
বৈশাখের আমন্ত্রণে কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনা ঘুরে এসে (পর্ব-২)পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
https://www.facebook.com/muhammad.g.morshed